"জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ" নিয়ে আমার কিছু ভাবনা।


"জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ" নিয়ে আমার কিছু ভাবনা।

Jadil Mri (জাডিল মৃ)
তরুণ লেখক এবং ব্লগার

ছবি:ব্লগার জাডিল মৃ





আমাদের আবিমার মাতৃ সংগঠনের কথা যদি বলি, সবার আগে নাম আসবে"জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ"।প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আপোষহীন ভাবে সমগ্র আদিবাসীদের জন্য কাজ করে চলছে,প্রতিটা আন্দোলন সংগ্রামের নেতৃত্বে প্রথম সারিতে থাকে, এইটা অস্বীকার করারর মতো কিছু নাই।মাতৃ সংগঠন হিসাবে সবসময় শ্রদ্ধার চোখে দেখেছি,ভালোবেসে এসেছি এবং এই সংগঠনের যে কত গুরুত্বপূর্ণ তা আসলে বলার অপেক্ষা রাখে না।আমার যখন বুঝার ক্ষমতা হয়েছে প্রায় দশ কিংবা বার বছর আগে।তখন জমজমাট ভাবে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল,যা দেখার আমার সৌভাগ্য হয়েছিল।দুইটি দল তখন পোস্টারেরর মাধ্যমে প্রচার করেছিল।আদিবাসী এলাকা পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছিল, তখন খুব আগ্রহ নিয়ে নাম গুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতাম। অবশ্য তখন বুঝতাম না নির্বাচন কি প্রক্রিয়ায় হয় এবং যারা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিল সবাই ছিল অপরিচিত , কে আসলে যোগ্য নেতা বা কে এগিয়ে  বা পিছিয়ে আছে বুঝার সক্ষমতা ছিল না।


আমি যখন সংগঠনের অফিসের সামনে দিয়ে যায়,প্রতিবার দেখি অফিস খোলা নাকি বন্ধ। কোন সমস্যা নিয়ে লোক জন আসে কিনা বা অফিসে মানুষ জন থাকে কিনা, আমার জানার বরাবরি আগ্রহ থাকে।কিন্তুু যতবার যাই প্রায় সময় অফিস বন্ধ থাকে,আসলে আমি জানি না আমি গেলেই অফিস বন্ধ থাকে নাকি সত্যি সত্যিই বন্ধ থাকে।হয়তো নেতৃত্ববৃন্দ ব্যস্তার কারনে অফিসে বসতে পারেন না।তবে মনের ভিতর সব সময় বিশ্বাস থাকতো আজকে অফিস খোলা এবং সব সময় এটাই চাই অফিস খোলা থাকুক।


দশ কিংবা বারো বছর  আগের নির্বাচন দেখে আমারো খুব ইচ্ছে হয়েছিল, আমিও একদিন পোস্টার সম্বলিত ভাবে নির্বাচনে দাঁড়াব, নেতৃত্বে আসবো।কিন্তুু এখন যা পরিস্তিতি সেই ইচ্ছা গুলো কেবল মরীচিকা। আমার মতো আরো অনেকের সেই ইচ্ছাটা থাকতে পারে, আমি ঠিক জানি  না।
"জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ" থেকে আমি একজন মান্দি জাতিগোষ্ঠীর সদস্য হিসাবে অনেক কিছু আশা করি।যারা নেতৃত্বে আছেন, সেই বিষয় গুলো হয়তো বুঝতে সক্ষম হবে যে তরুণ নেতৃত্ব বা তরুণদের ভূমিকা কতটুকু।আমার কাছে আরো মনে হয়,তরুণদের সাথে সংগঠনেরর যে রকম সম্পর্ক  বা যোগাযোগ থাকা দরকার তা পর্যাপ্ত নয়। আমি দশ কিংবা বার বছর আগে যে রকম উৎসব আমেজ নির্বাচন দেখেছিলাম সেই রকম নির্বাচন দেখতে চাই।অবশ্য মাঝখানে আরেক বার নির্বাচন হয়েছিল, সেটা এতটা আমাকে প্রভাবিত করেনি।আমার ব্যক্তিগত মতে,মাতৃ সংগঠন তেমন ভালো নেই,ইদানিং মানে কিছু প্রোগ্রাম ছাড়া কোন কার্যক্রম দেখি না, হয়তো থাকতে পারে সেই গুলো আমার অজানা।


