কাইলাকুড়ী গারো গ্রাম।গারো গ্রাম-১২।।জাডিল মৃ।।
কাইলাকুড়ী গারো গ্রাম।গারো গ্রাম-১২।
জাডিল মৃ
ছবি-কাইলাকুড়ী গ্রাম। |
সে-দিন কাইলাকুড়ী গারো গ্রামে যেতে যেতে কিছুটা রাগান্বিত মনে কিসব আবোল তাবোল চিন্তা করেছিলাম।যার ফলে কাইলাকুড়ী গ্রামের সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে পারিনি বিধায় দিতে পারছি না।তবে এতটুকু জানাতে পারি যে,কাইলাকুড়ী গ্রামে এখন গারোদের সংখ্যা দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে।যেখানে এখন অ-গারোদের সংখ্যায় বেশি। যে গ্রামটি গারো অধ্যুষিত ছিল তা আজ নিছক ইতিহাস।তবে কাইলাকুড়ী গ্রামে, "ডাক্তার বেকার অর্গানাইজেশন ফর ওয়েল বিং" নামে দুঃস্থ অসহায় রোগীদের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা কেন্দ্র আছে।যা সত্যিই গরিব দুঃখীদের জন্য সুচিকিৎসা প্রদান করে আসছে।এখানে অনেক গারো জাতিগোষ্ঠীর সদস্যবৃন্দ কাজ করে।সে-ই অর্গানাইজেশনের ইতিহাসে গেলাম না।আরেকদিন কথা হবে অর্গানাইজেশন নিয়ে।
কেন রাগান্বিত হয়েছিলাম, সেটা নিয়েই কথা হচ্ছিল।বলা যাক। কয়েক বছর হলো শোলাকুড়ী ইউনিয়ন থেকে ভাগ হয়ে নতুন ইউনিয়ন পরিষদ হলো "ফুলবাগচালা" নামে। ফুলবাগচালা ইউনিয়ন পরিষদের অফিস হলো কাইলাকুড়ী গ্রামে।যেহেতু নতুন ইউনিয়ন পরিষদ হলো কিংবা তার আগেই সম্ভাবনা ছিল এখানেই পরিষদ হবে, সেহেতু জমির মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছিল, স্বাভাবিক ভাবেই। কাইলাকুড়ী বাজারের পাশে পরিষদ হওয়ার আগে; দোকানপাট কয়েকটিমাত্র হাতেগুণা ছিল।আর এখন পরিষদ হওয়াতে বাজারের চেহারা বদলেগেছে।যে বাজারে কথা বলছি সেই জমির মালিকরা ছিল গারো।এখন বাজারের জমির মালিক আর গারো নেই।তারা আস্তে আস্তে করে সব বিক্রি করে দিয়েছে।অবশ্য কিছু জমি আছে, ক'টা দোকানোও আছে। তবে আপনাকে হতাশ হতে হবে ইতিহাসের দিকে তাকালে।
আমার কাল্পনিক চরিত্রের সাথে সত্য বাস্তবতা সংমিশ্রণের একটি গল্প বলি।যা রাগের কারণ..
ধরি ছেলেটার নাম "জাজং"।জাজং উত্তরাধিকার সূত্রে কাইলাকুড়ী বাজারে কিছু জমি পেয়েছিল।সে কাইলাকুড়ী বাজারে যা জমি পেয়েছিল, সেই জমিতে আবাদ ফসল হতো,নিজে ভালোই চলতো।এক পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ হয়ে যাই,জমির দাম বেড়ে যাই।সেহেতু আবাদের চাইতে জমিতে দোকানপাট দিলেই বেশি লাভ হতো।জমির মূল্য দিন কে দিন বৃদ্ধি পেতে থাকলো। কিন্তু একদিন জাজং এর হোন্ডা চালানোর শখ হলো।কারণ তার বন্ধুরা হোন্ডা চালাতো। এত দামী হোন্ডা কিনবে টাকা পাবে কোথায়! তাই জমি বেচে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো।জমি বেচে দিবে জানতে পেরে অনেকেই যোগাযোগ করতে লাগলো।জাজং এর আত্নীয় স্বজন অনেকেই মানা করলো জমি যেন না বেচে এবং যদি বেচতেই হয় নিজের মানুষের কাছে যেন বেচে।আত্নীয় স্বজনেরা পরামর্শ দিলো যেন আবাদ ফসল করে টাকা পয়সা উপার্জন করে যেন হোন্ডা কিনে।কিন্তুু জাজং তাদের কথা শুনলো না। নিজের মানুষদের সাথে জমি কেনাবেচা নিয়ে কথা হয়েছিল ঠিক।সে-ও কথা দিয়েছিল নিজেদের মানুষের কাছে বেচবে।কিন্তুু পরেরদিন সকালে সবাই জানতে পারে এত টাকার জন্য জমি বেচে দিয়েছে।তার পর ছেলেটি হোন্ডা কিনলো, ক'টা মাস ঘুরলো,তেলের টাকা যখন যোগার করতে পারছে না তখন হোন্ডা বেচে দিলো।নিজের জমি হারানোর পর; তারপর হোন্ডা বেচে দেওয়া অবেশেষে তাঁর অবশিষ্ট হাতে কোনকিছই ছিল না।শেষে নিজের জমি মানে, যেখানে দোকানপাট হলো সেখানেই কাজে যোগ দিলো।
তাহলে শেষে কী দাঁড়াল!আপনারাই বলেন?জাজং এর বোকামি নাকি ব্যর্থতা?
এমন অনেক গল্প আছে যা আমরা জানি!আমাদের আশেপাশেই এমন গল্পের উৎপত্তি হয়।যাই হোক,এই ছোটগল্প থেকে আমরা কী শিক্ষা পেলাম,তা আপনারা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।
No comments