আমার ঈশ্বর একজন "নারী"

জা'ডিল মৃ



বিতর্ক সৃষ্টি করার জন্য লিখছি না,মনের ভাবনাগুলো একটু শেয়ার জন্য,মনের ভিতরে সাধারণ কিছু ঘুরপাক খাওয়া প্রশ্ন,সাধারণ বিষয় চিন্তার হাত থেকে বাঁচতে লেখার চেষ্টা করছি। নারী বিষয় নিয়ে বিশদ আলোচনা করা দরকার বা করা উচিত, যেহেতু এখানে বিশদ আলোচনা করা যাবে না সেহেতু  সাংসারেক   ধর্মের  "নারীর" কথায় আলোচনার মূখ্য বিষয়।

নারী শব্দটি দেখে অনেকেই চমকে উঠবে, আরে;  নারী আবার ঈশ্বর হয় নাকি?ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি আমাদের ঈশ্বর একজন পুরুষ। আদি পুস্তকে লেখা আছে পুরুষের একটি পাঁজর দিয়ে নারী সৃষ্টি এবং নিজের প্রতিমূর্তিতে তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। অদ্ভুত রকমভাবে শোনায় যখন দেখি ঈশ্বর একজন নারী আমাদের সৃষ্টিকর্তা। আমার প্রশ্ন হচ্ছে যদি একজন ঈশ্বর পুরুষ হতে পারে তাহলে নারী হতে পারবে না কেন?হয়তো অনেকে ভাববে, কোন মতে ঈশ্বর নারী হতে পারে না।আচ্ছা মানলাম ঈশ্বর একজন পুরুষ তাহলে নারীর কি দোষ ছিল যে ঈশ্বর হওয়া থেকে বঞ্চিত?আমি আবার ধর্ম সম্পর্কে কম জানি, তাই সাংসারেক ধর্ম নিয়েই কিছু আলোচনা করি।

আমাদের আদি ধর্ম যে "সাংসারেক "এটা নিয়ে তো কারো দ্বিমত থাকার কথা না!নাকি আছে?থাকলেও সমস্যা নাই। আমরা আমাদের ঈশ্বরকে প্রথম ক্রুশ বিদ্ধ করি ১৮৮৬ সালে জনৈক    সাংসারেক থেকে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণের মাধ্যমে। তখন আমাদের সৃষ্টিকর্তা ছিল একজন নারী, তার নেতৃত্বে দেব দেবতা উপদেবতা পৃথিবী শাসন করতো।এখন আর তাদের প্রভাব নেই।সাংসারেক ধর্ম অনুসারী মানুষ এখন হারিকেন দিয়ে  খুঁজলেও পাওয়া যায় না।যারা এখনো বেঁচে আছেন নিজের ধর্ম নিয়ে তারা বেশিরভাগি বৃদ্ধ, তাদের মৃত্যুর পর সাংসারেক ধর্মের অস্তিত্ব টিকে থাকবে কী না জানি না । এখন হাতে গুনা সাংসারেক ধর্মাবলম্বী খামাল এবং অনুসারী আছে যাদের অনেক কষ্টে দেখা পাওয়া যায়।

আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করি কারণ,কঠোর ব্যাপ্টিসজম আর সাংসারেক ধর্মের মধ্যে আমার বেড়ে উঠা। আমার বাবার আত্নীয়স্বজন ছিল কঠোর ব্যাপ্টিস্ট এবং মায়ের দিকে ছিল তার উল্টো সাংসারেক। এই জন্যই ভাগ্যবান মনে করি এত বছর পরেও সাংসারেক ধর্ম টিকে আছে যার স্পর্শ আমি পেয়েছিলাম এখনও পাচ্ছি। অনেকে আবার আমাকে বলতে পারে একজন খ্রীষ্টানের সন্তান হয়ে এমন বলছি কেন?আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাসের কথা বলছি না।আমি শুধু এটাই বলতে  চাইছি, আগে , মানে আমরা  সাংসারেক ধর্মে অনুসারী যখন ছিলাম, তখন আমাদের ঈশ্বর একজন নারী ছিল।  আসলে কি সাংসারেক ধর্মের প্রতি একটা ভালোলাগা ভালোবাসা আছে,তাই বলে যে আমি সাংসারেক ধর্ম পালন করি, তেমনটা না।সাংসারেকের প্রতি একটা অদ্ভুত ভালোবাসা কাজ করে,কত জনের করে সেটা জানি না।

