অবিরত ছুটে চলা,দীর্ঘ ভ্রমন সার্থক
Jadil Mri
অবিরত ছুটে চলা,দীর্ঘ ভ্রমন সার্থক
ছুটির আগেই সম্ভবত ক্যাম্পাসে থাকাকালীন সময়ে ভেবেছিলাম,আমি কিভাবে এত লম্বা ছুটির দিন পার করবো।হাতে প্রচুর সময় কোন কিছু যদি না করি তাহলে তো ছুটি'ই বৃথা । সেই জন্যই কিছু করার বাও খুঁজতাছিলাম,পরে অবশ্য ব্যাটে বলে মিলে গেল।আমার সবচেয়ে ভালোলাগার কাজ ও প্রধান শখ বা প্রিয় জিনিস হলো ভ্রমণ করা। এক দার কাছ থেকে শুনা," বইয়ের চেয়ে ভ্রমনে সবকিছু বাস্তবরূপে পড়া যায় বেশি,যেমন অভিজ্ঞতা হয়; তেমনি মনে থাকে বেশি"।সেই কথা আমার বার বার মনে পড়ে,মাঝে মাঝে নিজে নিজেই চিন্তা করি,বলি"তাই তো! দার বলা তো একদম ঠিক!মিথ্যা নই"।সত্যি বইয়ের পড়া এবং ভ্রমণ পড়া অনেক মানে বহুগুণ পার্থক্য রয়েছে।যদিওবা আমি দু'টোই পছন্দ করি কিন্তুু আমি ভ্রমণকে'ই আগে রাখব।
রাঙামাটি
যে কোন কারনে হোক, এই বার রাঙামাটি যাওয়ার, আমার সৌভাগ্য হয়ে যায়।রাঙামাটি যাওয়ার আগে ঢাকায় ছিলাম তিন দিন দুই রাত,শুক্রবার গিয়াছিলাম এই কারনে যে জ্যামে যেন বসে থাকতে না হয়।সবার মতো আমারো জ্যাম খুবই বিরক্তিকর ব্যাপার,তবে সেদিন কোন জ্যাম ছিল না।একদিকে যেমন ছুটির দিন তেমনি আবার রোজার মাস,খুব অনায়াসে এবং খুব কম সময়ে ঢাকায় পৌঁছে গিয়েছিলাম।রাঙামাটি গিয়েছি এই পর্যন্ত তিন বার, তবে সবচেয়ে বেশি সুন্দর দৃশ্য বা বেশি ভালো লাগার সময় ছিল শীতকালে যখন দ্বিতীয় বারের মত গিয়েছিলাম।সকাল বেলা কাপ্তাই লেকে যখন নৌকার উপর দাঁড়িয়ে সূর্য উঠা দেখেছিলাম, চারিদিকে হালকা কুয়াশা, দূর দূরান্তে ছোট বড় মাছ ধরার ট্রলার বা নৌকা। স্বর্গের মত করে সময় ছিল, আমি ব্যক্তিগত ভাবে সেই দৃশ্য অনেক উপভোগ করেছিলাম।
এইবার রাঙামাটি আমার জন্য ছিল অন্যতম দিন যেখানে পিসিবির কেন্দ্রীয় সম্মেলনে উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল। আমার মত নগণ্য মানুষ যে থাকতে পেরেছে,সেটা আমার মতো মানুষের ভাগ্যের ব্যাপার, ছোট বেলার স্বপ্ন দেখার ও পূরর্ণে যে সুযোগ করে দিয়েছে সেজন্যে অবশ্যই "নিপুণ ত্রিপুরা" দাদাকে আমার মন থেকে ধন্যবাদ জানাই।দাদা যদি আমাকে সুযোগ না দিতো আমার যাওয়া হতো না,দেখারো ভাগ্য হতো না।আমি রাঙামাটি থেকে এইবার অনেক কিছুই নিজের জন্য নিয়ে আসতে পেরেছি।সাথে অলিক মৃ(মামা) এবং হ্যারি হাজং(এক ব্যাচ সিনিয়র) ছিল। মামা মজা করেই বলে, "তোদের দ্বারা কিসসু হব্বে না"।অবশ্য সেটাও ঠিক তার মতো তো আর অভিজ্ঞ না পারদর্শী না যে কিছু করতে পারবো...হাহাহহা।
বড় প্রাপ্তি এই যে, যত অভিজ্ঞ মানুষের সাথে থাকবো তত কিছু না কিছু শিখা যায় সেটা হয়তো পরের বার বা পরবর্তী সময়ে কাজে লাগে।উদাহারণ হতে পারে,একটা জায়গায় পারলে বার বার যাওয়া উচিত, কেন না?একবার গেলে সবকিছু দেখতে পারবা না বুঝতে পারবা না,ভালো মতো দেখতে গেলে বুঝতে গেলে আর গভীরে যেতে হলে বেশি করে বিচরণ করা দরকার।আমি যে রাঙামাটি গেলাম সবকিছু একবারে আমি দেখতে পারিনি,একেক সময় একেক জায়গা গিয়েছি এবং দেখেছি। আবার যেতে হবে কারন এখনো দেখার অনেক কিছু বাকি, বুঝতে বাকি,সেই জন্য বেঁচে থাকলে আবার যাবো।মোট কথা, বড়দের সাথে বা অভিজ্ঞ মানুষের সাথে সঙ্গ দেওয়া মিস করা ঠিক না বা করা উচিত না।আর বেশি করে যত সভা,সেমিনার, সম্মেলন, প্রোগ্রাম করা যায় তত নিজের জন্য আমাদের জন্য ভালো। রাঙামাটি যতদিন ছিলাম খুব ভালোই ছিলাম এত আরাম আয়েস আদর আপায়ন যত্ন, দিনগুলো খারাপ যায় নাই।
