খামাল নরেশ মৃ অসুস্থ এবং আমাদের দায়বদ্ধতা।
খামাল নরেশ মৃ অসুস্থ এবং আমাদের দায়বদ্ধতা।
জাডিল মৃ(Jadil Mri)
তরুণ লেখক এবং ব্লগার
মামা ও ভাগ্নিনা |
আমার মামা, খামাল নরেশ মৃ ।আমাদের আদি ধর্ম 'সাংসারেক'এর খামাল;যাকে বলে পালপুরোহিত।তিনি এখনো সাংসারেকের নিয়ম কানুন আচার ব্যবহার মান্য করে চলেন।যে গুটিকয়েক সাংসারেক ধর্মের খামাল বেঁচে আছেন তাদের মধ্যে অন্যতম খামাল নরেশ মৃ।
তিনি ঢাকা ওয়ানগালা কিংবা বিভিন্ন গ্রামের যে ওয়ানগালা গুলো হয়, তার প্রধান দায়িত্বে থাকেন খামাল নরেশ মৃ বা পালপুরোহিতের দায়িত্ব পালন করেন।তিনি যতটা পারেন চেষ্টা করেন, সাংসারেক ধর্মের যে কোন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে।তিনি আমার মামা,আমি তাঁর ভাগ্নিনা।আমাদের মধ্যে রসায়ন আবার অন্য মাত্রায়। যেটা কিনা সব মামার সাথে রসায়নের সম্পর্ক হয়ে উঠে না।
তিনি ঢাকা ওয়ানগালা কিংবা বিভিন্ন গ্রামের যে ওয়ানগালা গুলো হয়, তার প্রধান দায়িত্বে থাকেন খামাল নরেশ মৃ বা পালপুরোহিতের দায়িত্ব পালন করেন।তিনি যতটা পারেন চেষ্টা করেন, সাংসারেক ধর্মের যে কোন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে।তিনি আমার মামা,আমি তাঁর ভাগ্নিনা।আমাদের মধ্যে রসায়ন আবার অন্য মাত্রায়। যেটা কিনা সব মামার সাথে রসায়নের সম্পর্ক হয়ে উঠে না।
শেষবার মামার সাথে দেখা হয় পীরগাছা গ্রামে।যেদিন খ্রিষ্টরাজার পর্ব (ওয়ানগালা) হচ্ছিল। গীর্জার শেষে তাকে পালপুরোহিতের বা খামালের দায়িত্ব পালন করতে হবে।সেই জন্য তার সমবয়সী দুইজেনর সাথে গল্প করছিলেন এবং চা খাচ্ছিলেন। কবে গীর্জা শেষ হবে কবেইবা খামালের দায়িত্ব পালন করবেন।সেদিন মামাকে বলেছিলাম,' আপনি তো এখন ব্যস্ত একদিন আপনার বাড়িতে ঘুরতে যাবো'। মামা উত্তরে বলেছিলেন,'সমস্যা নাই!
আমি এখন বাড়িতেই থাকি'।
আমি এখন বাড়িতেই থাকি'।
যাবো যাবো করে অনেকদিন হয়েগেছে। যাওয়া হচ্ছিল না।পরিশেষে হাতে সময় পেলাম এবং হোন্ডা। এক নিমিষেই ছুটে গিয়েছিলাম মামার কাছে।প্রথমবার যখন যাই মামার সাথে দেখা হয়নি। তবে মামীর সাথে দেখা হয়।কিছুক্ষণ কথা বলে চলে আসি।দু'দিন বাদে আবার যাই।ভাগ্যক্রমে সেদিন মামা বাড়িতে ছিলেন।আমাদের আসাতে তিনি অত্যন্ত খুশি হন।একসাথে বসে চা খেলাম, দীর্ঘ সময় ধরে গল্প শুনলাম,আড্ডা দিলাম।তবে জানতে পারলাম, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন।উনার অপারেশন করা দরকার।এর আগে দুই বার অপারেশন করিয়েছেন।ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছেন আবার অপারেশন করতে হবে।তাঁর বয়স এখন আশি'র(৮০) উপরে। তবুও তিনি শক্ত সামর্থ্য এবং মনোবলের শক্তি অসাধারণ।
থকবিরিম নিউজ.কম এর জন্য ইন্টারভিউ নিতে চেয়েছিলাম। উনার অসুস্থতার কথা জানার পরে, ইন্টারভিউ নেওয়ার ইচ্ছা হলো না।দীর্ঘক্ষণ উনার সাথে ব্যক্তিগত বিষয়,সমাজ ব্যবস্থা,সাংসারেক,মিত্তে,আমুয়া,গল্প,অতীত ইতিহাস,সত্য ঘটনা ইত্যাদি নিয়েই কথা হল।
মামাকে কিভাবে সাহায্য করবো? বা কি করা উচিত?আমার জানা নেই।উনার আরেকটা অপারেশন করতে হবে।জানি না অপারেশন কবে হবে?তবে প্রার্থনা থাকবে অপারেশন যেন তাড়াতাড়ি হয়।
সবার কাছে আমার আহ্বান থাকবে,যে গুটিকয়েক খামাল বেঁচে আছেন।নিজের আদি ধর্ম সাংসারেক কে আগলে ধরে বেঁচে আছেন।তাঁর খোঁজ খবর নেওয়া কিংবা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া আমাদের কর্তব্য নয় কি?আমি অনুরোধ জানাবো টাকা পয়সা না হোক অত্যন্ত একটা ফোন দিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া, ভালো মন্দ জিজ্ঞাসা করতেই পারি।
যথা সময়ে দাঁতের মর্যাদা না দিলে দাঁত পড়েগেলে যত্ন নিয়ে লাভ কি?
প্রোগ্রামের সময় খামাল খুঁজে পাওয়া যায় না।খুঁজে পেলেও কিছু টাকা ধরিয়ে দিই।যেটা কিনা গাড়িভাতেই চলে যাই।তাহলে সারা বছর সংসারের কি হবে??প্রোগ্রামের শেষে খামাল আমি চিনি না!এমন যেন না হয়।সাংসারেক কিংবা খামালের প্রতি নিশ্চিয় দায়বদ্ধতা আছে!সেই দায়বদ্ধতা আমাদের মাঝে প্রতিফলিত হোক।
No comments