গ্রামে মাত্র পাঁচটি গারো পরিবার এবং একটি অদেখা গারো পরিবার।।গারো গ্রাম-৩।।
গ্রামে মাত্র পাঁচটি গারো পরিবার এবং একটি অদেখা গারো পরিবার।
জাডিল মৃ
তরুণ লেখক এবং ব্লগার
খামারিয়া গ্রাম |
আ'বিমার(মধুপুরে) একটি মাত্র গারো পরিবার দেখতে সকালবেলা নাস্তা খেয়েই বের হয়েছিলাম ।শুনেছিলাম, সেখানে একটি পরিবার ছাড়া কোন পরিবার নেই, কি অদ্ভুত তাই না? অনেকদিন যাবো যাবো বলে যাওয়া হইনি,এবার গিয়েছি।তবে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে।হতাশার মাঝেও কিছু আনন্দ ছিল।কারণ গন্তব্যের জায়গাতে যেতে না পারলেও অনেক দিন পর দ্বিতীয় বারের মতো আরেকটি গারো গ্রামে ঘুরে এসেছিলাম।গারো গ্রাম শুনলেই ভালো লাগে তাই না!হ্যাঁ,আমারো শুনতে ভালো লাগে। তবে যখন শুনি এবং প্রত্যক্ষ করি গারো গ্রামগুলো আস্তে আস্তে বিলুপ্তি হচ্ছে ;হারিয়ে যাচ্ছে, গ্রামে গ্রামে গারো শূণ্য হয়ে যাচ্ছে,তখন খুবই কষ্ট হয়।বাস্তবতার মধ্যে আটকে থাকি,বর্তমানে স্থানীয় নেতৃত্ববৃন্দ বা যারা জাতিকে নেতৃত্ব দিচ্ছে গারো গ্রাম রক্ষায় কতটুকু কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে, আমার জানা নেই।গারো গ্রামগুলো নিয়ে চিন্তা করে কিনা, আমি জানি না!
গারো জাতিগোষ্ঠীর কথা কিংবা আদিবাসীদের প্রসঙ্গ উঠলেই প্রতিটা বক্তব্যে কিংবা কোন আলোচনা সভায় প্রতিবার বলতে শুনি আমাদের ভাষা,সংস্কৃতি,ঐহিত্য,আদি নিয়ম,গারো আইন প্রয়োগ,ধর্ম,পড়াশুনা,বিসিএস,চাকরি...অমুক সমুক কত কি শুনতে হয়।আজ যারা নেতৃত্ব পর্যায়ে আছে কাউকে বলতে শুনি না যে আমাদের প্রথমে গ্রাম গুলোকে রক্ষা করতে হবে, তারপর না হয় অন্য কিছু!তাই তো,গ্রামগুলোই যদি না থাকে যতই মুখের ফেনা বের করি না কেন, কি হবে?কিছু হবে ভাবছো!জাডিল(শেকড়) যদি ঠিক না থাকে, গাছের লতাপাতা, ফল,ফুল কিংবা ডালপালা ঠিক থাকবে তো?
যাইহোক,এই জন্য আবার অনেকে অভিজ্ঞতার দোহায় দিবে, বলবে কত কিছুই তো করা দরকার,আমরাও চেষ্টা করেছিলাম,কাজের কাজ কিছু হইনি।মাঝে মাঝে বুকের ভেতর ব্যাথা মোচড় দিয়ে উঠে কারণ ছোট বলে পাত্তা পাওয়া যায় না।আমাদের কথা মূল্যহীন, ছোট বলে!হাসির পাত্র হয়ে যায়।কিছু করার থাকে না, এই যে ছোট বলে!!
খামারিয়া গ্রাম..
খামারিয়া গ্রামটি অবস্থিত, ১নং দুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ, মুক্তাগাছা উপজেলা,ময়মনসিংহ জেলায়।
এই গ্রামটি অন্যান্য আ'বিমা(মধুপুর) গারো গ্রাম থেকে অনেকটা দূরে অবস্থিত। শোনা যায়,অনেকদিন আগে আশেপাশে অনেক গারো পরিবার ছিল এবং গারোদের বসবাস ছিল।কিন্তুু বাস্তবতা আজকে পাঁচটি পরিবারে দাঁড় করিয়েছে।আরো একটি পরিবার চলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।হয়তো চলেও যাবে,সময়ে স্রোত কোন দিকে যায় কে জানে!
এই গ্রামটি অন্যান্য আ'বিমা(মধুপুর) গারো গ্রাম থেকে অনেকটা দূরে অবস্থিত। শোনা যায়,অনেকদিন আগে আশেপাশে অনেক গারো পরিবার ছিল এবং গারোদের বসবাস ছিল।কিন্তুু বাস্তবতা আজকে পাঁচটি পরিবারে দাঁড় করিয়েছে।আরো একটি পরিবার চলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।হয়তো চলেও যাবে,সময়ে স্রোত কোন দিকে যায় কে জানে!
খামারিয়া গ্রামে গারো পাঁচটি পরিবার যেখানে আছে, সেখানে স্বর্গের মতো মনে হবে।কেন না বাড়িটির চারিদিকে ধানক্ষেত একপাশে রাস্তা, মনে হবে একটি দ্বীপের মধ্যে পরিবার গুলো বসবাস করছে।
সেখানে মূলত রিছিল, চিরান, চাম্বুগং পরিবার রয়েছে।পাঁচটি পরিবারে লোকজন গ্রামে এখন অবস্থান করছে ২২/২৫ জন এবং ঢাকা শহরে আছে দশ থেকে বারো জন।
এই ছোট গারো গ্রাম কিংবা পাঁচটি পরিবার এখনো টিকে আছে স্বগর্বে।জানি না, কতদিন টিকে থাকবে,কত দিন লড়াই করতে থাকবে।আমাকে যেন এমন দিন দেখতে না হয়, একটি গারো গ্রামে এখন গারো শূণ্য।
গারো গ্রামগুলো রক্ষার্থে এখনি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।যা আছে তাও হারাবো...অবস্থা খুবই শোচনীয়। সত্যি,যত দিন যাচ্ছে গ্রামগুলো তত'ই শোচনীয় অবস্থায় যাচ্ছে তো যাচ্ছে'ই।
অনেক অনেক শুভ কামনা। সুন্দর অনুভূতি, সুন্দর সুন্দর লেখা উপহারের জন্য। চালিয়ে যাও ।
ReplyDeleteধন্যবাদ।অফুরন্ত ভালোবাসা।
Delete