প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়..
জা'ডিল মৃ
ছবি:প্রকাশ চন্দ্র মৃ
এর আগেও আমি আবিমাকে নিয়ে গর্ব করেছি। আবিমাকে নিয়ে সব সময় আমার গর্ব হয়, শুধু মাত্র আবিমায় বাড়ি বলে নয়, অনেক কারনে গর্বে বুক ফুলে যায়,প্রসংশা করতে কখনো দ্বিধা করি না,ভবিষ্যতেও তাই করবো। আগেও বলেছিলাম কী নেই আবিমাতে,যা কিছু থাকা দরকার সবকিছুই আছে।আজকে শুধু একটা ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করব সেটা হলো, শিক্ষার ক্ষেত্রে কতটা অগ্রগতি হলো।আবিমাতে শিক্ষার প্রসার শুরু হয় অনেক পরে অন্যন্য গারো গ্রাম বা এলাকার চাইতে। কিন্তুু তা সত্ত্বেও আবিমার মানুষের শিক্ষার হার ঈর্ষণীয়,ছোট বাচ্চারা মোটামোটি সবাই স্কুলে যায়।হাইস্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এখন অহরহ দেখা যায়। আগে শুনতাম, গ্রামে একজন মেট্রিক পাশ করলে আগেকার গ্রামের মানুষ সহ অন্যন্য এলাকা থেকে দেখতে আসতো পাশ করা মানুষটিকে একবার মুখ দেখতে। আর এখন বিশ্ববিদ্যালয় চান্স পেলেও অথবা উচ্চতর ডিগ্রি নিলেও কেউ আর দেখতে আসে না।
আজকে এমন পরিবারেরর কথা বলব, যে পরিবারে প্রাইমারি স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষক আছে।দেশে গারো জাতিগোষ্ঠীর ইতিহাসের মধ্যে এমন ঘটনা নেই,অন্যন্য জাতির মধ্যে আছে কিনা, আমার ঠিক জানা নাই।এই পরিবার কে দেখতে হলে প্রথমে যেতে হবে মধুপুর উপজেলা, অরণখোলা ইউনিয়নের, ভূটিয়া নামক গ্রামে।জানা মতে, যে পাড়ায় পরিবারটি অবস্থিত সেই পাড়া "মাস্টার পাড়া "নামে পরিচিত, কারন প্রতিবেশী মাস্টারো কম নয়, আবার মাস্টার পরিবার বলেও স্বীকৃত।এতটা বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করতে পারব না,সামান্যটুকু তথ্য নিয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে ধারণা দিব।
গারো যেহেতু মাতৃতান্ত্রিক সমাজ সেহেতু বলা যায় সেটি "হাজং মাহারি'র" বাড়ি।পরিবারের কর্ত্রীর নাম ইলা রানী হাজং এবং কর্তার নাম প্রকাশ চন্দ্র মৃ।বলে রাখা ভালো এটি কিন্তুু হাজং জাতি নয়,গারো জাতিগোষ্ঠী হাজং টাইটেলর গোত্রের।উনাদের সন্তান সন্তানি মোট দশজন,সাত মেয়ে ও তিন ছেলে।মেয়ে ছেলে সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতিষ্ঠিত এবং সবাই শিক্ষিত।এছাড়াও উনাদের নাতি পুতি সবাই বিভিন্ন স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।
ইলা রাণী হাজং এবং প্রকাশ চন্দ্র মৃ উভয়ই শিক্ষক ছিলেন। এছাড়াও বর্তমানে উনাদের সন্তান, নাতি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাথে কাজ করছেন।অবশ্য, পুতিরা এখনো ছোট আছে প্রাইমারি গন্ধি পার হয়নি কেউ। এই পরিবারটিকে বলা যায় সমৃদ্ধ পরিবার,পরিবারের মধ্যে কম বেশি সব পেশার মানুষ আছে।বর্তমানে, শিক্ষকতার পেশায় নিয়োজিত আছে প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক হিসাবে তিন জন ,হাই স্কুলে দুই জন, কলেজে এক জন, বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন।এছাড়াও বর্তমানে পরিবারের অনেকে শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়েছে। মোটামোটি কম বেশি সবাই শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিল।