একশত টাকা ইনকাম!!

জা'ডিল মৃ





সব সময় বন জঙ্গল আমার খুব প্রিয়,মধুপুর শালবনে গভীর অরণ্যে বসে পা দুটো  নাঁড়াছি।যদিওবা গভীর অরণ্য বলতে তেমন কিছু আর নেই,আস্তে আস্তে সব ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে, বলতে গেলে লেঙ্গটা।ছোট বেলায় দেখেছি গভীর বন খুব ঘন ছিল, ছোট ছিলাম একা যেতে কখনো সাহস পেতাম না, যতদূর মনে পড়ে কিনারা বাদে কখনো গভীর অরণ্যে যাওয়া হয়নি।তখন এত বন ঘন ছিল যে,একা যেতে সবাই ভয় পেত। এখন কোন ভয় নেই সব দেখা যায় এমন অবস্থা,কয় দিন পর শুধু ইতিহাস বলবে এখানে বন ছিল।তাই যতদূর সম্ভব সময় পেলেই বনে যায়, বসে থাকি,চারপাশ দেখি,গাছপালা দেখি,সৌন্দর্য উপভোগ করি,প্রাণ খুলে শ্বাস নিই,ইচ্ছে করেই বনের ভেতর হারিয়ে যায়,পাখির কিচিরমিচির শুনি,বিভিন্ন গাছ দেখি, পাতা দেখি,শিকড় দেখি আরো কত কী যে দেখি!কোন হিসাব নেই।জানি, কয়দিন পর কখনো এমন, যতটুকু বন আছে তাও পাব না, তাই যত পারি নিয়ে নিচ্ছি,যতটুকু পাওয়া যায়।

সকাল থেকে মন মেজাজা কেমন যেন ফুরফুরে, সকালে উঠেই দারুণ চমক পেলাম।আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম ব্যাপারটা মানে লেনদেন , যখন দেখি একশ টাকা লোড খুশি না হয়ে পারা যায় না। যতদূর জানি, আমাদের ম্যাগাজিন যতগুলো বের হয়, যারা লেখে উনাদের কোন পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না।আমিও প্রথমে ভেবেছিলাম দেওয়ার দরকার কী এমনেই যে খরচ তার উপর পারিশ্রমিক? যখন নিজে লেখালেখি শুরু করলাম তখন বুঝলাম কাজটা আসলে সহজ নয়।অন্যান্য কাজের চাইতে পরিশ্রম বেশি,বই পড়তে হয়, আপডেট  খবর রাখতে হয়,দীর্ঘ সাধ্যনা দরকার,ধৈর্য দরকার, চিন্তা ভাবনা দরকার,চারিদিক খেয়াল রাখতে,সমস্ত কিছু বিবেচনায় রাখতে হয়, আরো কত কি রে বাবা!কোন কিছু পড়ার চাইতে মানে বই পড়া সহজ, লিখতে গেলে হাঁপিয়ে যায়,মাথা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়।মাঝে মাঝে নিজেই বুঝে উঠতে পারি না কি লিখছি আর কি লিখব!

বনের ভিতরে গাছের তলায় বসে  খুশির সংবাদ উপভোগ করছিলাম।সচারচর আমাদের  ম্যাগাজিন বা অন্য কিছু জায়গায় যা হয় আরিকি!কষ্ট করে লেখা দিলেও কোন পারিশ্রমিক পাওয়া যায় না।আমি অনেকগুলো ম্যাজিনের জন্য লিখেছি,কোনদিন পারিশ্রমিকের আশা করিনি। ইদানিং মনে হচ্ছে চাওয়াটা দরকার, না হলে কষ্ট করে লেখাগুলো বৃথা,এত কষ্টের মূল্য তাহলে কি থাকলো?সেই জন্য এখন জিঙ্গাসা করি কত পারিশ্রমিক দিতে পারবে,মজার চলেই হোক সিরিয়াসলি ভাবেই হোক,বলেই ফেলি।লজ্জা করে তো কোন লাভ নেই তাই না,দিলে দিবে না দিলে অন্য কথা।অবশ্য সেটাও ঠিক আমার লেখা তেমন পরিপক্বতা হয়নাই। আমার অবস্থা এই রকম আরিকি,"দুই দিনের বইরাগি ভাতেরে কয় অন্ন"।যাইহোক আমি বা অন্য যে কেউও হোক কম হোক বেশি হোক যারা লেখা দিবে বা বাছাই শেষে যাদের লেখা প্রকাশ করা হবে উনাদের জন্য কিছু দেওয়া উচিত।কিছু লেনদেন থাকলে দুই পক্ষের লাভবান হয়,একটা ভারসাম্য থাকে।

আমি বড় ভাই এর কাছ থেকে পারিশ্রমিক হিসাবে লোড একশ টাকা পেয়েছি।বিষয়টা আমার কাছে বিশাল কিছু,নতুন হিসাবে লেখালেখি শুরু করেছি, প্রথমে চমক পেলে তো খুশি হওয়াই স্বাভাবিক।  আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম বড় ভাই আমাকে কথা দিয়েছিল লেখা দিলে একশত টাকা লোড করে দিবে।আমি নিজের সাধ্যমত যত্নসহকারে সময় নিয়ে লিখেছিলাম, আমি জানি না কতটুকু ভালো লিখতে পেরেছি, তবে আমার চেষ্টার  কোন কমতি ছিল না,গাফলতি করিনি,আমার সর্ব্বোচ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম।অনেকের কাছে হাস্যকর লাগবে একশত টাকা দিয়ে কত বাহাদুরি। কিন্তুু আমার কাছে খুব খুশির একটা মুহূর্ত বয়ে যাচ্ছে ।একশত টাকা আমার কাছে এক বড় প্রাপ্তি,নতুন হিসাবে লেখালেখি করে কম হোক বেশি হোক যে পারিশ্রমিক পেয়েছি,তাতেই আমি সন্তুষ্ট।

একটু অনুরোধ করবো,
আমরা তো জানি ম্যাগাজিন করার জন্য অনেক বাজেট থাকে এখানে যদি লেখকদের জন্য আলাদা বাজেদ থাকে, তাহলে বোধয় ভালো হয়।ভবিষ্যত প্রজম্মের লেখালেখির আগ্রহ বাড়বে, এক সময় ভালো লেখক আমরা পেতেও পারি।আবার যারা লেখালেখি করে খুব যত্নসহকারে  লিখবে,লেখার প্রতি এক ধরণের দায়বদ্ধতা থাকবে।










No comments

Theme images by saw. Powered by Blogger.