Hari Hajong -কবিতার পাতা।
Hari Hajong
আদিবাসী তরুণ লেখকের সংখ্যা নিতান্তই কম মানে লেখালেখির দিকে জোঁকটা কম।কিন্তুু তার পরেও কিছু কিছু তরুণ লেখক থাকে বা চেষ্টা করে নিজের মত করে লেখা লেখি করতে যা বেশি ভাগ অপ্রকাশিত থাকে।তেমনি একজন হ্যারি হাজং,সে একজন হাজং জাতিগোষ্ঠীরর সদস্য।আমি আগেই জানতাম সেও আমার মতো টুকটাক লেখালেখি করে।আজকে তার লেখাগুলো চাইলাম সাথে সাথে দিয়ে দিলো,অনেক গুলো কবিতা পড়লাম খারাপ লাগে নাই।ভবিষ্যতে যেন আরো ভালো কিছু পাই সেই প্রত্যাশা রাখি।আমি কবিতা বিষয়ে এত কিছু বুঝি না ,তাই সমালোচনা বা পরামর্শ দিতে পারবো না।
১.
নীল চিরকুট
ভালোবাসি বলেই তোমাকে ভালোবাসি
সারাজীবন তোমার মুখে ফুটুক হাসি।
ইতি, তোমার ভালোবাসার পাগলিনী।
এই লেখাটা তোমার মনে আছে কি?
নীল চিরকুটের কথা মনে পড়ে কি?
তখন থেকেই শুরু হয়েছিল আমাদের প্রেম কাহিনী ।
তারপর দুজনের মন দেওয়া নেওয়া
নদীর ধারে পাশাপাশি বসে হাওয়া খাওয়া।
আইচক্রিম খাওয়ার কথা মনে আছে তোমার।
মাঠে শুয়ে উপর হয়ে নীল আকাশ দেখা
কত অচেনা পাখিদের উড়ে যাওয়া দেখা।
এইসব ভালোলাগার সময় গুলো মনে আছে তোমার।
বৃষ্টিতে ভিজতে তুমি অনেক পছন্দ করতে
আর আমি মানা করতাম বৃষ্টিতে ভিজতে।
তুমি অভিমানে আমার সাথে কথা বলতে না।
অভিমান ভুলে আবার মিলে যেতাম
অনায়াসেই স্বপ্নের ডানা মেলতাম।
এখন এগুলো শুধু স্মৃতি তাই না।
এখন আমাদের বিয়ের প্রায় পঞ্চাশ বছর
তোমার হাত ধরে বাঁচতে চাই আরো হাজার বছর।
কত রোমাঞ্চকর কেটেছে আমাদের সংসার জীবন।
এমন ভালোবাসা পাওয়ার জন্য চাই একটা চিরকুট
এমন সংসার জীবন পেতে চাই একটা চিরকুট।
সবার জীবনে আসুক এমন নীল কাগজে চিরকুট।
২.
জানাতে চাই
মুগ্ধ হয়ে তোমায় চেয়ে থাকা
নিজের অজানাতেই ভালোলাগা
মনে মনে তোমার প্রতিচ্ছবি আকা
তারপর হৃদয়ের স্পন্দনে জেগে উঠে ভালোবাসা।
দেহের শিরা উপশিরায় বহে
তোমার হৃদয়ের স্পন্দন
কিঞ্চিৎ দেখার আশায়
উতলা হয় আমার এই মন।
রাস্তার মোরে দাঁড়িয়ে থাকি
কখন তোমার দেখা পাবো,
আমার মতো করে
তুমিও কি আমায় ভাবো?
সত্যিই কি আমি তোমাকে ভালোবাসি?
ভালোবাসা কেমন হয়
ভালোবাসার কি কোনো রঙ হয়
ভালোবাসা কি শুধু মানুষে মানুষে হয়?
এইসব প্রশ্নের উত্তর
আমি জানি না, জানতেও চাই না
আমি শুধু জানি, জানাতে চাই
আমি তোমাকে ভালোবাসি।
৩.