আদিবাসী গারো হিসাবে আমাদের জন্য বেশি প্রযোজ্য হলো শিক্ষা।এই পরিবার শিক্ষার গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিল যার ফলে উনারা উনাদের মেয়েছেলে সবাইকে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণে তাগাদা দিয়েছিলেন,শেষ পর্যন্ত সফলো হয়েছিলেন তার কারণে ইতিহাস গড়ে প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত একটি পরিবার থেকেই শিক্ষক বের হয়েছে। এই পরিবার থেকে অনেক কিছু শিক্ষার আছে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি বাস্তবতারর সাক্ষী এই পরিবার।এই পরিবারের মত দ্বিতীয় কোন পরিবার হবে কি জানি না,শুধু এটা জানি এই পরিবার একটা ইতিহাস,গারো জাতির ইতিহাস, আদিবাসীর ইতিহাস।
হয়তো কোন একদিন বিস্তারিত ভাবে লিখব, প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কথা, বেড়ে উঠার গল্প।পরিবারে এত শিক্ষক এবং প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষক পেশায় নিয়োজিত প্রত্যেকের গল্প।গারো জাতিগোষ্ঠীর সদস্য হিসাবে এবং এই পরিবারের সদস্য হিসাবে নিজেকে প্রতিনিয়ত গর্ব করি।আবিমা যেমন শিক্ষা ক্ষেত্রে বহুদূর এগিয়েছে, তেমনি অন্যন্য ক্ষেত্রেও এগিয়ে যাচ্ছে।
আবিমায় অনেক কিছু কাজ এখনো বাকি, আসুন আমরা নিজ নিজ জায়গা থেকে নিজে এবং অন্যদের প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করি।আমরা যেমন শিক্ষার দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছি তেমনি অন্যান্য জায়গাতেও আমাদের যুক্ত হতে হবে।সবসময় মনে রাখতে হবে আমার বেঁচে থাকার পথ খুব সংকোচ হয়ে যাচ্ছে।
ছবি:ইলা রাণী হাজং |
ছবি:প্রকাশ চন্দ্র মৃ
এর আগেও আমি আবিমাকে নিয়ে গর্ব করেছি। আবিমাকে নিয়ে সব সময় আমার গর্ব হয়, শুধু মাত্র আবিমায় বাড়ি বলে নয়, অনেক কারনে গর্বে বুক ফুলে যায়,প্রসংশা করতে কখনো দ্বিধা করি না,ভবিষ্যতেও তাই করবো। আগেও বলেছিলাম কী নেই আবিমাতে,যা কিছু থাকা দরকার সবকিছুই আছে।আজকে শুধু একটা ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করব সেটা হলো, শিক্ষার ক্ষেত্রে কতটা অগ্রগতি হলো।আবিমাতে শিক্ষার প্রসার শুরু হয় অনেক পরে অন্যন্য গারো গ্রাম বা এলাকার চাইতে। কিন্তুু তা সত্ত্বেও আবিমার মানুষের শিক্ষার হার ঈর্ষণীয়,ছোট বাচ্চারা মোটামোটি সবাই স্কুলে যায়।হাইস্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এখন অহরহ দেখা যায়। আগে শুনতাম, গ্রামে একজন মেট্রিক পাশ করলে আগেকার গ্রামের মানুষ সহ অন্যন্য এলাকা থেকে দেখতে আসতো পাশ করা মানুষটিকে একবার মুখ দেখতে। আর এখন বিশ্ববিদ্যালয় চান্স পেলেও অথবা উচ্চতর ডিগ্রি নিলেও কেউ আর দেখতে আসে না।
আজকে এমন পরিবারেরর কথা বলব, যে পরিবারে প্রাইমারি স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষক আছে।দেশে গারো জাতিগোষ্ঠীর ইতিহাসের মধ্যে এমন ঘটনা নেই,অন্যন্য জাতির মধ্যে আছে কিনা, আমার ঠিক জানা নাই।এই পরিবার কে দেখতে হলে প্রথমে যেতে হবে মধুপুর উপজেলা, অরণখোলা ইউনিয়নের, ভূটিয়া নামক গ্রামে।জানা মতে, যে পাড়ায় পরিবারটি অবস্থিত সেই পাড়া "মাস্টার পাড়া "নামে পরিচিত, কারন প্রতিবেশী মাস্টারো কম নয়, আবার মাস্টার পরিবার বলেও স্বীকৃত।এতটা বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করতে পারব না,সামান্যটুকু তথ্য নিয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে ধারণা দিব।
