ভ্রমণের শেষ দিন ,সুনামগঞ্জ ভ্রমণ-৬।। Blog-8।।
ভ্রমণের শেষ দিন ,সুনামগঞ্জ ভ্রমণ-৬।। Blog-8।।
জাডিল মৃ(Jadil Mri)
তরুণ লেখক এবং ব্লগার
তরুণ লেখক এবং ব্লগার
রাজার বাড়ি |
ভ্রমণের শেষ দিনটি ছিল শুক্রবার। সকালের নাস্তা খেয়ে রওনা দিলাম টেকেরঘাটের পাশে অবস্থিত শিমুল বাগানের দিকে।তিন দিন বিশাল খাটুনি'র পর যখন আবার পায়ে হেঁটে যেতে হবে অনেকদূর, তখন কেমন লাগবে!নিশ্চিয় মন্দ হবে না? যখন শিমুল বাগানে পৌঁছালাম দেখলাম সারি সারি শিমুল গাছ এবং গাছের মাঝখানে মাঝখানে লেবুর গাছ।জায়গাটি বেশ পরিষ্কার, শুয়ে থাকা যায়।তবে শিমুল বাগানে ঢুকতে ২০ টাকা করে প্রতিজনের টিকিট।এইটা মেনে নেওয়া যায় না।আমাদের লিডার পরে কি ভাবে যে মেনেজ করেছে আমি জানি না।
শিমুল বাগান থেকে মেঘালয় রাজ্য অনেক সুন্দর ভাবে দেখা যায়, নিচের ছবি দেখেই আপনারা বুঝতে পারছেন।
কমরেড |
কিছুক্ষণ শিমুল বাগানে সময় কাটিয়ে পরবর্তীতে চলে গেলাম বারেকা টিলায়, যেখানে গারো আদিবাসীরা বসবাস করে।গ্রামের আনাচে কানাচে ঘুরতে ঘুরতে রোমান ক্যাথলিকদের গীর্জাঘর দেখতে পেলাম।যা নিচের ছবিটি দেখতে পাচ্ছেন।
চার্চ |
তারপর সরাসরি চলে গেলাম খাসি রাজার বাড়ি,রাজাই গ্রামে।
প্রধান ফটক |
রাজাই গ্রামেই যে খাসিয়া রাজার বাড়ি, আগে জানা ছিল না।রাজার সাথে সাক্ষাৎ হয়নি, তবে উনার সংগ্রাম আন্দোলনের কথা উনার পুত্রের কাছ থেকে শুনেছি।আমরা সবাই রাজার বাড়িতে দুপুর বেলার খাবার খেয়েছিলাম।এত জনের জন্য খাবার ব্যবস্থা করা নিশ্চিয় সহজ কাজ নয়। আমি যেহেতু সরাসরি ধন্যবাদ জানাতে পারিনি।সেই জন্য লেখার মাধ্যমে উনাকে অসংখ্যবার ধন্যবাদ জানাই।খাবারের পরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিই। তারপর, আমরা এলাকার কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে মতবিনিময় এবং আদিবাসীদের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বলি।আমাদের মতবিনিময় এবং সংক্ষিপ্ত আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় কিছুটা হলে উঠে এসেছিল।
তারপর ছোট করে সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান হয়।যা কিছু ভিডিও ক্লিপ দেখতে পাচ্ছেন।
মানে শেষ দিনের চমক'টি ছিল আরো বিশাল । কেন না সবকিছুর পর পরবর্তীতে চু খাওয়ার পর্ব চলে,মোটামোটি সবাই তখন মাতাল। শেষ সময়ে এসে মনে হলো আরেকটা দিন থেকে যায়।আমদের লিডার কথা দিয়েছিল,যদি আরেকটা দিন থাকতে চাই,তাহলে আরেকদিন থাকবে।কেন যে মাত্র আরো একটা দিন থাকতে দিলো না, আমার জানা নেই।শেষদিনে মনে হচ্ছিল,আমাদের সবার সম্পর্কগুলো কেমন যেন মজবুত হচ্ছে,জনম জনম ধরে আমাদের পরিচিয়।
