তে'মাথায় কোচ আদিবাসী!।। জাডিল মৃ।।
তে'মাথায় কোচ আদিবাসী!
জাডিল মৃ(Jadil Mri
ছবি-কোচ আদিবাসী। |
প্রথমেই বলে রাখি,আমাদের দিকে(মধুপুর গড় অঞ্চল) তাঁদেরকে "মান্দাই" হিসাবেই সবাই চিনে।তবে তারা "কোচ" আদিবাসী ।আবার যেহেতু তারা সনাতন ধর্ম অনু্সারি তাই নামের শেষে বমর্ণ লিখে।তাই আমিও মাঝেমধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যাই,পরিচয় নিয়ে।হয়তোবা আমার জানার অক্ষমতার কারণে সঠিক তথ্য জানাতে পারছি না অথবা নিজেই জানি না।সে-ই সংশয় হয়তো থাকতো না যদিনা আমি তাঁদের নিয়ে পড়াশুনা কিংবা গবেষণার বই পড়তাম।যাহোক, তাঁদের নিয়ে কিছু মিথ শোনা যায়, সত্য নাকি মিথ্যা আমি জানি না।আচ্ছা,সেই সব কথা আজকে থাক,আরেকদিন বলবো।
মূল কথায় আসি,
অনেকদিন পর, সেদিন "কোচ" আদিবাসীদের মানে মান্দাই পাড়ায় ঘুরতে গিয়েছিলাম।তাও আবার কম করে হলেও ছয়/আট বছর তো হবেই।ছোটবেলায় যা দেখেছিলাম তা বর্তমানের মাথে বিস্তর ফারাক।কেন না ইতিমধ্যে কোচ আদিবাসীরা অনেক উন্নতি সাধন করেছে।আমি যখন ছোট ছিলাম তখন মান্দাই পাড়ায় বাড়ি ছিল খুব কম। হয়তো তিরিশ/চল্লিশ পরিবার।তখকার সময় তাঁদের অবস্থা ছিল খুবই নাজুক।ঘরবাড়ি বলতে ছিল থাকার মতো, সম্পদশালী বলতে তেমন একটা ছিল না।সবাই দিনমজুর কাজ করে চলতো।পড়াশুনার কথা বাদি দিলাম।নুন আনতে পান্তা ফুরাই, এই অবস্থা।তবে বর্তমানে চিত্র পুরোটাই পাল্টেগেছে।জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।পাড়ার রাস্তায় ইদের সলিং হয়েছে।পাড়ায় ঘরবাড়ি একশোর উপরে।অনেকেই এখন ব্যবসা করছে,দোকানপাট দিচ্ছে,গাড়ি চালাচ্ছে এক দারুণ ব্যাপার।শুনেছি অনেকেই এখন লেখাপড়া করছে ভালো রেজান্ট করছে।হয়তো একদিন কেউ একজন বড় কিছু হবে!
পাড়া কিংবা গ্রাম পরিবর্তন হতে বেশি সময় লাগে না।লাগে শুধু পরিশ্রম এবং পরিবর্তনের মনমানসিকতা। আমি নিজেই খুব অবাক হয়েছি কেন না এই ক'বছরে এত পরিবর্তন যা কল্পনাতেও ছিল না।পাড়া ঘুরে আরো যা দেখেছি,আগের চেয়ে এখন তাঁরা ভালোই আছে, সুখেই আছে।আগে মানুষ কম ছিল বিধায় মোটামোটি সবাইকে চিনতাম।এখন অনেকের মুখ চিনি না, সবাইকে অপরিচিত লেগেছে।তবে যারা বয়ষ্ক ছিল তাদের চিনতে পেরেছি।
মনে হলো এই তো সেদিন মাত্র ঘুরেছি,খেয়েছি কিন্তুু এত বছর যে চলেগেল তার খেয়াল ছিল না।
সেখাকার মানুষ আগের চাইতে ভালো আছে তা দেখেই মন জুড়েগেল।তবে যেটা বাস্তবতা সেটা হচ্ছে কোচদের নিজস্বতা বলতে কোন কিছু এখন আর নেই, সব হারিয়েছে।হারিয়েছে ভাষা,হারিয়ে সংস্কৃতি,হারিয়েছে ইতিহাস,হারিয়েছে ঐতিহ্য সবকিছুই শেষ।কিছু বৃদ্ধ আছে যারা নিজেদের ভাষায় কথা বলতে পারে তাও তো সংখ্যায় কম।তবে আশার কথা হচ্ছে, কোচ জাতির নিজস্ব ক্রেডিট চালু হয়েছে এবং নিজস্ব "শ্রী শ্রী মহমোহন আশ্রম" রয়েছে।
তারপরেও,
ভালো থাকুক কোচ জাতি,ভালো থাকুক সকল আদিবাসী।
তে'মাথায় যেতে হলে মধুপুর উপজেলা, ফুলবাগচালা ইউনিয়নের ৮ নাম্বার ওয়ার্ডে যেতে হবে। তে'মাথা পৌঁছালেই পেয়ে যাবেন তাঁদের পাড়া। ইচ্ছা হলে ঘুরে আসতে পারেন, যদি আমার কথায় সন্দিহান থাকেন?
No comments