গারো যেহেতু মাতৃতান্ত্রিক সমাজ সেহেতু বলা যায় সেটি "হাজং মাহারি'র" বাড়ি।পরিবারের কর্ত্রীর নাম ইলা রানী হাজং এবং কর্তার নাম প্রকাশ চন্দ্র মৃ।বলে রাখা ভালো এটি কিন্তুু হাজং জাতি নয়,গারো জাতিগোষ্ঠী হাজং টাইটেলর গোত্রের।উনাদের সন্তান সন্তানি মোট দশজন,সাত মেয়ে ও তিন ছেলে।মেয়ে ছেলে সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতিষ্ঠিত এবং সবাই শিক্ষিত।এছাড়াও উনাদের নাতি পুতি সবাই বিভিন্ন স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।
ইলা রাণী হাজং এবং প্রকাশ চন্দ্র মৃ উভয়ই শিক্ষক ছিলেন। এছাড়াও বর্তমানে উনাদের সন্তান, নাতি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাথে কাজ করছেন।অবশ্য, পুতিরা এখনো ছোট আছে প্রাইমারি গন্ধি পার হয়নি কেউ। এই পরিবারটিকে বলা যায় সমৃদ্ধ পরিবার,পরিবারের মধ্যে কম বেশি সব পেশার মানুষ আছে।বর্তমানে, শিক্ষকতার পেশায় নিয়োজিত আছে প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক হিসাবে তিন জন ,হাই স্কুলে দুই জন, কলেজে এক জন, বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন।এছাড়াও বর্তমানে পরিবারের অনেকে শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়েছে। মোটামোটি কম বেশি সবাই শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিল।আদিবাসী গারো হিসাবে আমাদের জন্য বেশি প্রযোজ্য হলো শিক্ষা।এই পরিবার শিক্ষার গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিল যার ফলে উনারা উনাদের মেয়েছেলে সবাইকে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণে তাগাদা দিয়েছিলেন,শেষ পর্যন্ত সফলো হয়েছিলেন তার কারণে ইতিহাস গড়ে প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত একটি পরিবার থেকেই শিক্ষক বের হয়েছে। এই পরিবার থেকে অনেক কিছু শিক্ষার আছে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি বাস্তবতারর সাক্ষী এই পরিবার।এই পরিবারের মত দ্বিতীয় কোন পরিবার হবে কি জানি না,শুধু এটা জানি এই পরিবার একটা ইতিহাস,গারো জাতির ইতিহাস, আদিবাসীর ইতিহাস।
হয়তো কোন একদিন বিস্তারিত ভাবে লিখব, প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কথা, বেড়ে উঠার গল্প।পরিবারে এত শিক্ষক এবং প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষক পেশায় নিয়োজিত প্রত্যেকের গল্প।গারো জাতিগোষ্ঠীর সদস্য হিসাবে এবং এই পরিবারের সদস্য হিসাবে নিজেকে প্রতিনিয়ত গর্ব করি।আবিমা যেমন শিক্ষা ক্ষেত্রে বহুদূর এগিয়েছে, তেমনি অন্যন্য ক্ষেত্রেও এগিয়ে যাচ্ছে।
আবিমায় অনেক কিছু কাজ এখনো বাকি, আসুন আমরা নিজ নিজ জায়গা থেকে নিজে এবং অন্যদের প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করি।আমরা যেমন শিক্ষার দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছি তেমনি অন্যান্য জায়গাতেও আমাদের যুক্ত হতে হবে।সবসময় মনে রাখতে হবে আমার বেঁচে থাকার পথ খুব সংকোচ হয়ে যাচ্ছে।
No comments