Jumang'kho Rim'na (পাঠ্যচক্র)

জা'ডিল মৃ


                                                       


         
আমাদের যাত্রার শুরুটা নিরবে এক বছর কাটিয়ে দিলাম,কবে যে এক বছর হয়ে গেল নিউজ পিড না দেখলে ভুলেই যেতাম।শুরুটা তেমন সহজ ছিল না,তবে এত বেগ পেতে হয়নি,সবার  স্বতঃফূত  অংশগ্রহণ অতি দূততার সাথে একটা পর্যায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছিলাম।আজকে অনেক পরিপূর্ণতা লাভ করেছে,আমাদের পাঠ্যচক্র। প্রথমে মনে খুব সংশয় ছিল,আমার চাওয়া বাস্তবায়ন করতে পারব কি না বা আমি বোঝাতে সক্ষম হবো কি না যে পাঠ্যচক্র বিষয়টা কত গুরুত্বপূর্ণ কতটা মূল্যবান। প্রথম সময়ে হতাশায় ভুগতাম, নিজের কাজের প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলাম।ভেবেছিলাম হয়তো হেরেই যাবো, কোনদিন আর সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারব না।আমি নিজেই আমাকে ভুল প্রমাণিত করলাম,যতটুকু করতে পেরেছি আমি নিজে কে সফল মনে করি।নিজেকে নিজে প্রশংসার দাবি করছি না।শুধুমাত্র আমি আমার স্বপ্নের কথা বলছি আমার বাস্তবায়নেরর কথা বলছি।আমার দ্বারাই যে বাস্তবায়ন হয়েছে তেমনটা কিন্তুু নয়।আমার আত্নার সাথে সম্পর্ক যে দিদি এবং ভাই আমার আপন বন্ধুজন সহযোদ্ধা কমরেড  প্রত্যেকে প্রথম থেকেই সাহায্য করেছিল।আমাদের ক্যাপাসে অনেক সীমাবদ্ধতা আছে,অনেক কিছু হওয়ার বাকি,নিজে থেকেই বাকিটুকু পাওয়ার চেষ্টা করতে হয়।সেই সীমাবদ্ধতা থেকে যতটুকু পেরেছি, নতুন এক আলোর সুচনা করতে চেয়েছিলাম।আমরা প্রত্যেকজন এখন সেই আলোর এক এক মাইলস্টোন,আমরা আলোর দিশারী পেয়েছি, নতুন জগৎ উপলদ্ধির জায়গাটুকু গড়তে পেরেছি, সেটাই আমাদের স্বার্থকতা।

আমরা এখন এমন সময়ে আছি,যা নিজেদের অজান্তে এক বছর পার করে পেলেছি,খুব ব্যবস্তার মধ্যে।অল্প সময়ে যতটুকু পেরেছি, শিখেছি,শিখার চেষ্টা করেছি, আমাদের জন্য সেটাই যথেষ্ট।অল্প সময়ে আমাদের যে চিন্তার পরিবর্তন, আমার বুকে আর্তনাদ চলে আসে।আমি এটাই চেয়েছিলাম যেটা এক বছর আগে আমার স্বপ্ন ছিল আজকে সেটা বাস্তবতা।আমরা এমন সম্মুখীন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছি, আমরা বুঝতে সক্ষম হয়েছি জ্ঞানের ক্ষেত্র কেমন বিশাল,সেই বিশালতা আমরা ছুঁতে পারব না সেটা ঠিক,কিন্তুু ছুঁতে চেষ্টা করা তো কোন অপরাধ নয় কোন পাপ নয়।আমি ব্যক্তিগত ভাবে আজ অনেক সন্তুষ্ট, কেনইবা সন্তুষ্ট হবো না?আজকে যে ভাবে পাঠ্যচক্র ব্যবস্থাপনা কমিটি শক্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে, আমার বিশ্বাস আমরা হয়তো একদিন থাকব না,তবে আমাদের পাঠ্যক্রম কার্যক্রম এগিয়ে যাবে,নতুন কিছু যোগ হবে বুদ্ধিমান মেয়েছেলে আসবে যারা নিজেদের চিন্তা কে সর্বব্যাপী ছড়িয়ে দিবে নিজের জন্য জাতির জন্য ভবিষ্যত প্রজম্মের জন্য। অন্যের কাছে কেমন লাগে সেটা ঠিক জানি না। তবে আমার কাছে ভাত,পানি,কাপড়,ঘুম, ভ্রমণ, খেলাধুলা প্রভৃতি যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি ছাত্র অবস্থায় বা সেটা ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ  পাঠ্যচক্র। পাঠ্যচক্রের গভীর বিষয় বস্তুু উপলদ্ধি করি চানচিয়ার মাধ্যমে,আমি মনে করি আমার শিক্ষার ক্ষেত্রটা স্বার্থ।চানচিয়া থেকে জ্ঞানের প্রাপ্তি পাওয়া আমার কাছে বিশাল পরিবর্তন আনে।