কোথায় জানি পড়েছিলাম সাংসারেক ধর্মে ৭০০০ হাজার দেবতা ৭০০ উপদেবতা বিদ্যমান। এর চেয়েও বেশি বিদ্যমান থাকতে পারে।জানা যায় আমাদের বর্তমান প্রধান ধর্মের চাইতে অনেক পুরানো সাংসারেক ধর্ম প্রায় সনাতন হিন্দু ধর্মের সমপর্যায়ী।সেটার বয়স তিন থেকে আড়াই হাজার বছর আগে বা তার চেয়েও বেশি( আনুমানিক বলছি)।সাংসারেক ধর্মের অনেক দেব দেবতা আছে এবং পুনর্জন্মে বিশ্বাসী।জনিক নকরেক বার বার বলেন,সাংসারেক ধর্ম সত্য যুগের ধর্ম। আমাদের কখনো বিদেশী ধর্ম গ্রহণ করা উচিত নয়, নিজের ধর্মই গ্রহণ করা উচিত।আরো বলেন,আমরা কখনো অন্য ধর্ম গ্রহণ করে নিজের মত করে বাঁচতে পারব না।আমাদের নিজেদের ধর্মই পালন করা উচিত।

সাংসারেক ধর্ম মতে আমাদের প্রধান বা সৃষ্টিকর্তা হচ্ছে একজন নারী।এই নারী দ্বারাই সমস্ত কিছু সৃষ্টি হয়েছে, তার অধীনেই  সব দেবতা উপদেবতা কাজ করে।তিনিই সর্বেসর্বা, উনার সন্তান সন্তানাদি রয়েছে।সাংসারেক ধর্মে সবকিছুর পেছনে শুভ হোক অশুভ হোক সবকিছু দেবতা উপদেবতা নিয়ন্ত্রণ করে।এটা এমন না যে     শুধু সাংসারেক ধর্মের সৃষ্টিকর্তা নারী ছিল, আমরা যদি প্রাচীন ধর্মের কথা দেখি, তাহলে দেখতে পাব নারী সৃষ্টিকর্তার কথা।আজকে তেমন আর ধর্মের প্রভাব নেই নারীদের।

হ্যাঁ, যার কথায় বলতে চাইছিলাম আমাদের সৃষ্টিকর্তা আমাদের ঈশ্বর একজন নারী, উনার নাম হচ্ছে "বাগিপ্পা",উনার মাধ্যমেই সবকিছু সৃষ্টি হয়েছে। আমরা যদি ধর্মের কাহিনীতে যায় তাহলে অনেক লম্বা হবে।আমি যেটা বলতে চাইছিলাম যে,আমাদের সৃষ্টিকর্তা একজন নারী ছিলো এবং নারীও একজন ঈশ্বর হতে পারে।যা আমাদের অনেকের মগজে ধরে না,ফলত আমরা অনেক কিছুই না বুঝে মন্তব্য করে ফেলি।এই জায়গা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে।আমরা কখনো নারীদের সম্মান দেখাতে পারি না, সবসময় ভাবি মাল,পণ্য,যৌনবস্তু,পুতুল, অমানুষ আরো কত কি!আমরা এই জায়গা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারব না এত সহজে, তবে যদি আমরা চেষ্টা করি তাহলে কিছুটা হলেও সম্ভব।

আমাদের ঈশ্বর একজন নারী ছিল...এখনো আমাদের ঈশ্বর একজন নারী।

2 comments:

  1. মাথামোটা বুনো শুয়োর!
    ইশ্বরের কোনো লিঙ্গ নেই.তিনি নারীও না পুরুষও না.

    ReplyDelete
    Replies
    1. হতে পারে।তবে আমার মূখ্য বিষয়টা বুঝতে পেরেছেন কীনা আমি জানি না!

      Delete

Theme images by saw. Powered by Blogger.