মাও সে-তুঙ


Jadil Mri








মাও সে-তুঙ
রাহুল সাংকৃত্যায়ন

যতটুকু বই পড়া উচিত তার সিকি অংশও পড়া হয় না।ভাবলাম, এখন যতগুলো বই পড়বো সেটা নিয়ে নিজের মতো করে পর্যালোচনা করবো।আজকে যে বইটি শেষ করেছি, সেটা হলো "মাও সে-তুঙ "কে নিয়ে লেখা, লেখক "রাহুল সাকৃত্যায়ন"।রাহুল সাংকৃত্যায়ন উঁচু মানের লেখক সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। উনার যে কোন বই চোখ বন্ধ করে কিনলেও লাভের হিসাব একশ তে একশ।উনার অনেক গুলো বই পড়েছি, সর্বশেষ পড়ে শেষ করলাম "মাও সে-তুঙ "।বইটি ভূমিকা এবং সম্পাদনা করেছেন "যতীন সরকার"।অসাধারণ একটা বই,বই পড়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত মনের ভিতর অসহ্য যন্ত্রণা বোধ করবে।
"কমিউনিজম" এর প্রতি আমার বরাবরি দুর্বলতা কাজ করে।কেন কাজ করে হয়তো আমি কিছু কিছু বলতে পারবো।যাই হোক,কমিউনিজম বা সমাজতন্ত্র বা সাম্যবাদ যাই বলুক না কেনো,যদি এই রকম বই হাতে পাই সাথে সাথে বই খুলে পড়ি।অন্য বই হাতে আসলে পড়ি তবে মনের ভিতর শিরাগত সাম্যবাদে বইকে বেশি গুরুত্বসম্পন্ন মনে করে।

"মাও সে-তুঙ " সম্পর্কে মোটামোটি বিস্তারিত ভাবে জানতে হলে এই বই পড়া আবশ্যক।ছোটবেলা থেকে বেড়ে উঠা এবং চীনকে শক্রর হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে নব যুগের সুচনা সংগ্রামের  দীর্ঘ ইতিহাস মোটামোটি উনার সম্পর্কে এবং চীন সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবেন।এছাড়াও চীন সম্পর্কে একটা ধারণা হয়ে যাবে যদি ম্যাপ নিয়ে পড়তে বসেন,সেটা হবে বেস্ট।


বর্তমান "চীন "সম্পর্কে তো আমরা কম বেশি সবাই জানি।অন্যন্য দেশের মতো, বিশ্বের পরাশক্তি প্রথম সারিতে আছে চীন।চীনের এত সমৃদ্ধি এত উন্নয়ন একবারে কিন্তু হয়নি।রয়েছে সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাস।
চীনে মূলত পাঁচটি বৃহৎ জাতির বসবাস- চীনা(হান),মাজ্ঞু(সান),মঙ্গোল(মঙ্গ),তুর্কী(হুই) এবং তিব্বতী।চীন গণপ্রজাতন্ত্রের আয়তন পঁচানব্বই লক্ষ ছিয়ানব্বই হাজার বর্গকিলোমিটার, যা সারা ইউরোপের আয়তনের সমান।মাও সে-তুঙ সাধারণ কৃষক ঘরে জম্ম নিয়েছিলন ১৮৯৩ সালে।পড়াশুনার জন্য বিভিন্ন জায়গায় গেছেন এবং নিজের পড়ার আগ্রহের কারনে অনেকদূর পড়াশুনা করেছেন।পড়াশুনার সাথে সাথে উনার নেতৃত্বের বিকাশ লাভ করতে থাকে, বিচক্ষণতা এবং দূরদর্শিতা বৃদ্ধি পেতে থাকে।বন্ধু বান্ধব শিক্ষক সবার কাছে জনপ্রিয় এক নাম ছিল মাও সে-তুঙ। তখকার সময়ে" আফিমে" ছেয়ে গিয়েছিল দেশ। ব্যবসায়ীরা আফিম সরবরাহ করে ধনী থেকে আরো ধনী হয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় আফিম নিয়েও যুদ্ধ বাধে সেটা কে আফিম যুদ্ধ বলা হয়।চীনের সাধারণ জনগণ খুব কষ্টে জীবন যাপন করতো।জমিদারগণের অত্যাচার, সামন্তপ্রথা, ভূমিহীন কৃষক,বিশৃঙ্খলা,দুনীতি ,  এই রকম এক  অরাজক অবস্থা।সেই অরাজক অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে ১৯২১ সালে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি জম্ম লাভ করে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত এই দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস এই বই থেকে আমরা জানবো।
জনগণের শক্রর হাত থেকে যোগ্য ও দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে বৃহৎ চীনা গণপ্রজাতন্ত্রী সৃষ্টি সম্পর্কে আমরা জানতে পারবো।যদি কেউ মাো সে-তুঙ সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকে বা সাম্যবাদ সমাজ কি রকম হতে পারে একটা ধারনা পেয়ে যাবেন।

সংগ্রাম এবং বিপ্লব কোনটাই সহজ কাজ নয়,চাইলেই বিপ্লব বা সংগ্রাম করা যায় না।প্রস্তুুতি লাগে উর্বর পরিবেশে লাগে,ধৈর্যচ্যুত হওয়া যাবে না।যে কোন পরিস্তিতি মোকাবেলায় সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।আমি যে অনুপ্রেরণা পাই,তা হলো সারা বিশ্বে মুক্তিগামী মানুষ একদিন একদিন বিজয় লাভ করবে, চীন জনগণের মতো।
বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।

No comments

Theme images by saw. Powered by Blogger.