শাওন রিছিলের কবিতা গুচ্ছ

শাওন রিছিল


ছবি-শাওন রিছিল





(১)


ধর্মান্তরিত শ্লোক

দিনের পর দিন বেঁচে থাকার স্মৃতি ধরে রাখতে
জীবনের নিয়মে সকালের অপেক্ষায়
ক্ষত বিক্ষত ঝোপ সাঁতার কাটেনি।
এই যে স্মৃতি ধরে রাখার লোলুপতা,
প্রার্থনার রেশ শেষ হতে না হতেই
যাজকের তাড়নায় আর্বিভাব হয় অচেনা শ্লোক।।
ভক্তগন ভাবেন, ঈশ্বরের উপহার ইহা,
আর্শীবাদের কারণ হয়ে উঠবে আগমনী দিনে।
ভক্তগোষ্ঠী যদি জানতে, এই ধর্মান্তরিত শ্লোক
ভোরের পাখির ভাষা বুঝতে পারে না,
তবে স্মৃতি ধরে রাখার এই দৌড়ে থামিয়ে দিত
সমস্ত চাওয়া পাওয়া।




(২)


শীতল পদচারণা


ইহাই ছিল শীতল পদচারণার ঘামকেন্দ্র
ফোটায়,ফোটায় সঞ্চিত ঘামে লুন্ঠন হচ্ছিল
ভেজা পাত্রের গভীরতা।।
তাহলে তৈরি থাকুন প্রফেসর
পিছলে চলা সময়ের স্রোত বেয়ে নাভির উপত্যকায়।
বিশস্ততার শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানের ষোড়শতম নাচিয়েদের
আসার আগেই জল ছুঁই ছুঁই সূর্য কণার আগমনে
ঘাম ধারণ করতে পারেই, আটকে থাকা
শীতল পদচারণার পশ্চাদ দেশ।



(৩)



অধুনা ভাবনা


দ্রষ্টব্য এই যে , তুলে রাখা দূরবীনের ঘুম শেষ হলে
দাত মাজার ধারনা নিয়ে হাঁটতে বের হয় বিকালের ছাদ।
ঘুম মেরামতের জন্য পিঁপড়েদের যে দল তুলে নিয়েছিল জোগাড় যন্ত্র
তাদের থেমে যেতে হল, বালিশের গল্প কথায়।
এবার, তরুণ একটা “দিন” তারিখ পাল্টে ধাওয়া করে
বির্বন লোহিত সাগরের পথহারা ঢেউ।
খোলামেলা প্রান্তর ঝুঁকে দেখে, বিছানার সমালোচনায় ব্যস্ত নগরি,
এবং তার প্রধান ফটকে, আলোকরশ্মির কষাঘাত।
এখন, চোখের নিমিষে পাল্টে গেলে দৃশ্যপট,
নেচে গেয়ে হাজিরা দিয়ে যায় পর্দাদের দল।
শহরে নামে ঝাকে ঝাকে ঝলমলে চোখ।




(৪)


নাগর


তার জন্য আমার কাজল মাখা চোখ?
সে আমার স্বপ্ন  নাগর
ভিন দেশি এক রাজ পুত্তুর,
নাগর আমার আদর মাখা সুখ।

এত, এত ভাবনার ভীড়ে
তার তো সময় কাটে অনেক কাজে,
উঠোন ভরা আমার জন্য সুখ যন্ত্রের চাষে
ভাবনা তো তাই তাকে ঘিরে।

নাগর আমার মন্ত্র জানে
সেকি আর বলা যায়,
মন্ত্র, সে তো দুজনের চোখের ভাষায়,
ছুটে আসা তাই তার টানে।



(৫)

বৃন্দা বালার হাতে আঁকা ছবি


আর দশটা হাতে আঁকা ছবির মতনই
 ঘাস ফুল ছিল, আকাশ ছিল, উড়ে যাওয়া  পাখির কলকাকলী ছিল,
লাল টিপের মতন, বহু দূরে ডুবে যাওয়া সূর্য ছিল।
বলা যায়, কর্মচঞ্চল একটা শতাব্দীর এক সহস্র ভাগের কিছু অংশ চুপিচুপি
ঠায় নিয়ে, নিয়েছিল বৃন্দা বালার হাতে আঁকা ছবিতে।

এখন যদি, বর্ননা শুনে ভেবে থাকেন বৃন্দা বালা দামী “আর্টিস্ট”,
 সে ধারণা আপনার ভুল হবে শতভাগ।
যে বছর খুব কদম ফুটলে,
ঝমঝমিয়ে খুব বৃষ্টি এলে,
সেই বছরের এক বৃষ্টি দিনে দাওয়ায় বসে ডান পায়ের বুড়ো আঙুলে
অর্ধ বৃত্তাকার একে, ছবি আঁকায় পায়েখড়ি করেছিল বৃন্দা বালা।

তারপর থেকে কত গ্রামদৃশ্য, আলোকসজ্জা, ধান শালিক, বেয়ারা খরগোশ
আরও বহু চঞ্চল জনপদ বসত নিয়েছিল বৃন্দা বালার অংক খাতার ক্যানভাসে ,
সে খবর শুধু বৃন্দা বালার পোষা শালিক জানে।












No comments

Theme images by saw. Powered by Blogger.