ভ্রমণের অভিজ্ঞতা; সুনামগঞ্জ ভ্রমণ-২।।Blog-4।।
ভ্রমণের অভিজ্ঞতা; সুনামগঞ্জ ভ্রমণ-২।।Blog-4।।
জাডিল মৃ(Jadil Mri)
তরুণ লেখক এবং ব্লগার
আ'চিক মান্দি (গারো) হোক কিংবা আদিবাসী গ্রাম, সব জায়গাতে'ই ঘুরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।বলতে পারেন, আমি ভ্রমণ পিপাসু এক মানুষ।কিছু দিন পরপর ভ্রমণে না গেলে শরীর মনে জংগ ধরে যায়।সব সময় মনে হয়, কোথায় যেতে পারি, কোথায়?পারতপক্ষে,যে কোন জায়গা হোক ভ্রমণ মিস করি না।এই বারের ভ্রমণটি ছিল সুনামগঞ্জ জেলার- সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা এবং তাহিরপুর উপজেলা।
ভ্রমণের আগেই বলা হয়েছিল, সুনামগঞ্জে যে কোন সময় বৃষ্টি হতে পারে।তাই ছাতা এবং হালকা শীতের বস্ত্র যেন নিই।সত্যি সত্যিই সুনামগঞ্জে পৌঁছানোর আগেই বৃষ্টি শুরু হলো।গাড়ি থেকে নামতে'ই হালকা বৃষ্টিতে ভিজে গেলাম।বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব নয় বিধায়, একটি রেস্টুরেন্ট'তে ঢুকে পড়লাম।সাথে সাথে সবাই ঢুকে পড়লো, যেন সকালের নাস্তা সেরে নিতে পারি।নাস্তা করা শেষ।এই বারের গন্তব্য, "কাইতকোনা হাজং গ্রামে"।সুনামগঞ্জ সদর থেকে কাইতকোনা গ্রাম পর্যন্ত সিএনজির সামনে বসে গিয়েছি।গ্রামে পৌঁছাতে চল্লিশ থেকে এক ঘন্টা লাগবে। এই দিকে টিপটিপ বৃষ্টি,কোন মতে নিজেকে বৃষ্টি থেকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করলাম।যখন, কাইতকোনা গ্রামে পৌঁছালাম তখন দেখি আমি অর্ধেক ভিজেগেছি।আমার প্যান্ট, টি-শার্ট তো বটেই ব্যাগ সহ ভিজেগেছে।এত যে রাগ হয়েছিল,মনে মনে ঈশ্বর কে বলেই ফেললাম, ব্যাগ ভেজানোর কি দরকার ছিল?
প্রাইমারি স্কুল ঘরের বারান্দায় কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম।কেন না তখন পর্যন্ত আমাদের কেউ স্বাগতম জানাতে আসেনি।কিছুক্ষণ পর বাদল হাজং(দাদা) এসে উপস্থিত।তার পর আসলো তমাল হাজং(দাদা)।তাদের আসাতে মনে এক ধরনের শান্তি পেলাম, যাক শেষ পর্যন্ত আমরা হাজং গ্রামে আছি।তখনো বৃষ্টি টিপটিপ করে পড়ছে।মনে মনে ভাবছিলাম, বৃষ্টি যদি হয় তবে মুষল ধারে পড়ুক, না পড়লে একে বারে বন্ধ হয়ে যাক।টিপটিপ বৃষ্টির কারনে স্বাভাবিক কাজ কর্ম করা যায় না,অসুবিধাই হয়।
ভেজা ব্যাগ যথাস্থানে রেখে,ভেজা প্যান্ট টি-শার্ট পড়েই, বেড়িয়ে পড়ি রনিত হাজং(দাদা) এর বাড়ির খোঁজে।তমাল হাজং(দাদা) কে বললাম রনিত দার বাড়ি যাবো, নিয়ে চলো।রনিত দার বাড়িতে গেলাম, দাদা কে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুললাম। জানা গেল,সবেমাত্র ঘুমাতে গিয়েছিল। আমাদের কে দেখে কি আর ঘুম হয়?রনিত দা আশ্চর্য্য হয়ে গেল, অবশ্য আমরাই দাকে সারপ্রাইজ দিলাম।কারন দাদা জানতো না বা ভাবতেই পারেনি, আমরা তার গ্রামে কোনদিন যাবো বা পৌঁছাবো।
দাদা, ঘুমের ঘোরে বিশ্বাস করতে পারছিল না আমরা তার বাড়ির সামনে, তার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের কে দেখে দাদা এতটাই আশ্চর্য্য হলো,আমার মনে হলো, অনেক দিন হলো দাদা সারপ্রাইজ হয়নি।এক কথাই দাদা জাস্ট বোকা হয়ে গিয়েছিল।কারন আমরা এতদূর যাবো সেটা কল্পনায় করেনি।যাক সে সব কথা।পরিবারে লোকজনের সাথে পরিচিয় হলাম, চা নাস্তা খেলাম তারপর বেড়িয়ে পড়লাম,একটি আ'চিক মান্দি পরিবারের খোঁজে।
কাইতকোনা থেকে চাঁর পাঁচ মিনিট হাঁটতে হবে রাজাপাড়া গ্রামে যেতে।সেখানেই একটি আ'চিক মান্দি পরিবার বসবাস করে।
(চলবে....)
(মঙ্গলবার সকালে,৭-১০-২০১৯)
No comments