যেতে হবে নিজেদের গন্তব্য স্থানে,তাই রাতে রওনা দিলাম সুনামগঞ্জের দিকে।মাঝপথে ট্যেকেরঘাট পাড় হতে হয়।যখন ঘাট পাড় হবো, তখনি আমাদের কে বিদায় জানাতে কতিপয় গ্রামের মানুষ জন এসেছিল।উনারা আমাদের কে আন্তরিকতার সাথে বিদায় দিলেন,আমরাও হাত নেড়ে বিদায় জানালাম।ট্রলারে এক কোণে বসে যখন চারপাশের দৃশ্য দেখচ্ছিলাম,অন্য রকম এক অনুভূতি। দিনটি ছিল জোৎস্না রাত, আমি ট্রলারে বসে পা পানিতে দিয়ে, শেষ মুহূর্তে সুনামগঞ্জের পানির ছোঁয়া নিচ্ছিলাম।আসলে সত্যি কথা কি এইটা তো মেঘালয় রাজ্যের পানি আবেগের জায়গাটা আলাদা।
ট্রলারে বসে,পা পানিতে, জোৎস্না রাত,চারিদিকের সবকিছু দেখা যায়,তখন কেমন লাগবে?
চাঁর দিনের ভ্রমণটি ভালো মন্দ মিলিয়েই ভালো হয়েছে।জানি, এমন দিনটি কোনদিন আসবে না।তাই স্মৃতির পাতায় রেখে দিলাম মনের কিছু কথা, যেন পরবর্তী সময়ে স্মৃতিচারণ করতে পারি।
সবার সাথে সরাসরি কথা না বললেও, ছবি তুলতে না পারলেও,সবাইকে আমার মনে থাকবে।সবাইকে ধন্যবাদ জানাই,এমন একটি মুহূর্ত উপহার দেওয়ার জন্য।যদি সম্ভব হয়, বেঁচে থাকলে হয়তো আবার দেখা হয়ে যেতে পারে।দেখলে যেন হাই হ্যালো পর্যন্ত না থাকে, আমাদের মাঝে সম্পর্কগুলো মজবুত থাকে,এইটায় আমার প্রার্থনা।
সবার সাথে সরাসরি কথা না বললেও, ছবি তুলতে না পারলেও,সবাইকে আমার মনে থাকবে।সবাইকে ধন্যবাদ জানাই,এমন একটি মুহূর্ত উপহার দেওয়ার জন্য।যদি সম্ভব হয়, বেঁচে থাকলে হয়তো আবার দেখা হয়ে যেতে পারে।দেখলে যেন হাই হ্যালো পর্যন্ত না থাকে, আমাদের মাঝে সম্পর্কগুলো মজবুত থাকে,এইটায় আমার প্রার্থনা।
লিডার পাহাড় দেখে |
সর্বশেষে যাকে ধন্যবাদ না দিলেই নয়,অলিক মৃ(সাংমা)।যিনি ভ্রমণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভ্রমণটির যাবতীয় দেখাশুনা আমাদের সুযোগ সুবিধা দেখেছেন।এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তিনি সুন্দর করে মেনেজ করে নিয়েছেন।আমরা অবশ্যই অলিক মৃ(সাংমা) কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো।
আমার সফর সঙ্গী সবাই ভালো থাকবেন,সুষ্ঠু থাকবেন।দেখা হলে শুনতে চাই, জাডিল বেঁচে আছো?জীবনের কিছু প্রাপ্তি আপনাদের কাছ থেকেই পেয়েছি।
পৃথিবী গোল দেখা হয়ে যেতেও পারে আপনাদের সাথে, আবার!!
No comments