                                                     ছবি:Jumang'kho Rim'na


আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে,প্রতিটা ক্ষেত্র থেকে শিক্ষাগ্রহণ বুদ্ধিমানেরর কাজ,যদিওবা কোন কোন সময় তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়, তবুও সবকিছু ভুলে সামনে এগিয়ে যাওয়া উচিত,আমাদের উপর যে দায়িত্ব বর্তায় তা পালন করা উচিত।

জ্ঞান চর্চা কখনো বৃথা যায় না,জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে জ্ঞানের বিচরণ দরকার,যদি বর্তমান সময়ে এসে জ্ঞানের বিকাশ না ঘটে, তাহলে জম্মের কারন বৃথা হয়ে যায়। সেই উপল্ধি থেকে জ্ঞানের বিকাশ এবং জ্ঞান আহরনে জন্য আমরা জ্ঞানের সন্ধানে মাঠে নেমেছি।আস্তে আস্তে করে আমরা জ্ঞানের বিচরণ বাড়িয়ে তুলেছি,হাতে কম সময় থাকে কোন দিন কোন সময় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আমরা পাঠ্যচক্রের  আয়োজন করতে পারি না।কিন্তুু আমার মনে হয় যতটুকু পারি, আমাদের কাছে সেটার গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের কাছে নতুন নতুন জ্ঞানের তালা খুলে যাচ্ছে, জীবন যাপনের সামান্য যতটুকু জ্ঞানের পরিধি থাকা দরকার এখন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি তবে আমাদের কার্যক্রম চলতে থাকবে।

প্রতিটা কাজে প্রতিটা চিন্তায় প্রতিটা বিপদে  আমাদের একমাত্র সাহায্যকারী ব্যাচ হচ্ছে ১০ তম ব্যাচ।উনাদের সাহায্য সবসময় আমাদেরকে উৎসাহীত করে, এমনি ভাবে বড় দিদি ভাই দরকার ছিল যা আমরা অপ্রত্যাশিত ভাবে পেয়েছিলাম।আমরা প্রতিনিয়ত চেয়েছিলাম আমাদের কাজে সবসময় আমাদের পাশে থাকবে আমাদের কোন দিদি বা ভাই। হ্যাঁ আমরা সেটাই পেয়েছিলাম ১০ ব্যাচের কাছে ,আমরা সবসময় উনাদের কাছে, সবাই কৃতজ্ঞতা স্বীকার করি।যাদের কল্যাণে এত দূর আসা, উনাদের ভালোবাসা কোনদিন ভুলার নয়।উনাদের পরামর্শ আমাদেরকে সবসময় সমৃদ্ধ করেছে,আমাদের ভুল আমরা বুঝতে শিখেছিলামম।