একটা সত্যি ঘটনা বলি..
(সেই বন্ধুটির নামটা বলছি না)


আমাকে আমার বন্ধু একবার," বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বলেছিল",আমি তাতে কিছু মনে করেনি।এর কারন হচ্ছে, মাঠে নামার পর বোঝা যায়" কত ধানে কত চাল"।আমি বলেছিলাম,"তালায় ভাত আর তরকারি সুন্দর করে সাজানো থাকলে সবাই খেতে পারবে, সন্দেহ নাই।কিন্তুু চাল সংগ্রহ করে, রান্না করা, সবজি সংগ্রহ করে, রান্না করা চুলায় আগুন ধরানো, সময় ব্যয় করে ধৈর্য সহকারে কাজ সম্পন্ন করা এবং টেবিলে রান্নার ভাত সবজি সাজানো চারটিখানি কথা নয়"।ছোট বেলায় একটা প্রবাদ শুনতাম,"মুখের কথায় চিড়া ভিজে না"ঠিক তাই।
আমি সেই বন্ধুটিকে বলতে চাই..
সুন্দর করে একটু গুজিয়ে আর একটু বই পড়েই বুদ্ধিজীবী হওয়া যায় না রে বাবা।একটু বই পড়েই পৃথিবীর সমস্ত কিছু জানা হয়ে গেল!কিছু বই পড়া মানে সব জান্তা, এটা কি সম্ভব?আমি তা মনে করি না।

যাই হোক না কেন, জাতির জন্য চিন্তা করবো ভালো কথা, কিন্তু আগে পিছনে সামনে কোন কিছু না ভেবে হুটহাট বলে দিলেই হবে না,দেখতে হবে বাস্তবতা।মাতৃ সংগঠন কে অস্বীকার করার আগে, তার ইতিহাস জেনে নিও এবং তার সক্ষমতা বুঝে নিও,কার্যকরী দিক দিয়ে সক্ষম নাকি সক্ষম না।


যে সত্য ঘটনা বললাম সেটা হচ্ছে মাতৃ সংগঠন নিয়ে আমাদের তর্ক।সে বলছিল, "জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের" প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে এসেছে, নতুন করে একটা সংগঠন দাঁড় করানো দরকার।আমি সাথে সাথেই তার কথা নাজক করে দিয়েছিলামম।
মাতৃ সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা এখনি ফুরিয়ে যায়নি, মাতৃ সংগঠন বাদ দিয়ে নতুন করে সংগঠন তৈরি করা, অদূরদর্শীতার লক্ষণ(আবিমার ক্ষেত্রে বলেছি,অন্য এলাকার কথা বলতে পারবো না)।
আমি জানি বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ,অনেক বড়দের কাছে জানার চেষ্টা করেছি নির্বাচন কবে হবে বা আদৌ হবে কিনা! ব্যক্তিগত ভাবে আমি খুব হতাশ, এই রকম চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে কারো কাছে হয়তো আবার শুনতে হবে যে, "প্রয়োজনীয়তা শেষ"।


নেতৃত্বের আসার ইচ্ছা থেকে"জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের"সদস্য হয়েছিলাম।নির্বাচনে ভোট দেওয়ার খুব ইচ্ছা, কিন্তুু কবে দিতে পারবো আমার জানা নাই।
যিনারা দায়িত্বে আছেন বা সংগঠনের সাথে যুক্ত উনারা যদি নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আসতো, আমি ব্যক্তিগত ভাবে অনেক খুশি হতাম।আমি চাই আমি যে নির্বাচন দেখে প্রভাবিত হয়েছিলাম, আমারো ইচ্ছে হয়েছিল আমিও নেতৃত্বে আসবো, আবার সেই রকম নির্বাচন দেখতে চাই।দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের কাছে একজন তরুণ হিসাবে আহ্বান থাকবে, খুব শীঘ্রয় নির্বাচন দেওয়া হোক।যেন মাতৃ সংগঠন আবার আগের মতো কর্মচঞ্চল এবং সমগ্র আদিবাসীদের জন্য কাজ করতে পারে, আপোষহীন ভাবে।


মাতৃ সংগঠন"জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ"আমাদের অভিভাবক, এটাকে অস্বীকার করা মানে নিজের মা -বাবাকে অস্বীকার করা।

No comments

Theme images by saw. Powered by Blogger.