ভালো থাকো
নতুন করে কিছু বলার নেই
যা বলার বলে দিয়েছি
যা জানার দরকার ছিল তা জেনে গেছ
ভুল গুলো সব ভুলে গেছি।
আকাশের দিকে তাকিয়ে
নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি
সব কলংক গায়ে মেখে
নিজেকে কলংকিত করেছি।
এত সুন্দর চাঁদের আলো
তবুও আমার কাছে কালো
সব স্বপ্ন গুলো ফেকাসে হয়ে গেল
তবুও তুমি থেকো ভালো।
নতুন জীবন নতুন করে
সুন্দর ভাবে গড়ে
খারাপ গুলো দূরে ফেলে
ভালো থাকো নিজেকে অন্যের মাঝে মেলে।
৪.
সত্যি তোমাকে অনেক ধন্যবাদ
আমি না এখন সেই আগের মতো নেই
যে তোমাকে দেখে লজ্জায় মাথা নিচু করতো
আর তোমার সামনে কখনোই ভালো করে কথা বলতে পারতো না
যে তোমাকে সব সময় তুমি করে নয় আপনি করে সম্মোধন করতো ।
এখন সেই আগের ছেলেটা অনেকটাই বদলাতে শিখেছে
জানিস আমি এখন কোনো মেয়েকে দেখে লজ্জায় মুখ লুকাই না
এমনকি তোমাকেও দেখে হয়ত মুখ লুকাবো না
এখন অনায়াসেই যেকোনো মেয়ের সাথে কথা বলতে একটুও দ্বিধা বোধ করি না।
যে ছেলেটা নতুন কোনো মানুষের দিকে তাকাতে পারতো না
সুন্দর মুখখানা লাল টুকটুকে জবা ফুলের মতো লাল হয়ে যেতো
সে এখন অনায়াসেই যে কারোর দিকে তাকাতে পারে
চোখে চোখ রেখে অনায়াসে অনর্গল কথা বলতে পারে।
সত্যি সেই ছেলেটা অনেকটাই আগের থেকে পাল্টে গেছে
সে এখন হরহামেশাই অন্যের প্রশংসা করতে শিখেছে
এখন আর তাকে অন্যের কথা মতো চলতে হয় না
নিজের মতো করে নিজের কথা মতো চলতে শিখেছে।
যে ছেলেটা স্বপ্ন কি, স্বপ্ন দেখতে হয় কেন?
মানে স্বপ্ন সম্পর্কে যার কোনো ধারনায় ছিলো না
সে এখন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে
সে স্বপ্নের মাঝেই তার অস্তিত্বের গন্ধ খুঁজে পাচ্ছে।
যে ছেলেটা সত্যি করে তোমাকে ভালোবেসেছিল
তোমার সেই মিষ্টি মিষ্টি কথা শুনে বুদ হয়ে থাকতো
এখন সে আর তোমার মিষ্টি মিষ্টি কথা শুনে বুদ হয়ে থাকে না
তোমার মিথ্যে ভালোবাসাকেও ভালোবাসে না।
সেই ছেলেটা আর অন্য কেউ নয় সে আমি
সত্যি তোমাকে অনেক ধন্যবাদ
তুমি আমাকে এভাবে মিথ্যে ভালো না বাসলে, ছেড়ে চলে না গেলে
আমি কখনোই এভাবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারতাম না, প্রিয় তোমাকে ধন্যবাদ।
৫.