রাঙামাটি থেকে শুধু আমার জন্য নিজের জন্য নতুন কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন হয়েছে ফলত যে রকম চিন্তার মধ্যে মগ্ন ছিলাম বাস্তবতা আমাকে নতুন করে ভাবনার মধ্য দিয়ে নিয়েগেছে।আমি জানি, সেখানে আমার দেওয়ার মতো কিছু ছিল না কিন্তুু নেওয়ার মতো অনেক কিছুই ছিল। যতটুকু পারি নিয়েছি।যখন তিন দিন দুই রাত ছিলাম এই সময়ে অনেক জনের সাথে দেখা হয়েছে পরিচয় হয়েছে,আমাদেরকে যারা সময় দিয়েছে সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাই।যদি বিশেষ করে ধন্যবাদ জানাই,সে হচ্ছে দিদিকে (নাম বলবনা)যে কিনা আমাদের জন্য প্রচুর সময় ব্যয় করেছে কিন্তুু তার পরেও সময় দিতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করেছে। আমি দিদিকে বলেছি, "ধন্যবাদ দিদি, আমাদের কে সময় দেওয়ার জন্য"।এই যে দুঃখ প্রকাশ আমি এত কিছু আশা করিনি ফলত সেই দিদিকে আমি স্মরণে রাখব অনেক দিন।
মনের মধ্যে ইচ্ছা ছিল আরো কিছু দিন থাকি আরো একটু সময় নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।কাপ্তাই বাঁধে যেতে খুব আপসোস লাগে।যতবার গিয়েছি তত বার মনে হয়েছিল বা বলেছি এইবার কাপ্তাই বাঁধে যাবো কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস যাওয়া হয়ে উঠেনি। বেঁচে থাকলে অবশ্যই যাবো।
আশা রাখি,এই কাপ্তাই নিয়ে পরবর্তীতে কিছু লিখব।
রাঙামাটি শহর নিজের শহর মনে হয়। রাঙামাটি শহর আদিবাসী শহর,রাঙামাটি শহর সংগ্রামের শহর।
আদিবাসী সংগ্রাম আন্দোলন দীর্ঘজীবী হোক।
দিগলাকোনা
রাঙামাটি থেকে এসেই রাতের বেলা রওনা দিলাম দিগলাকোনা নামক জায়গায়,তবে যে সময় পৌঁছানোর কথা ছিল দেরি করে ঢাকায় পৌঁছেছি। জ্যামের মধ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকা যে বিরক্তিকর, কেমনে বুঝাই!দিগলাকোনা অপরিচিত নাম, যেখানে আমার কোন দিন যাওয়া হয় নাই।দিগলাকোনা যখন পৌঁছায় তখন বাজে বোধয় চারটা কিনবা তারও বেশি।কোথাও ঘুমানোর বাও খুঁজে না পেয়ে ঘুমানোর সিদ্ধাত নিয়ে ফেলি, গাড়িতেই ঘুমাবো।কিন্তুু চোখের আর ঘুম আসে না ঘুম না আসার আরেকটা কারন ছিল আমাদের সাথে একছোট বোন ছিল(আমার চাইতে বড়,কিন্তুু দেখলে মনে হবে না যে বড়,সেই জন্য ছোট বোন ডাকি আরিকি!...হাহাহহাহাহাহাহাা)। এত বকবক জ্বালা যন্ত্রণা মানে প্যারা দেয় ঘুমানো কি যায়?শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে সকাল বেলাই যখন পাখি কিচিরমিচিরে চারদিক মুখর তখনি ঘুমানো বাদ দিয়ে ঘুরতে বের হলাম।ঘুরতে ঘুরতে ঝুম চাষের স্বাদ পেলাম.....
ঝুম শুধু যে ধান চাষ হয় তেমনটা না আরো অনেক কিছুই চাষ হতে পারে, চাষ করেও।এত সুন্দর জায়গা মন নাড়া দেয়, আহা!কি শান্তি আকাশে বাতাসে।
যখন দেখলাম মাথার অবস্থা ভালো না একটু হলেও ঘুম প্রয়োজন কাউকে না বলে চুপ করে গাড়িতে গিয়ে হালকা ঘুমিয়ে নিলাম।যা শালা,একটু ঘুমানোর পর মনমেজাজ তরতাজা হয়েগেল,মনে শান্তি বয়ে যায়, সারাদিন ঘুরলেও এত প্যারা হবে না।ঘুমানোর আরো অনেক ইচ্ছা ছিল কিন্তুু ঘুমাতে দিলে সে ঘুমাবো!এত প্যারা কি সহ্য হয়?অবশ্য হতেই হবে একটা জায়গায় আসছি না..ঘুমানো কি এত যায়? তাই ঘুম বাদ দিলাম।হাহাহহাহহাহাহ।
