গারোদের নিজস্ব তাঁত শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে।
গারোদের নিজস্ব তাঁত শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে।
জাডিল মৃ(Jadil Mri)
তরুণ লেখক এবং ব্লগার
সূতা |
"গারোদের নিজস্ব তাঁত শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে, তা রক্ষা করতে হবে",এমন কথা খুব সহজেই বলে ফেললাম, তাই না! তবে বাস্তবে তা কিন্তুু অনেক কঠিন।তাঁতের এত কষ্টের কাজ কে করতে চাইবে?এখন তো সবাই একটু আরাম আয়েশ খোঁজে,কষ্টের ভাগিদার কে হতে চাইবে? যতটুকু কষ্ট তার চাইতে মজুরি কম।এত কষ্ট করেও যদি সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়, তাহলে তাঁতের চাইতে অন্য পেশায় তো ভালো, তাই না?তাঁত শিল্পে আমরা কিন্তুু পিছিয়ে ছিলাম না সমৃদ্ধ দিক দিয়ে অনেকটা এগিয়ে ছিলাম বা আছি।ইতিহাসে যার সাক্ষ্য প্রমাণ আছে।তবে এইটা সত্যি তাঁত শিল্প ধ্বংসের পথে।
আমার জানা মতে, তিনটি জায়গায় এখনো তাঁতের কাজ চলে।আমি জানি না, এই তাঁত শিল্প আর কতদিন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে কিংবা বর্তমান প্রতিযোগিতা বাজারে সময়ের সাথে টিকে থাকতে পারবে কিনা।ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও তাঁত শিল্পের যোগান খুবই সীমিত।নানা সীমাবদ্ধতা থেকেও উনারা যথা সম্ভব কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।উনাদের কষ্ট আমাদের নিজস্বতা বাঁচিয়ে রেখেছে তবে আমরা যথা সম্ভব প্রতিদান দিতে পারছি কিনা বা তাদের কষ্টের মূল্য দিতে পারছি কিনা, আমি জানি না।
এবং যাঁরা কাজ করে তাঁরা সবাই মহিলা। এত বছর কাজ করেও সংসারে উন্নতি হয় না, এমন সব অনেক প্রশ্নই থেকে যায়।
যাইহোক,গারোদের তাঁত শিল্প নিয়ে বিস্তর গবেষণা করা দরকার।কিন্তুু কে নিবে এই গুরু দায়িত্ব?
যে তিনটি জায়গার কথা বলেছিলাম তা একটি একটি করে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।আপনাদের কে ভাসা ভাসা ধারণা দিচ্ছি মাত্র,যদি চান বিস্তারিত লিখতে পারি।
পীরগাছা(মধুপুর)
আমরা সবাই কম বেশি করে হলেও পীরগাছা তাঁত শিল্প সম্পর্কে জানি।ছোটবেলায় যখন তাঁত দোকানে যেতাম সবসময় প্রচুর মানুষের আনাগোনা থাকতো।চাহিদার তুলনায় যোগান এখনো সীমিত।এত বছর পরেও কেন যে তাঁত শিল্প বিস্তার লাভ করতে পারেনি বা যা কার্যক্রম ছিল তাও সীমিত হয়েছে,আমি জানি না।তবে চলছে, ভালোই চলছে।
ব্যক্তিগতভাবে ভালোই লাগে, যখন দেখি নিজেদের দ্বারা পরিচালিত নিজেদের মানুষ অবিরত কাজ করে চলছে এবং নিজেদের নিজস্বতা বজায় রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। যারা কাজ করে চলছে তাঁরা তো অবশ্যই প্রসংশার দাবিদার।
আপনার যারা জানেন না তাদের কে জানানোর জন্যই বলছি,পীরগাছা গ্রামে এখনো গারোদের দ্বারা পরিচালিত বিভিন্ন ধরণের কাপড়ে কাজ চলে।আমরা নিজেরা নিজেদের পণ্য যদি প্রমোট করি এবং নিজেদের পণ্য নিজেরা'ই কিনি হয়তো এই তাঁত শিল্প টিকে থাকবে অনেক বছর।নিজেদের পণ্য কিনলে, নিজেদের নিজস্বতা বজায় থাকবে বহু বছর।
আসকিপাড়া(হালুয়াঘাট)
অনেক দিন আগেই শুনেছিলাম,আসকিপাড়া তাঁতের কাপড় তৈরি হয় দকমান্দা পর্যন্ত বানানো হয়।সেদিন মাত্র যখন ঘুরে আসলাম তখন একটু হতাশ হই।দকমান্দা বানানো হয় না, বানানো হয় অন্য ডিজাইনগুলো।সেই হিসাবে দকমান্দা হিসাবে করলে আমরা পুরোপুরি নির্ভর ভারতের উপর,দকমান্দা হিসাবে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ না।শুনেছি,আগে যেমন ধুমধাম কাজ চলতো, কাজের পরিধি বড় ছিল আজ তা খুবই সীমিত।তাঁতের জায়গায় গিয়ে দেখলাম তিন জন মহিলা কাজ করছে।সেই তিন জন মহিলাকে নিয়ে পরবর্তীতে ফিচার লিখবো।
এইটাই জানানো যে এখনো আসকিপাড়ায় গারোদের তাঁতের অস্তিত্ব বিদ্যমান।
বেদুরিয়া(মধুপুর)
নতুন উদ্যোক্তা, নতুন উদ্যমে শুরু হয়েছে" আমা'নি জুমাং তাঁত" শিল্পের পথ চলা।নতুন হলেও চাহিদা কিন্তুু কম নয়,চাহিদার পরিমাণ অনেক বেশি।যেহেতেু প্রোগ্রাম মাস চলছে সেই হিসাবে চাহিদার পরিমাণ কতটুকু হতে পারে তা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন।
আমরা আশা করতেই পারি এখানে প্রচুর মানু্ষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
যাদের তাঁত সম্পর্কে আগ্রহ রয়েছে বা তাঁত নিয়ে কাজ করতে চান; আপনারা এই তিনটি জায়গা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
নিজস্বতা বজায় রাখা, নিজস্বতা ধরে রাখা, বাস্তবে কঠিন মনে হলেও ইচ্ছা থাকলে সবি সম্ভব।
গারোদের তাঁত শিল্প নিয়ে রুট লেভেলের কারো সাথে যোগাযোগ করার কোনো ওয়ে আছে ?
ReplyDelete