জানালার ওপাশে
জানালার ওপাশে রংধনু ভাসে
আকাশের মেঘরা বৃষ্টি হয়ে পড়ে,
জানালার এপাশে রংধনুর রংয়ে রঙিন
বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে হাসে।
জানালার ওপাশে বসন্তের ফুল ফুটে
এপাশে সুগন্ধের ছোড়াছুড়ি,
জানালার ওপাশে সুমধুর সুর বাজে
এপাশে বুকে বিধে সুরের ছুরি।
জানালার ওপাশে একটি মন কাঁদে
এপাশে আরেকটি মন কাঁদে,
জানালার ওপাশে একটি মুখে হাসি
এপাশে আরেকটি মুখে হাসি।
জানালার ওপাশে একটি মেয়ে থাকে
এপাশে একটি ছেলে থাকে,
জানালার ওপাশে মেয়ের গায়ে হলুদ
এপাশে ছেলের ভালোবাসা অপ্রকাশিত থাকে।
৬.
দেখা হবে
দেখা হবে পড়ন্ত বিকেলের আভা আলোয়
রাস্তার মোরে ভাপা পিঠার ঘন ধোঁয়ার ঘ্রাণে
কুয়াশার ধুসর জলছবি আকা এই শহরে
কোলাহল থেমে নিরবতা আসে এই প্রাণে।
সোডিয়াম বাতির লেম পোস্টের নিচে
দেখা হবে মন খারাপের নিস্তব্ধ রাতে
হালকা রঙের শাড়ি পড়া তুমি
কালো টিপ, আকাশী রংয়ের চুড়ি হাতে।
দেখা হবে প্রকৃতির মহীমায় ঢাকা পার্কে
সিমেন্টের বানানো ব্রেঞ্চে বসে তুমি
তোমার মাথার উপরে শত শত কদম ফুল
আমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসি দিবে তুমি।
দেখা হবে সোমেস্বরী নদীর খেয়া পারাপারে
স্বচ্ছ জলে তোমার পা দুটো ডুবে থাকা
আর আমি পলকহীন দৃষ্টিতে দেখবো
তোমার ঘন কালো চুলগুলো বাতাসে উড়তে থাকা।
৭.
বলা হলো না ভালোবাসার কথা
দিনটা ছিলো বর্ষাসানক্ত
তোমার সাথে দেখা হটাৎ করে
তুমি দাঁড়িয়ে ছিলে এক হাতে ছাতা
আরেক হাতে ভেনেটিব্যাগ নিয়ে বাস স্টপে
তখন আকাশের মেঘরা বৃষ্টি হয়ে পড়ছিলো
আর আমি ভিজে একাকার
তোমার দিকে চোখ পড়তেই
সেই অতীতে ফিরে গেলাম,
বয়স তখন কত আর হবে
এই অনার্স ১ম বর্ষে ভুর্তি হয়েছি
নতুন ভার্সিটি নতুন ক্যাম্পাস নতুন মুখ
বলতে গেলে সবই নতুন নতুন
মনে তখন নতুনত্বের জোয়ার ভাটা চলছে,
সেই নতুনত্বের ভিরে তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম,
জানিস সেই প্রথম দেখাতেই তোমাকে ভীষন ভালো লেগেছিলো,
তারপর পরিচয়, কথা বলা, তোমার সম্পর্কে জানা
আমার সম্পর্কে তুমি জানলে, যাকে বলে পরিচয় পর্ব আর কি।
কিন্তু আমি যেহেতু একটু চাপা ধরনের ছেলে,
তাই কখনো যেমন কাউকে ভালোবাসি বলতে পারিনি,
তেমনি মনের কথাগুলো কাউকেই বলতে পারিনি।
এই বলতে না পারার যে কি যন্ত্রণা
তা আমার মত মানুষেরাই বুঝতে পারে।
তারপরে কত দিন কত সময় কাটিয়েছি
কত গল্প কত কথা হয়েছে দুজনের
তবুও কখনো বলা হলো না মনের কথা
বলা হলো না ভালোবাসার কথা।
যখনি অনেক সাহস জুগিয়ে বলতে চেয়েছিলাম
তখনি কি যেন এক অজানা ভয় আমাকে থামিয়ে দিয়েছে।
সেই অজানা ভয় কখনো জয় করতে পারিনি
তাই বহু বছর পরেও তোমাকে ভালোবাসি শব্দটা বলা হয়ে উঠেনি।
৮.