প্রোগ্রাম শেষ করে পাহাড়ি রাস্তা বেয়ে বন্ধুর বাড়িতে উপস্থিত হলাম।বন্ধুর সাথে প্রথম পরিচয় কলেজে থাকাকালীন, এক সাথে আমরা কলেজ পড়তাম।প্রোগ্রামে না আসলে তার বাড়ি দেখা হতো না এত সুন্দর জায়গায় যে তার, বাড়ি জানা ছিল না।দিগলাকোনা মিশনের পথ চলা বেশি দিন হয়নি।তাই হয়তো এখনো সেই ভাবে মিশন গুছানো হয়নি।দেখলাম আস্তে আস্তে মিশন সুন্দর হচ্ছে পরিপাটি হচ্ছে। আমাদের যাওয়ার একদিন কী দুই দিন আগে জুনিয়র হাইস্কুল চালু হয়েছে, যা প্রশংসার দাবিদার। কারন পড়াশুনা করতে গেলে অনেক দূর পায়ে হেঁটে যেতে হতো যা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার।আর এখন মিশন খুব কাছেই,পড়াশুনো আগ্রহ বেড়ে যাবে, তেমন কষ্টকর হবে না।আশা রাখি,শিক্ষার হার যেন বৃদ্ধি পাই, উচ্চ শিক্ষিত যেন বাড়ে।যতদিন পর্যন্ত সুশিক্ষিত হতো পারবো না তত দিন পর্যন্ত আমাদের মুক্তি নাই।
যত দূর জেনেছি এখানে মান্দি(গারো)গ্রাম আছে মোট সাতটি কিন্তুু কত জন গারো আছে কেউ আনুমানিক হিসাব দিতে পারেনি।এছাড়াও দেখলাম একটি ক্যাথলিক গীর্জাঘর এবং দি বালুঝুররী ক্যাথলিক সোসাইটি আছে।
পাহাড় ঘুরতে ঘুরতে ভেবেছিলাম,"গারো কোন জায়গায় নাই বা ছিল না?আনাচে কানাচে সব জায়গায় গারো পাওয়া যায়,যদিওবা এখন অনেক জায়গার অস্তিত্বহীন শুধু মাত্র রয়েছে ইতিহাসে পাতায়"।
সমিতি দেখে ভালো লেগেছে তবে ক্রেডিট যদি দেখতাম আরো ভালো লাগতো।
জামালপুর জেলার বকশীগজ্ঞ উপজেলার যে মান্দি গ্রামগুলো আছে এখানে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখেছি।তারা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।যদিওবা আমি সবকিছু এত সম্পূর্ণ জানি না,আমার চোখে যা পরেছে যা মনে হয়েছে তাই বলছি।
১.প্রথমত বলবো এখানে শিক্ষার আলো ঠিকমতো জ্বলে উঠেনি
২.এখন পর্যন্ত কারেন্টের আওতায় আসেনি
৩.বিশুদ্ধ পানির অভাব ডিজিটাল যুগে এসেও কুয়ার পানি খেতে হয়,
৪.যোগাযোগ ব্যবস্থা এত যে ভালো সেটা নাইবা বললাম
৫.মোবাইলের নের্ট পাওয়া দুষ্কর
৬.ইতিমধ্যে শুনেছি ও দেখেছি ইকোপার্ক হয়েছে আরো হবে বলে জানতে পেরেছি যা আমাদের জন্য আনন্দের সংবাদ হতে পারো না কোন মতে!
৭.হাতির যন্ত্রণা তো আছেই
৮.এছাড়াও সচেতনের অভাব দেখেছি
৯.নেতৃত্বের বিকাশে গড়ে উঠেনি
১০.সংগঠন গুলোর সক্রিয় কার্যক্রম কম বা অনুপস্থিত
১১.স্কুল বা কলেজের অভাব রয়েছে
১২.গ্রাম ভিত্তিক সংগঠনের অভাব(থাকতে পারে বিলবোর্ড দেখি নাই)
আরো অনেক কিছু থাকতে পারে, আমার চোখে যা পরেছে তাই বলার চেষ্টা করেছি।
বেতকুড়ি..হালুয়াঘাট।
গারো ব্যাপ্টিষ্ট কনভেনশন,(জি,বি,সি)।
খ্রিষ্টীয় উদ্যোগ সমিতির ৩৬ তম সম্মেলন।
ছোটবেলা থেকেই খ্রিষ্টীয় উদ্যোগ সমিতি করে আসছি, সেটা প্রত্যক্ষ হোক কিনবা পরোক্ষ। সরাসরি (পদ)যুক্ত হতে না চাইলেও আমি সব সময় খ্রীষ্টিয় উদ্যোগ সমিতিতে থাকতে চাই,সেই ইচ্ছাটা আমার আছে।খ্রিষ্টীয় উদ্যোগ সমিতির পদ আমার কাছে বিশাল কিছু,এত বছর পরেও বড় দায়িত্ব নেয়ার মতো সাহস জমা হয়নি।তবে আমি চাই "খ্রিষ্টীয় উদ্যোগ সমিতির"জন্য কিছু করি, কিছু করে রেখে যেতে পারলে মন্দ হতো না।সেটা সার্কিট গত ভাবে হোক বা কেন্দ্রীয় গত ভাবে হোক প্রোগ্রামের খবর শুনলে বা জানলে মন আনচান করে। যেখানেই থাকি এক বার হলেও প্রোগ্রামে যাওয়ার চেষ্টা করি।যেটা সত্য আরিকি! আমি আবার সব প্রোগ্রামেরর সেশন যে করি তেমনটা না, বেশিভাগ সময় ঘুরে বেড়ায়; আর বাইরে বসে থেকেই দিন চলে যায়।যখন মনে হয় এই সেশন বাদ দেওয়া যাবে না, তখন ঠিক মতো উপস্থিত থাকি যেন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো থেকে অনুপ্রেরণা পাওয়া যায় বা নতুন কিছু শিখতে পারি।
(ঝলঝলিয়া মিশন)
এইবার...
