কবি মিঠুন রাকসাম Part-2

Ja'dil Mri



বনানী ওয়ানগালা-২০১৮



কবি মিঠুন দার অসাধারণ আরো কিছু কবিতা..





                         ১১
        মুখ না ধুয়ে লেখা কবিতা-১

ঘুমের ঘোরেই বুকটা ঢক্ করে ওঠে
ঘুম থেকে স্বপ্ন থেকেই ব্যাথা নিয়ে আসি
সারাটা সকাল ঘিরে থাকে একটি মুখ
সারাটা সকাল ঘিরে থাকে একটি প্রেম
স্বপ্নে যাকে হারিয়ে খুঁজি
তুমুল ঝগড়ার পর গুলি করি
যাকে ছুঁতে গিয়ে অন্যকে ছুঁই
মানুষটি,ভালোবাসার মানুষটি
সারা সকাল ঘূর্ণি তুলে
একটি ঘোর দ্রুত ছড়ায় স্বপ্নের লালা...
ঘুম থেকে উঠতেই বুকটা ঢক্ করে ওঠে
ছড়ানো জালে
হাহাকার কাম আর ক্ষুধা
তীরের মতো বিঁধে
বাসী হ্নদয়ের চারপাশে।
বাসী মুখে কেউ খেয়েছে চুমু?
বাসী হ্নদয়ে সঙ্গম?
ঘুম থেকে উঠতেই বুকটা ঢক্ করে উঠে
তখন মুখ না ধুয়ে কবিতা লিখা ছাড়া
কিছুই করতে পারি না।
                         

                          ১২
          মুখ না ধুয়ে লেখা কবিতা-২


এ কবিতা মুখ না ধুয়ে লিখা
যখন স্বপ্ন করছে যায় যায়
স্বপ্নের পাহাড়ে পাহাড়ে
                      ডালে ডালে
উড়তে গিয়ে পড়ে যাচ্ছিলাম
শুধু মন্ত্র জানি বলে
                   আবার উঠে যাচ্ছি
ধরে ফেলছি পাহাড়ের চূড়া
গাছের ডালে,পাতার উপর হেঁটে বেড়াচ্ছি।
এ কবিতা মুখ না ধুয়ে লিখা
ঘুমের ভাব আছে স্বপ্ন আছে
দাঁতের সাথে মাড়ি কিংবা ঠোঁটের একাত্নতা আছে।
এ কবিতা মুখ না ধুয়ে লিখা
ওষুধ ওষুধ ভাব আছে
যেমন মুখ না ধুয়া থুথুর দাম আছে
প্রতিটি সকালে মালিশ দেয়
                        মাজার-পিঠে
হাতের কজিতে-গ্রাম্য কবিরাজ
মুখ না ধুয়ে লেখা কবিতা
স্বপ্নের আকুতি থেকে নিজেকে বাঁচার
মন ভালো করে দেয়!
                         

                  ১৩
      আমি সহস্র পোকা ধরি


আমি সহস্র পোকা ধরি
                মারিও সহস্র
লাফিয়েও যায় সহস্র
আমি সহস্র পোকা ধরি।
গোপনে ঘুমায় বুকে
লাল বাতি জ্বলে উঠলে
            লাফিয়ে পড়ে
সারা দেহে ছড়িয়ে যায়
তখন আমি অন্ধ!
আমি সহস্র পোকা ধরি
           সহস্র পোকা মারি
তবু দুধ থেকে ডিম থেকে
আপেল কমলা থেকে
সহস্র পোকা উঠে আসে
আমি সহস্র পোকা ধরি।
                         

                      ১৪
                 যমজ সতীন।


চাঁদকে নিয়ে কত ভাবনা
জুলেখার হাতে গোল আয়না
রোদে দাঁড়ালে চাঁদের মত জ্বলে
গোল টিপ
সেও চাঁদের মত।
চাঁদের দিকে কতক্ষণ
চোখ রাখা যায়?
মিনিটে মিনিটে মেঘেরা করে
              দলীয় নৃত্য
লেজওয়ালা মেঘ
               লাফিয়ে
                       লাফিয়ে চলে...
যখন চাঁদ ওঠে
মেঘ এসে ভেংচি দিয়ে যায়
যেন চাঁদ আর মেঘ যমজ সতীন।
                                  

                      ১৪

             প্রেমের কবিতা-১



যাকে ভালোবাসতাম সে এখন
Bsc'র বউ
তারা খেলে মাস্টার মাস্টার
প্রতিদিন এলজেবরা কষে
সমান-সমান,প্রমাণিত।
তার বুকে আগুন ছিলো
মাস্টারনী হবার আগে
এখন মুখ ভাসে
                     শুধু মুখ
ফসল উঠা ক্ষেতের মতোই
খাঁ খাঁ গারো ছেলের বুকে।
                       