বন্ধুত্বের ভালোবাসা
সেদিন কি বার, কত তারিখ সেগুলো মনে নেই
জানিস, তোমাকে প্রথম দেখাতেই ভালো লেগেছিলো
এমনকি এটাও মনে নেই তোমার কি নাম বলেছিলে
শুধু মনে আছে সেদিন তোমায় খুব ভালো লেগেছিলো।
তারপর ঘুরাঘুরি, হাসি ঠাট্টা, এক সাথে আড্ডা দেওয়া
তোমাকে তোমার বাসা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসা
সবই কেমন জানি ভালো লাগার মধ্যে কেটেছিল
মনে মনে ভাবতাম আর এমন যেন হয় সেটাই করতাম আশা।
তোমার প্রতি কি যেন, কেমন যেন এক ভালোলাগা জন্মায়
কিছুই বুঝতে পারছিলাম না, এ আবার কি হলো আমার!
বন্ধুদের কাছে শুনতাম কারোর প্রেমে পড়লে নাকি এমন হয়
সত্যি কি তোমার প্রতি দূর্বলতাটা প্রেম ভালোবাসা আমার!
মনে মনে ভাবতাম আর বলতাম হয়ত হবে তাই
কিন্তু আমার প্রতি তোমার দুর্বলতা কি ভালোবাসা!
আবার ভাবতাম এই ভালোবাসাটা কি প্রেমিক প্রেমিকার
নাকি এই ভালোবাসা আমাদের বন্ধুত্বের ভালোবাসা।
এই ভালোবাসা প্রেমিক প্রেমিকার ভালোবাসা নয়
এই ভালোবাসা আমাদের বন্ধুত্বের ভালোবাসা
এই ভালোবাসা ফাল্গুনীর পুর্নিমা চাঁদের আলোতে কুড়িয়ে পাওয়া
এই ভালোবাসা আমাদের চিরন্তন বন্ধুত্বের ভালোবাসা।
আদিবাসী তরুণ লেখকের সংখ্যা নিতান্তই কম মানে লেখালেখির দিকে জোঁকটা কম।কিন্তুু তার পরেও কিছু কিছু তরুণ লেখক থাকে বা চেষ্টা করে নিজের মত করে লেখা লেখি করতে যা বেশি ভাগ অপ্রকাশিত থাকে।তেমনি একজন হ্যারি হাজং,সে একজন হাজং জাতিগোষ্ঠীরর সদস্য।আমি আগেই জানতাম সেও আমার মতো টুকটাক লেখালেখি করে।আজকে তার লেখাগুলো চাইলাম সাথে সাথে দিয়ে দিলো,অনেক গুলো কবিতা পড়লাম খারাপ লাগে নাই।ভবিষ্যতে যেন আরো ভালো কিছু পাই সেই প্রত্যাশা রাখি।আমি কবিতা বিষয়ে এত কিছু বুঝি না ,তাই সমালোচনা বা পরামর্শ দিতে পারবো না।
Hari Hajong |
নীল চিরকুট
ভালোবাসি বলেই তোমাকে ভালোবাসি
সারাজীবন তোমার মুখে ফুটুক হাসি।
ইতি, তোমার ভালোবাসার পাগলিনী।
এই লেখাটা তোমার মনে আছে কি?
নীল চিরকুটের কথা মনে পড়ে কি?