প্রোগ্রামে ফাঁকে দুইটা মিশন ঘুরার সৌভাগ্য হয়েছে। একটা ক্যাথলিক মিশন(ঝলঝলিয়া) এবং চার্চ অব বাংলাদেশর মিশন(পানিহাটা)।দুটো মিশন এত বেশি দূর না কম করে হলে হোন্ডার দুরন্ত হবে তিরিশ মিনিট কিংবা তারও কম সময়, মোটামোটি রাস্তা ভালো।দুটো মিশনের পরিবেশ নিরিবিলি বেশ ছিমছাম, অনেক সুন্দর, লেখাপড়ার জন্য ভালো জায়গা।ঝলঝলিয়া মিশনে এখনো চারিদিকে দেওয়াল তুলা হয়নি, তবে বেশ নিরাপদ মনে হলো। মিশনের ভিতরে অনেক গাছ-গাছালীতে ভরপুর, যতদূর জেনেছি হোষ্টেলে ছেলে মেয়ের সংখ্যা কম হলেও খারাপ না,ভবিষ্যতে হয়তো আর বাড়বে।সবকিছু মিলিয়ে মিশন আমার কাছে ভালোই লেগেছে।
গীর্জাঘর অনেক বড়...
(পানিহাটা মিশন)
পানিহাটা মিশনে এই পর্যন্ত দুইবার গিয়েছি।যতবার গিয়েছি তত বারি মিশনের ভিতরে মানুষ দেখি নাই।মনে হলো মানুষের বিচরণ খুবই কম, সেখানে মিশনের ভিতরে স্কুল আছে সুন্দর গীর্জা আছে গাছ-গাছালী ভরপুর। মিশনের আরেক বৈশিষ্ট্য হলো এখানে প্রতি বছর তীর্থ হয়ে থাকে।চারিদিকে না হলেও গেটের সামনে ইটের দেওয়াল রয়েছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে আরিকি জায়গাটা এত নিরাপদ বোধ করিনি। কেমন কেন ভয় লাগে, সেটা হয়তো আমারি দুর্বলতা।আমার কাছে যেটা সবচেয়ে ভালো লেগেছে পানিহাটা মিশনের গীর্জাঘর। পাহাড়ের উপর এত সুন্দর গীর্জা এবং ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনার জন্য সুন্দর পরিবেশ।ধ্যানের জন্যও ভালো জায়গা হবে বলে, আমি মনে করি।
খ্রিষ্টীয় উদ্যোগ সমিতি নিয়ে আমার কিছু চাওয়া..
অনেক শব্দ লিখে ফেলেছি এই বার কিছু আমার পরিকল্পনার কথা শেয়ার করি বা আমি যেটা চাই।
প্রথমত আমি চাই খ্রিষ্টীয় উদ্যোগ সমিতির একটা অফিসিয়াল অফিস থাকুক।যেখানে কেন্দ্রীয় মিটিং হবে বা কাজ কর্ম হবে বা সব জায়গায় যোগাযোগ করা হবে।এমন কিছু সিদ্ধাত নেওয়া হোক যেটা বাস্তবমুখী, যেমন:-ইনকামের উৎস খুঁজে বের করা।কেন্দ্রীয়, সার্কিট বা মন্ডলীর শাখার জন্য সভাপতি এবং সম্পাদকেরর জন্য সম্মানী ভাতা ব্যবস্থা করা।যারা এস,এস,সি দিয়েছে তাদের জন্য জীবনমুখী পাঁচ কিনবা সাতদিনের প্রোগ্রাম ব্যবস্থা করা।কারন এখান থেকেই আরেকটা নতুন জীবন শুরু করে,সেজন্য কিছু দিক নির্দেশনা বা বাস্তবতার জীবনযুদ্ধে যেন সফলতা পাই,সেই জন্য প্রোগ্রাম করা উচিত।যে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসবে তাদের জন্য সার্টিফিকেট ব্যবস্থা করা।আর এমন ব্যবস্থা চাই খ্রিষ্টীয় উদ্যোগ সমিতির সার্টিফিকেট ছাড়া যেন জি,বি,সি মূল দায়িত্বে আসতে না পারে। তবেই খ্রিষ্টীয় উদ্যোগ সমিতির চাহিদা বা Demand বাড়বে।
শুক্রবারে বাড়ি থেকে বিদায় নিয়েছিলাম আসছি সোমবারে, (১৭-২৭ মে ২০১৯) মোট এগারো দিনের জন্য ভ্রমনে বেড়িয়েছিলাম।আমি আজ বড় ক্লান্ত, এখন বিশ্রামের পালা।ভ্রমনের সময় অনেক কিছু কাহিনী ঘটেছে, সেইগুলো নাইবা বললাম। কিছু কথা অব্যক্ত থাক, সব বললে আবার চাকরি থাকবে না...হহাাহাহাাহাহাহহিহহিহাহা।
আমার অবিরত ছুটে চলা থেমে থাকবে না যতদিন আমি বেঁচে আছি এই পৃথিবীতে। বিদেশের কথা বাদি দিলাম বাংলাদেশের অনেক জায়গায় যাওয়া এখনো বাকি।প্রথমত আমি গারো এলাকা সব জায়গায় যেতে চাই, যেখানে গারো জাতির অস্তিত্ব বিদ্যমান আছে ইতিহাস আছে, সবখানে আমি উপস্থিত হতে চাই।পরে বাকি আদিবাসী এলাকা যেতে চাই,তবেই আমার ছুটে চলা স্বপ্ন সার্থক হবে।
এই দীর্ঘ সময়ের ভ্রমন সার্থক হয়েছে, বিশেষ করে ধন্যবাদ দিবো তাকে, আমার কাছের বান্ধবীকে যে কিনা টাকা দিয়ে ভ্রমন পরিপূর্ণ করেছে।