                                                        ছবি:Jumang'kho Rim'na


আমি বিশ্বাস করি,যদি ভবিষ্যতে কোন কাজ করে থাকি, কাউকে না পেলেও ১০ ব্যাচ সবসময় আমাদের সাথে থাকবে,আমাদের সাথে সংহতি জানিয়ে কাজে সাহায্য করবে।
এই খুশির সময়ে উনাদের ছায়ায় থাকতে পারাটা সৌভাগ্যেরর ব্যাপার বটে।আমরা অনেক দূর এগিয়েগেছি।পাঠ্যচক্র বিষয়টা বিশেষ করে আমরা যারা আদিবাসী প্রত্যেকজনের গভীর উপলদ্ধি থাকা দরকার।আরো দরকার আমরা যারা অধ্যয়নরত অবস্থায় আছি, তখন জ্ঞানের অনুসন্ধান খুব বেশি জরুরি।আদিবাসী হওয়ার ফলে জ্ঞানের বিস্তৃত শাখা বিচরণ না ঘটলে স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকা দুষ্কর, এমনেই আমরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হই,সেটা উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা হলো জ্ঞানের কৌশলের পরিধি,এই বাস্তবতার সম্মুখে যত কৌশল প্রয়োগ করতে সক্ষম হবো তত আমাদের  বেঁচে থাকা সহজ হবে।  না হলে টুকে টুকে মরতে হবে,এমন অবস্থা হবে আমরা মরে যেতেও পারব না আবার সুন্দর জীবন ভালো থাকার জীবনোও, উপভোগ করতে পারব না।

আজকে খুশির মুহূর্তটা আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভাবনার ভেতরে অন্য রকম অনুভুতি খেলা করছে।জানি,সামনের বছর গুলোতে তেমন আর মন ছুঁবে না হয়তো ভুলেই যাবো।এই মুহূর্তে খুশির ভাষা প্রকাশ করা যাবে না,আমি ব্যক্তিগত ভাবে এতটাই খুশি যে,নিজের কাছেই সবকিছু বিস্মকর লাগছে।

পাঠ্যচক্র বলতে মূলত বুঝায়,একটা নির্দিষ্ট দিনে সবাই মিলে কোন একটি বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা যুক্তি তর্ক প্রদান করবে।প্রতিটা পাঠ্যচক্রে একজন মূল্য আলোচক থাকবে  যিনি বিষয়টা নিয়ে গভীর এবং ব্যাপক ভাবে আলোচনা করবে। পরবর্তীতে সেটা নিয়ে মূল্যায়ন যুক্তি তর্ক প্রত্যেকে নিজস্ব মতামত প্রকাশ করবে।

পাঠ্যচক্র করার ক্ষেত্রে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।মাঝে মাঝে মনে হয় পাঠ্যচক্র করার প্রয়োজন নাই,আমাদের জ্ঞানের পরিধি এত বিশাল যে কোন বিষয়ের অপূর্ণতা আছে বলে মনে হয় না। পাঠ্যচক্র বিষয়টি অনেকের কাছে খুব খুব গুরুত্বহীন,বার বার বলার পরেও ফোন দেওয়া সত্ত্বেও আসতে চাই না।আমি ব্যক্তিগত ভাবে আর জোর করি না বা করতেও চাই না।জোর করে তো আর ভালো লাগানো যায় না,জ্ঞানের চর্চা জোর করে হয় না যদি না নিজে থেকে আসে।অর্থাৎ  নিজে থেকে যদি উপলদ্ধি জিনিসটা না আসে, তাহলে বকা ঝকা বা কোন কিছু না বলাই বুদ্ধিমানেরর কাজ।যার যার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা আছে,মতামত প্রকাশ করতে পারে কারণ একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বলে কথা।

সবকিছু সত্ত্বেও পাঠ্যচক্রের কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে,বিশ্বাস করি সামনের দিন গুলোতে এর ব্যাপ্তি আরো প্রসার লাভ করবে।



No comments

Theme images by saw. Powered by Blogger.