তখন থেকেই শুরু হয়েছিল আমাদের প্রেম কাহিনী ।
তারপর দুজনের মন দেওয়া নেওয়া
নদীর ধারে পাশাপাশি বসে হাওয়া খাওয়া।
আইচক্রিম খাওয়ার কথা মনে আছে তোমার।
মাঠে শুয়ে উপর হয়ে নীল আকাশ দেখা
কত অচেনা পাখিদের উড়ে যাওয়া দেখা।
এইসব ভালোলাগার সময় গুলো মনে আছে তোমার।
বৃষ্টিতে ভিজতে তুমি অনেক পছন্দ করতে
আর আমি মানা করতাম বৃষ্টিতে ভিজতে।
তুমি অভিমানে আমার সাথে কথা বলতে না।
অভিমান ভুলে আবার মিলে যেতাম
অনায়াসেই স্বপ্নের ডানা মেলতাম।
এখন এগুলো শুধু স্মৃতি তাই না।
এখন আমাদের বিয়ের প্রায় পঞ্চাশ বছর
তোমার হাত ধরে বাঁচতে চাই আরো হাজার বছর।
কত রোমাঞ্চকর কেটেছে আমাদের সংসার জীবন।
এমন ভালোবাসা পাওয়ার জন্য চাই একটা চিরকুট
এমন সংসার জীবন পেতে চাই একটা চিরকুট।
সবার জীবনে আসুক এমন নীল কাগজে চিরকুট।
২.
জানাতে চাই
মুগ্ধ হয়ে তোমায় চেয়ে থাকা
নিজের অজানাতেই ভালোলাগা
মনে মনে তোমার প্রতিচ্ছবি আকা
তারপর হৃদয়ের স্পন্দনে জেগে উঠে ভালোবাসা।
দেহের শিরা উপশিরায় বহে
তোমার হৃদয়ের স্পন্দন
কিঞ্চিৎ দেখার আশায়
উতলা হয় আমার এই মন।
রাস্তার মোরে দাঁড়িয়ে থাকি
কখন তোমার দেখা পাবো,
আমার মতো করে
তুমিও কি আমায় ভাবো?
সত্যিই কি আমি তোমাকে ভালোবাসি?
ভালোবাসা কেমন হয়
ভালোবাসার কি কোনো রঙ হয়
ভালোবাসা কি শুধু মানুষে মানুষে হয়?
এইসব প্রশ্নের উত্তর
আমি জানি না, জানতেও চাই না
আমি শুধু জানি, জানাতে চাই
আমি তোমাকে ভালোবাসি।
৩.
ভালো থাকো
নতুন করে কিছু বলার নেই
যা বলার বলে দিয়েছি
যা জানার দরকার ছিল তা জেনে গেছ
ভুল গুলো সব ভুলে গেছি।
আকাশের দিকে তাকিয়ে
নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি
সব কলংক গায়ে মেখে
নিজেকে কলংকিত করেছি।
এত সুন্দর চাঁদের আলো
তবুও আমার কাছে কালো
সব স্বপ্ন গুলো ফেকাসে হয়ে গেল
তবুও তুমি থেকো ভালো।
নতুন জীবন নতুন করে
সুন্দর ভাবে গড়ে
খারাপ গুলো দূরে ফেলে
ভালো থাকো নিজেকে অন্যের মাঝে মেলে।
৪.
সত্যি তোমাকে অনেক ধন্যবাদ
আমি না এখন সেই আগের মতো নেই
যে তোমাকে দেখে লজ্জায় মাথা নিচু করতো
আর তোমার সামনে কখনোই ভালো করে কথা বলতে পারতো না
যে তোমাকে সব সময় তুমি করে নয় আপনি করে সম্মোধন করতো ।
এখন সেই আগের ছেলেটা অনেকটাই বদলাতে শিখেছে
জানিস আমি এখন কোনো মেয়েকে দেখে লজ্জায় মুখ লুকাই না
এমনকি তোমাকেও দেখে হয়ত মুখ লুকাবো না
এখন অনায়াসেই যেকোনো মেয়ের সাথে কথা বলতে একটুও দ্বিধা বোধ করি না।
যে ছেলেটা নতুন কোনো মানুষের দিকে তাকাতে পারতো না
সুন্দর মুখখানা লাল টুকটুকে জবা ফুলের মতো লাল হয়ে যেতো
সে এখন অনায়াসেই যে কারোর দিকে তাকাতে পারে
চোখে চোখ রেখে অনায়াসে অনর্গল কথা বলতে পারে।
সত্যি সেই ছেলেটা অনেকটাই আগের থেকে পাল্টে গেছে
সে এখন হরহামেশাই অন্যের প্রশংসা করতে শিখেছে
এখন আর তাকে অন্যের কথা মতো চলতে হয় না
নিজের মতো করে নিজের কথা মতো চলতে শিখেছে।
যে ছেলেটা স্বপ্ন কি, স্বপ্ন দেখতে হয় কেন?