পরিশেষে বলতে চাই,
'স্বপ্ন তোমাকে দেখতে হবে,
দেখবে একদিন তুমি সার্থক;
যদি তুমি সত্যিই স্বপ্নের বাস্তবতা দেখ"।
অবিরত ছুটে চলা,দীর্ঘ ভ্রমন সার্থক
কাপ্তাই লেক |
ছুটির আগেই সম্ভবত ক্যাম্পাসে থাকাকালীন সময়ে ভেবেছিলাম,আমি কিভাবে এত লম্বা ছুটির দিন পার করবো।হাতে প্রচুর সময় কোন কিছু যদি না করি তাহলে তো ছুটি'ই বৃথা । সেই জন্যই কিছু করার বাও খুঁজতাছিলাম,পরে অবশ্য ব্যাটে বলে মিলে গেল।আমার সবচেয়ে ভালোলাগার কাজ ও প্রধান শখ বা প্রিয় জিনিস হলো ভ্রমণ করা। এক দার কাছ থেকে শুনা," বইয়ের চেয়ে ভ্রমনে সবকিছু বাস্তবরূপে পড়া যায় বেশি,যেমন অভিজ্ঞতা হয়; তেমনি মনে থাকে বেশি"।সেই কথা আমার বার বার মনে পড়ে,মাঝে মাঝে নিজে নিজেই চিন্তা করি,বলি"তাই তো! দার বলা তো একদম ঠিক!মিথ্যা নই"।সত্যি বইয়ের পড়া এবং ভ্রমণ পড়া অনেক মানে বহুগুণ পার্থক্য রয়েছে।যদিওবা আমি দু'টোই পছন্দ করি কিন্তুু আমি ভ্রমণকে'ই আগে রাখব।
ছবি: মিঠুন দা |
রাঙামাটি
যে কোন কারনে হোক, এই বার রাঙামাটি যাওয়ার, আমার সৌভাগ্য হয়ে যায়।রাঙামাটি যাওয়ার আগে ঢাকায় ছিলাম তিন দিন দুই রাত,শুক্রবার গিয়াছিলাম এই কারনে যে জ্যামে যেন বসে থাকতে না হয়।সবার মতো আমারো জ্যাম খুবই বিরক্তিকর ব্যাপার,তবে সেদিন কোন জ্যাম ছিল না।একদিকে যেমন ছুটির দিন তেমনি আবার রোজার মাস,খুব অনায়াসে এবং খুব কম সময়ে ঢাকায় পৌঁছে গিয়েছিলাম।রাঙামাটি গিয়েছি এই পর্যন্ত তিন বার, তবে সবচেয়ে বেশি সুন্দর দৃশ্য বা বেশি ভালো লাগার সময় ছিল শীতকালে যখন দ্বিতীয় বারের মত গিয়েছিলাম।সকাল বেলা কাপ্তাই লেকে যখন নৌকার উপর দাঁড়িয়ে সূর্য উঠা দেখেছিলাম, চারিদিকে হালকা কুয়াশা, দূর দূরান্তে ছোট বড় মাছ ধরার ট্রলার বা নৌকা। স্বর্গের মত করে সময় ছিল, আমি ব্যক্তিগত ভাবে সেই দৃশ্য অনেক উপভোগ করেছিলাম।
কমরেড |
কমরেড ২ |
এইবার রাঙামাটি আমার জন্য ছিল অন্যতম দিন যেখানে পিসিবির কেন্দ্রীয় সম্মেলনে উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল। আমার মত নগণ্য মানুষ যে থাকতে পেরেছে,সেটা আমার মতো মানুষের ভাগ্যের ব্যাপার, ছোট বেলার স্বপ্ন দেখার ও পূরর্ণে যে সুযোগ করে দিয়েছে সেজন্যে অবশ্যই "নিপুণ ত্রিপুরা" দাদাকে আমার মন থেকে ধন্যবাদ জানাই।দাদা যদি আমাকে সুযোগ না দিতো আমার যাওয়া হতো না,দেখারো ভাগ্য হতো না।আমি রাঙামাটি থেকে এইবার অনেক কিছুই নিজের জন্য নিয়ে আসতে পেরেছি।সাথে অলিক মৃ(মামা) এবং হ্যারি হাজং(এক ব্যাচ সিনিয়র) ছিল। মামা মজা করেই বলে, "তোদের দ্বারা কিসসু হব্বে না"।অবশ্য সেটাও ঠিক তার মতো তো আর অভিজ্ঞ না পারদর্শী না যে কিছু করতে পারবো...হাহাহহা।
বড় প্রাপ্তি এই যে, যত অভিজ্ঞ মানুষের সাথে থাকবো তত কিছু না কিছু শিখা যায় সেটা হয়তো পরের বার বা পরবর্তী সময়ে কাজে লাগে।উদাহারণ হতে পারে,একটা জায়গায় পারলে বার বার যাওয়া উচিত, কেন না?একবার গেলে সবকিছু দেখতে পারবা না বুঝতে পারবা না,ভালো মতো দেখতে গেলে বুঝতে গেলে আর গভীরে যেতে হলে বেশি করে বিচরণ করা দরকার।আমি যে রাঙামাটি গেলাম সবকিছু একবারে আমি দেখতে পারিনি,একেক সময় একেক জায়গা গিয়েছি এবং দেখেছি। আবার যেতে হবে কারন এখনো দেখার অনেক কিছু বাকি, বুঝতে বাকি,সেই জন্য বেঁচে থাকলে আবার যাবো।মোট কথা, বড়দের সাথে বা অভিজ্ঞ মানুষের সাথে সঙ্গ দেওয়া মিস করা ঠিক না বা করা উচিত না।আর বেশি করে যত সভা,সেমিনার, সম্মেলন, প্রোগ্রাম করা যায় তত নিজের জন্য আমাদের জন্য ভালো। রাঙামাটি যতদিন ছিলাম খুব ভালোই ছিলাম এত আরাম আয়েস আদর আপায়ন যত্ন, দিনগুলো খারাপ যায় নাই।