                ১৫
           
    প্রেমের কবিতা-২


আবার দেখা হলে বলতাম
সমস্ত কলিজা ঘুণে খেয়েছে
কোন ট্যাবলেট বা কবিরাজি
                        কাজে লাগেনি।
রক্ত কালোজামের মতো হবার কথা
হয়ে গেছে ফসলী ক্ষেতের মত হলুদ
ছিলা তূণের মতো একটি মুখ
বিছিয়ে গেছে হাজার পথ!
ভালবাসো?
জানতে চাইতাম আবার দেখা হলে
Bsc'র বউ দেউলির বাইরে আসে না।
                                 ১৬
           গারো পাহাড় মেঘ
দক্ষিণ থেকে উত্তরে ধাবমান মেঘ
ঢল নামাবে গারো পাহাড়ের পাদদেশ?
ভাঙা ভাঙা টুকরো-টাকরা
কালো-কালো লালচে-লালচে
জমাটবাঁধা শুভ্র
যেন বলক ওঠা দু্ধের ফেনা
দ্রুত ধাবমান
স্পেশ্যাল ড্রিমল্যান্ড কিংবা ট্রেন
নয়তো লোকাল সার্ভিস
হেলে দুলে ঘটর ঘট...ঘটর ঘট...গুডুমমমম...
ধাবমান মেঘ দেখে
বুকটা ধক করে উঠলো
রাত পোহালেই ভাসমান
গারোপাড়া কোচপাড়া হাজংপাড়া...
দক্ষিণ থেকে উত্তরে ধাবমান
দুরন্ত মেঘ
গারোপাড়ার আত্নীয় হবি?
                                 

                       ১৭
       বারবার ভু্ল হয়ে যায়।


একটি নাম বারবার ভুল হয়ে যায়
মিঠুনকে লিখে মিথুন।সে ভুল প্রায় লোকই করে।
আমিও করি তবে স্বাক্ষর দিতে গিয়ে।আমি কোনদিনই
পূর্বের মত নিখুঁতভাবে স্বাক্ষর দিতে পারি না।
এ নিয়ে অনেক হাসাহাসি হয়,মন কালাকালি হয়।
যেটা বেশি হয়-চেক ফেরত আসে।
আমি ভাবতে থাকি...
আর গলে পড়া ঘামের ঘ্রাণ নিতে রিক্সায় উঠি।কোমল হাত
লোমহীন বুক,ছেলেটার বাড়ি কুড়িগ্রাম।কী হাসি...যেন ফেরত আসা
চেক দেখে হাসছে সবাই।দেখছি ছেলেটার থুতনি থেকে
ফোঁটাফোঁটা ঘামের বদলে রক্ত পড়ছে অথচ ছেলেটা জানে না
সঙ্গমকালে এমনই ঘাম ঝরে,রক্ত ঝরে।
ছেলেটা সঙ্গমের আশায় ঢাকায় এসেছে রিক্সা চালাতে।
আগামী কোরবানীর ঈদে মেয়ে দেখতে যাবে তাই
হেন্ডেল মেরে নিজেকে তৈরি করছে।
হাঁটছি আর ভাবছি...
আমার চেকের মতো ফেরত আসবে নাতো!যদি ছেলেটার কোমল হাত ফেরত আসে
নগ্ন,মেয়েহীন;বয়রা লেগেছে বলে ছুঁয়ে দেয়, তখন?
নাকি প্রতিজ্ঞা করবে-কোনো মেয়েকে রিক্সায় উঠাবে না!
ভাবছি...
কুড়িগ্রামের ছেলেটার কথা
ভুল নামের জন্য পায়নি সরকারি গম
রিক্সা চালাতে এসে নিতে হলো ছন্ম নাম
মেয়ে দেখতে গেলে লাগবে আরেকটা
তখন ফেরত আসা চেকের মত দু-ভাগ হয়ে যাবে
ছেলেটার সঙ্গম উন্মুখহ্নদয়?
                   

                 ১৮
                 
          স্তনাঢ্য যুবতী


মুগ্ধ হতে হতে ফিরে যাই
যুবতীর কাছে
হে স্তনাঢ্য যুবতী
মাতাল তরুণের বুকে
একটি ফুঁ দাও
গুন গুন করতে করতে ফিরে পাক
কুপিত হ্নদয়ে সুগন্ধি ঔষধ!

No comments

Theme images by saw. Powered by Blogger.