মানে স্বপ্ন সম্পর্কে যার কোনো ধারনায় ছিলো না
সে এখন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে
সে স্বপ্নের মাঝেই তার অস্তিত্বের গন্ধ খুঁজে পাচ্ছে।
যে ছেলেটা সত্যি করে তোমাকে ভালোবেসেছিল
তোমার সেই মিষ্টি মিষ্টি কথা শুনে বুদ হয়ে থাকতো
এখন সে আর তোমার মিষ্টি মিষ্টি কথা শুনে বুদ হয়ে থাকে না
তোমার মিথ্যে ভালোবাসাকেও ভালোবাসে না।
সেই ছেলেটা আর অন্য কেউ নয় সে আমি
সত্যি তোমাকে অনেক ধন্যবাদ
তুমি আমাকে এভাবে মিথ্যে ভালো না বাসলে, ছেড়ে চলে না গেলে
আমি কখনোই এভাবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারতাম না, প্রিয় তোমাকে ধন্যবাদ।
৫.
জানালার ওপাশে
জানালার ওপাশে রংধনু ভাসে
আকাশের মেঘরা বৃষ্টি হয়ে পড়ে,
জানালার এপাশে রংধনুর রংয়ে রঙিন
বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে হাসে।
জানালার ওপাশে বসন্তের ফুল ফুটে
এপাশে সুগন্ধের ছোড়াছুড়ি,
জানালার ওপাশে সুমধুর সুর বাজে
এপাশে বুকে বিধে সুরের ছুরি।
জানালার ওপাশে একটি মন কাঁদে
এপাশে আরেকটি মন কাঁদে,
জানালার ওপাশে একটি মুখে হাসি
এপাশে আরেকটি মুখে হাসি।
জানালার ওপাশে একটি মেয়ে থাকে
এপাশে একটি ছেলে থাকে,
জানালার ওপাশে মেয়ের গায়ে হলুদ
এপাশে ছেলের ভালোবাসা অপ্রকাশিত থাকে।
৬.
দেখা হবে
দেখা হবে পড়ন্ত বিকেলের আভা আলোয়
রাস্তার মোরে ভাপা পিঠার ঘন ধোঁয়ার ঘ্রাণে
কুয়াশার ধুসর জলছবি আকা এই শহরে
কোলাহল থেমে নিরবতা আসে এই প্রাণে।
সোডিয়াম বাতির লেম পোস্টের নিচে
দেখা হবে মন খারাপের নিস্তব্ধ রাতে
হালকা রঙের শাড়ি পড়া তুমি
কালো টিপ, আকাশী রংয়ের চুড়ি হাতে।
দেখা হবে প্রকৃতির মহীমায় ঢাকা পার্কে
সিমেন্টের বানানো ব্রেঞ্চে বসে তুমি
তোমার মাথার উপরে শত শত কদম ফুল
আমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসি দিবে তুমি।
দেখা হবে সোমেস্বরী নদীর খেয়া পারাপারে
স্বচ্ছ জলে তোমার পা দুটো ডুবে থাকা
আর আমি পলকহীন দৃষ্টিতে দেখবো
তোমার ঘন কালো চুলগুলো বাতাসে উড়তে থাকা।
৭.