রাঙামাটি থেকে শুধু আমার জন্য নিজের জন্য নতুন কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন হয়েছে ফলত যে রকম চিন্তার মধ্যে মগ্ন ছিলাম বাস্তবতা আমাকে নতুন করে ভাবনার মধ্য দিয়ে নিয়েগেছে।আমি জানি, সেখানে আমার দেওয়ার মতো কিছু ছিল না কিন্তুু নেওয়ার মতো অনেক কিছুই ছিল। যতটুকু পারি নিয়েছি।যখন তিন দিন দুই রাত ছিলাম এই সময়ে অনেক জনের সাথে দেখা হয়েছে পরিচয় হয়েছে,আমাদেরকে যারা সময় দিয়েছে সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাই।যদি বিশেষ করে ধন্যবাদ জানাই,সে হচ্ছে দিদিকে (নাম বলবনা)যে কিনা আমাদের জন্য প্রচুর সময় ব্যয় করেছে কিন্তুু তার পরেও সময় দিতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করেছে। আমি দিদিকে বলেছি, "ধন্যবাদ দিদি, আমাদের কে সময় দেওয়ার জন্য"।এই যে দুঃখ প্রকাশ আমি এত কিছু আশা করিনি ফলত সেই দিদিকে আমি স্মরণে রাখব অনেক দিন।
মনের মধ্যে ইচ্ছা ছিল আরো কিছু দিন থাকি আরো একটু সময় নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।কাপ্তাই বাঁধে যেতে খুব আপসোস লাগে।যতবার গিয়েছি তত বার মনে হয়েছিল বা বলেছি এইবার কাপ্তাই বাঁধে যাবো কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস যাওয়া হয়ে উঠেনি। বেঁচে থাকলে অবশ্যই যাবো।
আশা রাখি,এই কাপ্তাই নিয়ে পরবর্তীতে কিছু লিখব।
রাঙামাটি শহর নিজের শহর মনে হয়। রাঙামাটি শহর আদিবাসী শহর,রাঙামাটি শহর সংগ্রামের শহর।
আদিবাসী সংগ্রাম আন্দোলন দীর্ঘজীবী হোক।
দিগলাকোনা
রাঙামাটি থেকে এসেই রাতের বেলা রওনা দিলাম দিগলাকোনা নামক জায়গায়,তবে যে সময় পৌঁছানোর কথা ছিল দেরি করে ঢাকায় পৌঁছেছি। জ্যামের মধ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকা যে বিরক্তিকর, কেমনে বুঝাই!দিগলাকোনা অপরিচিত নাম, যেখানে আমার কোন দিন যাওয়া হয় নাই।দিগলাকোনা যখন পৌঁছায় তখন বাজে বোধয় চারটা কিনবা তারও বেশি।কোথাও ঘুমানোর বাও খুঁজে না পেয়ে ঘুমানোর সিদ্ধাত নিয়ে ফেলি, গাড়িতেই ঘুমাবো।কিন্তুু চোখের আর ঘুম আসে না ঘুম না আসার আরেকটা কারন ছিল আমাদের সাথে একছোট বোন ছিল(আমার চাইতে বড়,কিন্তুু দেখলে মনে হবে না যে বড়,সেই জন্য ছোট বোন ডাকি আরিকি!...হাহাহহাহাহাহাহাা)। এত বকবক জ্বালা যন্ত্রণা মানে প্যারা দেয় ঘুমানো কি যায়?শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে সকাল বেলাই যখন পাখি কিচিরমিচিরে চারদিক মুখর তখনি ঘুমানো বাদ দিয়ে ঘুরতে বের হলাম।ঘুরতে ঘুরতে ঝুম চাষের স্বাদ পেলাম.....
ঝুম শুধু যে ধান চাষ হয় তেমনটা না আরো অনেক কিছুই চাষ হতে পারে, চাষ করেও।এত সুন্দর জায়গা মন নাড়া দেয়, আহা!কি শান্তি আকাশে বাতাসে।
যখন দেখলাম মাথার অবস্থা ভালো না একটু হলেও ঘুম প্রয়োজন কাউকে না বলে চুপ করে গাড়িতে গিয়ে হালকা ঘুমিয়ে নিলাম।যা শালা,একটু ঘুমানোর পর মনমেজাজ তরতাজা হয়েগেল,মনে শান্তি বয়ে যায়, সারাদিন ঘুরলেও এত প্যারা হবে না।ঘুমানোর আরো অনেক ইচ্ছা ছিল কিন্তুু ঘুমাতে দিলে সে ঘুমাবো!এত প্যারা কি সহ্য হয়?অবশ্য হতেই হবে একটা জায়গায় আসছি না..ঘুমানো কি এত যায়? তাই ঘুম বাদ দিলাম।হাহাহহাহহাহাহ।
প্রোগ্রাম শেষ করে পাহাড়ি রাস্তা বেয়ে বন্ধুর বাড়িতে উপস্থিত হলাম।বন্ধুর সাথে প্রথম পরিচয় কলেজে থাকাকালীন, এক সাথে আমরা কলেজ পড়তাম।প্রোগ্রামে না আসলে তার বাড়ি দেখা হতো না এত সুন্দর জায়গায় যে তার, বাড়ি জানা ছিল না।দিগলাকোনা মিশনের পথ চলা বেশি দিন হয়নি।তাই হয়তো এখনো সেই ভাবে মিশন গুছানো হয়নি।দেখলাম আস্তে আস্তে মিশন সুন্দর হচ্ছে পরিপাটি হচ্ছে। আমাদের যাওয়ার একদিন কী দুই দিন আগে জুনিয়র হাইস্কুল চালু হয়েছে, যা প্রশংসার দাবিদার। কারন পড়াশুনা করতে গেলে অনেক দূর পায়ে হেঁটে যেতে হতো যা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার।আর এখন মিশন খুব কাছেই,পড়াশুনো আগ্রহ বেড়ে যাবে, তেমন কষ্টকর হবে না।আশা রাখি,শিক্ষার হার যেন বৃদ্ধি পাই, উচ্চ শিক্ষিত যেন বাড়ে।যতদিন পর্যন্ত সুশিক্ষিত হতো পারবো না তত দিন পর্যন্ত আমাদের মুক্তি নাই।
যত দূর জেনেছি এখানে মান্দি(গারো)গ্রাম আছে মোট সাতটি কিন্তুু কত জন গারো আছে কেউ আনুমানিক হিসাব দিতে পারেনি।এছাড়াও দেখলাম একটি ক্যাথলিক গীর্জাঘর এবং দি বালুঝুররী ক্যাথলিক সোসাইটি আছে।
পাহাড় ঘুরতে ঘুরতে ভেবেছিলাম,"গারো কোন জায়গায় নাই বা ছিল না?আনাচে কানাচে সব জায়গায় গারো পাওয়া যায়,যদিওবা এখন অনেক জায়গার অস্তিত্বহীন শুধু মাত্র রয়েছে ইতিহাসে পাতায়"।
জামালপুর জেলার বকশীগজ্ঞ উপজেলার যে মান্দি গ্রামগুলো আছে এখানে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখেছি।তারা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।যদিওবা আমি সবকিছু এত সম্পূর্ণ জানি না,আমার চোখে যা পরেছে যা মনে হয়েছে তাই বলছি।
১.প্রথমত বলবো এখানে শিক্ষার আলো ঠিকমতো জ্বলে উঠেনি
২.এখন পর্যন্ত কারেন্টের আওতায় আসেনি
৩.বিশুদ্ধ পানির অভাব ডিজিটাল যুগে এসেও কুয়ার পানি খেতে হয়,
৪.যোগাযোগ ব্যবস্থা এত যে ভালো সেটা নাইবা বললাম
৫.মোবাইলের নের্ট পাওয়া দুষ্কর
৬.ইতিমধ্যে শুনেছি ও দেখেছি ইকোপার্ক হয়েছে আরো হবে বলে জানতে পেরেছি যা আমাদের জন্য আনন্দের সংবাদ হতে পারো না কোন মতে!
৭.হাতির যন্ত্রণা তো আছেই
৮.এছাড়াও সচেতনের অভাব দেখেছি
৯.নেতৃত্বের বিকাশে গড়ে উঠেনি
১০.সংগঠন গুলোর সক্রিয় কার্যক্রম কম বা অনুপস্থিত
১১.স্কুল বা কলেজের অভাব রয়েছে
১২.গ্রাম ভিত্তিক সংগঠনের অভাব(থাকতে পারে বিলবোর্ড দেখি নাই)
আরো অনেক কিছু থাকতে পারে, আমার চোখে যা পরেছে তাই বলার চেষ্টা করেছি।
বেতকুড়ি..হালুয়াঘাট।
গারো ব্যাপ্টিষ্ট কনভেনশন,(জি,বি,সি)।
খ্রিষ্টীয় উদ্যোগ সমিতির ৩৬ তম সম্মেলন।
ছোটবেলা থেকেই খ্রিষ্টীয় উদ্যোগ সমিতি করে আসছি, সেটা প্রত্যক্ষ হোক কিনবা পরোক্ষ। সরাসরি (পদ)যুক্ত হতে না চাইলেও আমি সব সময় খ্রীষ্টিয় উদ্যোগ সমিতিতে থাকতে চাই,সেই ইচ্ছাটা আমার আছে।খ্রিষ্টীয় উদ্যোগ সমিতির পদ আমার কাছে বিশাল কিছু,এত বছর পরেও বড় দায়িত্ব নেয়ার মতো সাহস জমা হয়নি।তবে আমি চাই "খ্রিষ্টীয় উদ্যোগ সমিতির"জন্য কিছু করি, কিছু করে রেখে যেতে পারলে মন্দ হতো না।সেটা সার্কিট গত ভাবে হোক বা কেন্দ্রীয় গত ভাবে হোক প্রোগ্রামের খবর শুনলে বা জানলে মন আনচান করে। যেখানেই থাকি এক বার হলেও প্রোগ্রামে যাওয়ার চেষ্টা করি।যেটা সত্য আরিকি! আমি আবার সব প্রোগ্রামেরর সেশন যে করি তেমনটা না, বেশিভাগ সময় ঘুরে বেড়ায়; আর বাইরে বসে থেকেই দিন চলে যায়।যখন মনে হয় এই সেশন বাদ দেওয়া যাবে না, তখন ঠিক মতো উপস্থিত থাকি যেন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো থেকে অনুপ্রেরণা পাওয়া যায় বা নতুন কিছু শিখতে পারি।
(ঝলঝলিয়া মিশন)
এইবার...