বলা হলো না ভালোবাসার কথা
দিনটা ছিলো বর্ষাসানক্ত
তোমার সাথে দেখা হটাৎ করে
তুমি দাঁড়িয়ে ছিলে এক হাতে ছাতা
আরেক হাতে ভেনেটিব্যাগ নিয়ে বাস স্টপে
তখন আকাশের মেঘরা বৃষ্টি হয়ে পড়ছিলো
আর আমি ভিজে একাকার
তোমার দিকে চোখ পড়তেই
সেই অতীতে ফিরে গেলাম,
বয়স তখন কত আর হবে
এই অনার্স ১ম বর্ষে ভুর্তি হয়েছি
নতুন ভার্সিটি নতুন ক্যাম্পাস নতুন মুখ
বলতে গেলে সবই নতুন নতুন
মনে তখন নতুনত্বের জোয়ার ভাটা চলছে,
সেই নতুনত্বের ভিরে তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম,
জানিস সেই প্রথম দেখাতেই তোমাকে ভীষন ভালো লেগেছিলো,
তারপর পরিচয়, কথা বলা, তোমার সম্পর্কে জানা
আমার সম্পর্কে তুমি জানলে, যাকে বলে পরিচয় পর্ব আর কি।
কিন্তু আমি যেহেতু একটু চাপা ধরনের ছেলে,
তাই কখনো যেমন কাউকে ভালোবাসি বলতে পারিনি,
তেমনি মনের কথাগুলো কাউকেই বলতে পারিনি।
এই বলতে না পারার যে কি যন্ত্রণা
তা আমার মত মানুষেরাই বুঝতে পারে।
তারপরে কত দিন কত সময় কাটিয়েছি
কত গল্প কত কথা হয়েছে দুজনের
তবুও কখনো বলা হলো না মনের কথা
বলা হলো না ভালোবাসার কথা।
যখনি অনেক সাহস জুগিয়ে বলতে চেয়েছিলাম
তখনি কি যেন এক অজানা ভয় আমাকে থামিয়ে দিয়েছে।
সেই অজানা ভয় কখনো জয় করতে পারিনি
তাই বহু বছর পরেও তোমাকে ভালোবাসি শব্দটা বলা হয়ে উঠেনি।
৮.
বন্ধুত্বের ভালোবাসা
সেদিন কি বার, কত তারিখ সেগুলো মনে নেই
জানিস, তোমাকে প্রথম দেখাতেই ভালো লেগেছিলো
এমনকি এটাও মনে নেই তোমার কি নাম বলেছিলে
শুধু মনে আছে সেদিন তোমায় খুব ভালো লেগেছিলো।
তারপর ঘুরাঘুরি, হাসি ঠাট্টা, এক সাথে আড্ডা দেওয়া
তোমাকে তোমার বাসা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসা
সবই কেমন জানি ভালো লাগার মধ্যে কেটেছিল
মনে মনে ভাবতাম আর এমন যেন হয় সেটাই করতাম আশা।
তোমার প্রতি কি যেন, কেমন যেন এক ভালোলাগা জন্মায়
কিছুই বুঝতে পারছিলাম না, এ আবার কি হলো আমার!
বন্ধুদের কাছে শুনতাম কারোর প্রেমে পড়লে নাকি এমন হয়
সত্যি কি তোমার প্রতি দূর্বলতাটা প্রেম ভালোবাসা আমার!
মনে মনে ভাবতাম আর বলতাম হয়ত হবে তাই
কিন্তু আমার প্রতি তোমার দুর্বলতা কি ভালোবাসা!
আবার ভাবতাম এই ভালোবাসাটা কি প্রেমিক প্রেমিকার
নাকি এই ভালোবাসা আমাদের বন্ধুত্বের ভালোবাসা।
এই ভালোবাসা প্রেমিক প্রেমিকার ভালোবাসা নয়
এই ভালোবাসা আমাদের বন্ধুত্বের ভালোবাসা
এই ভালোবাসা ফাল্গুনীর পুর্নিমা চাঁদের আলোতে কুড়িয়ে পাওয়া
এই ভালোবাসা আমাদের চিরন্তন বন্ধুত্বের ভালোবাসা।
No comments