প্রোগ্রামে ফাঁকে দুইটা মিশন ঘুরার সৌভাগ্য হয়েছে। একটা ক্যাথলিক মিশন(ঝলঝলিয়া) এবং চার্চ অব বাংলাদেশর মিশন(পানিহাটা)।দুটো মিশন এত বেশি দূর না কম করে হলে হোন্ডার দুরন্ত হবে তিরিশ মিনিট কিংবা তারও কম সময়, মোটামোটি রাস্তা ভালো।দুটো মিশনের পরিবেশ নিরিবিলি বেশ ছিমছাম, অনেক সুন্দর, লেখাপড়ার জন্য ভালো জায়গা।ঝলঝলিয়া মিশনে এখনো চারিদিকে দেওয়াল তুলা হয়নি, তবে বেশ নিরাপদ মনে হলো। মিশনের ভিতরে অনেক গাছ-গাছালীতে ভরপুর, যতদূর জেনেছি হোষ্টেলে ছেলে মেয়ের সংখ্যা কম হলেও খারাপ না,ভবিষ্যতে হয়তো আর বাড়বে।সবকিছু মিলিয়ে মিশন আমার কাছে ভালোই লেগেছে।
গীর্জাঘর অনেক বড়...
(পানিহাটা মিশন)
পানিহাটা মিশনে এই পর্যন্ত দুইবার গিয়েছি।যতবার গিয়েছি তত বারি মিশনের ভিতরে মানুষ দেখি নাই।মনে হলো মানুষের বিচরণ খুবই কম, সেখানে মিশনের ভিতরে স্কুল আছে সুন্দর গীর্জা আছে গাছ-গাছালী ভরপুর। মিশনের আরেক বৈশিষ্ট্য হলো এখানে প্রতি বছর তীর্থ হয়ে থাকে।চারিদিকে না হলেও গেটের সামনে ইটের দেওয়াল রয়েছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে আরিকি জায়গাটা এত নিরাপদ বোধ করিনি। কেমন কেন ভয় লাগে, সেটা হয়তো আমারি দুর্বলতা।আমার কাছে যেটা সবচেয়ে ভালো লেগেছে পানিহাটা মিশনের গীর্জাঘর। পাহাড়ের উপর এত সুন্দর গীর্জা এবং ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনার জন্য সুন্দর পরিবেশ।ধ্যানের জন্যও ভালো জায়গা হবে বলে, আমি মনে করি।
খ্রিষ্টীয় উদ্যোগ সমিতি নিয়ে আমার কিছু চাওয়া..
অনেক শব্দ লিখে ফেলেছি এই বার কিছু আমার পরিকল্পনার কথা শেয়ার করি বা আমি যেটা চাই।
প্রথমত আমি চাই খ্রিষ্টীয় উদ্যোগ সমিতির একটা অফিসিয়াল অফিস থাকুক।যেখানে কেন্দ্রীয় মিটিং হবে বা কাজ কর্ম হবে বা সব জায়গায় যোগাযোগ করা হবে।এমন কিছু সিদ্ধাত নেওয়া হোক যেটা বাস্তবমুখী, যেমন:-ইনকামের উৎস খুঁজে বের করা।কেন্দ্রীয়, সার্কিট বা মন্ডলীর শাখার জন্য সভাপতি এবং সম্পাদকেরর জন্য সম্মানী ভাতা ব্যবস্থা করা।যারা এস,এস,সি দিয়েছে তাদের জন্য জীবনমুখী পাঁচ কিনবা সাতদিনের প্রোগ্রাম ব্যবস্থা করা।কারন এখান থেকেই আরেকটা নতুন জীবন শুরু করে,সেজন্য কিছু দিক নির্দেশনা বা বাস্তবতার জীবনযুদ্ধে যেন সফলতা পাই,সেই জন্য প্রোগ্রাম করা উচিত।যে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসবে তাদের জন্য সার্টিফিকেট ব্যবস্থা করা।আর এমন ব্যবস্থা চাই খ্রিষ্টীয় উদ্যোগ সমিতির সার্টিফিকেট ছাড়া যেন জি,বি,সি মূল দায়িত্বে আসতে না পারে। তবেই খ্রিষ্টীয় উদ্যোগ সমিতির চাহিদা বা Demand বাড়বে।
শুক্রবারে বাড়ি থেকে বিদায় নিয়েছিলাম আসছি সোমবারে, (১৭-২৭ মে ২০১৯) মোট এগারো দিনের জন্য ভ্রমনে বেড়িয়েছিলাম।আমি আজ বড় ক্লান্ত, এখন বিশ্রামের পালা।ভ্রমনের সময় অনেক কিছু কাহিনী ঘটেছে, সেইগুলো নাইবা বললাম। কিছু কথা অব্যক্ত থাক, সব বললে আবার চাকরি থাকবে না...হহাাহাহাাহাহাহহিহহিহাহা।
আমার অবিরত ছুটে চলা থেমে থাকবে না যতদিন আমি বেঁচে আছি এই পৃথিবীতে। বিদেশের কথা বাদি দিলাম বাংলাদেশের অনেক জায়গায় যাওয়া এখনো বাকি।প্রথমত আমি গারো এলাকা সব জায়গায় যেতে চাই, যেখানে গারো জাতির অস্তিত্ব বিদ্যমান আছে ইতিহাস আছে, সবখানে আমি উপস্থিত হতে চাই।পরে বাকি আদিবাসী এলাকা যেতে চাই,তবেই আমার ছুটে চলা স্বপ্ন সার্থক হবে।
এই দীর্ঘ সময়ের ভ্রমন সার্থক হয়েছে, বিশেষ করে ধন্যবাদ দিবো তাকে, আমার কাছের বান্ধবীকে যে কিনা টাকা দিয়ে ভ্রমন পরিপূর্ণ করেছে।
জাডিল |
পরিশেষে বলতে চাই,
'স্বপ্ন তোমাকে দেখতে হবে,
দেখবে একদিন তুমি সার্থক;
যদি তুমি সত্যিই স্বপ্নের বাস্তবতা দেখ"।
No comments