আমার বৈসাবি এবং একটি রাত

Jadil Mri


আমার বৈসাবি এবং একটি রাত

এই বারের বৈসাবিটা খারাপ যায় নাই,প্রথমেই পানির ছুঁয়া পেয়েছি।যখনি দেখলাম পানির খেলা শুরু হবে তখন সেই জায়গাটাতে আমি আর নাই।সোজা চলেগেছি দোকানে, দূর থেকে দেখেছি ক্যাম্পাসে আয়োজিত পানি খেলা।আমার ভাগ্যে এখনো পার্বত্য চট্রগ্রাম গিয়ে বৈসাবি অনুষ্ঠান দেখার সৌভাগ্য হয়নি।যদি ঈশ্বর আমার প্রতি প্রসন্ন হয় বা সাহায্য  করে হয়তো অতি শীঘ্র আমি যাবো।আমার কাছে বৈসাবি অন্যরকম অনুভূতি সৃষ্টি করে যা বলে বুঝানো সম্ভব নয়।ক্যাম্পাসে যারা ছিলো,নিজেদের সামর্থ্য মধ্যে যতটুকু সুন্দর ভাবে আয়োজন করা যায় করেছে।এই সব বিষয় বা ব্যাপারটা আমার কাছে খুবই ভালোলেগেছে।এত দূর থেকে আসা শুধু মাত্র পড়াশুনার জন্য,বছরে বড় অনুষ্ঠান বলতে বৈসাবি, নানান সমস্যা থাকার কারনে বাড়িতে যাওয়া হয় না।আমি শুধু চিন্তা করেছিলামম বাড়ির মানুষকে কতই না মিস করছে।যদি সবাই নিজের নিজের বাড়িতে থাকতে পারতো, তাহলে আরো কতই না মজা হতো দিনটা কতই না সুন্দর রকম ভাবে যেতো।যেহেতু বৈসাবি চোখের সামনে দেখা হয়নি তাই বেশি কিছু জানি না আসলে প্রোগ্রাম কী হয় বা কোন কোন জিনিস মেনে চলতে হয়।তবে যা শুনেছি বা ক্যাম্পাসে যা দেখেছি হালকা ধারণা হয়েছে।হয়তো ভবিষ্যতে কোন একদিন গেলে এই সব ধারণা গুলো কাজে দিবে।পানি দেওয়ার ভয়ে যেহেতু দোকানে ছিলাম দূর থেকে দেখেছি সবকিছু।আমি শুধু ভাবছিলাম,এই উৎসবে যদি চট্রগ্রামে থাকা যেতো হয়তো আরো অনেক কিছু দেখতে পেতাম যা আমার ধারণার বাইরে যা আমি কোন দিন কল্পনা করিনি যা আমাকে আমূল পরিবর্তন করে দিতে পারে, হয়তোবা অনেক কিছু!

আমি জানি না বৈসাবি কার কেমন গেছে, কাউ কে তেমন জিঙ্গাসা করা হয়নি।প্রশ্ন করার প্রয়োজন মনে করিনি, তাই কাউ কে জিঙ্গাসা করিনি।আমার কাছে মনে হয়েছে,আদিবাসীদের অবস্থা কোথাও ভালো না,আদিবাসীরা ভালো নেই,আমরা ভালো নাই।কিন্তুু খারাপ সময়ে এসেও যে যতটুকু পেরেছে আনন্দ, সুখ,দুঃখ, বেদনা সবাই সবার সাথে শেয়ার করতে চেষ্টা করেছে।এই দিনটির জন্য সবাই কিছুটা হলেও প্রাণ ভরে নিশ্বাস নিতে চেষ্টা করেছে।আমি আর গভীরে যাবো না।

ও ,ভুলেই গিয়েছিলাম  আরেকটা কথা ,আমার কিছু বন্ধু বান্ধব দুই কোরামে ভাগ হয়ে পার্বত্য চট্রগ্রামে ঘুরতে গিয়েছিল।এক নাম্বার কোরাম গিয়েছিল খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এবং দুই নাম্বার কোরাম গিয়েছিল বান্দরবান। ছবিতে যা দেখেছি মনে হয় না এত মজা করতে পেরেছে।হাহাহাহহাহাহাহ। সবাই এক সাথে গেলে মজাই অন্যরকম হতো।যা হোক আমার বুনিং যে বেঁচে ফিরে আসছে তাতেই আমি খুশি।হোন্ডা দুর্ঘটনা মারাত্মক, আমি নিজেই দুর্ঘটনার এক বার শিকার হয়েছিলামম।তখন অবশ্য বুঝেছি হোন্ডা দুর্ঘটনা কি?

যাই হোক আমি ইচ্ছা করেই যাই নাই মানে টাকা ছিল না। হাহাহহাহাহাহাহাহাহাহ.....আমাদের রেখে যারা গেছে তারা সবাই অপরাধী... ডাবল অপরাধী। হাহাহহাহাহাহাহাা। 

বৈসাবির আগের রাতে জ্যাকের তাড়নায় বাইরে বেড়িয়েছিলাম।আমার এতটা ইচ্ছা ছিল না কারন ঘুম আমাকে পেয়ে বসেছিল।আমি ক্লান্তিকর সময়ে ছিলাম,যখন কোন কিছু করতে মন চাই না, কোন কিছু করতে ইচ্ছা করে না।কী ভেবে যেন বেরিয়ে পরেছিলামম।

ছবি:জ্যাক হাজং


উপরে যে ছবি দেখা যায়,এই রাস্তা অনেক দিন যাওয়া হয় না।কিন্তুু সে দিন হঠাৎ করে আমরা গিয়েছিলামম,অবশ্য জ্যাক বলেছিল আগের চাইতে রাস্তা অনেক সুন্দর হয়েছে।আরো বলেছিল,যখন বৃষ্টি টিপটিপ পরে,মানুষ জন থাকে না, হ..া.....তে....! সন্ধ্যার দিকে হাঁটতে জোশ লাগে আবার রাতে দশটা এগারোটা দিকেও ভালো লাগে হাঁটতে,তবে একা, সঙ্গহীন। আরো কত কিছু বলেছিল সবগুলো মনে নেই।

অর্থাৎ আমরা সেদিন গিয়েছিল সেই রাস্তা যেখানে আমরা হেঁটেছিলাম অনেক দূর, জ্যাক অবশ্য মিথ্যা বলেনি,জায়গাটা আগের চাইতে এখন অনেক সুন্দর ,উপভোগের জায়গা।আমি এতদিন মনে মনে চেয়েছিলামম এমনি রাত যেখানে রাস্তার চারপাশে দূরে দূরে লাইটিং থাকবে রাস্তার চারপাশে সবুজ ধান ক্ষেত।নিস্তব্ধতা থাকবে শুধু জোঁনাকি পোকা দেখা দিবে,ঝিঁঝিঁ পোকা ডাকবে গান গাইবে, যেখানে রাতের জোৎস্না আলোয় সবকিছু দেখা যাবে, চারিদিক আলোময় হয়ে উঠবে।অবশ্য এই রকম পরিবেশ প্রেমিক/প্রেমিকা না থাকলে চলে।রোমান্টিক রোমান্টিক এক ভাব হাহাহহাহাহাহ।

আমি আরো অনেক দূর হাঁটতে চেয়েছিলামম জ্যাকের অপরাগতা এবং আমার ক্লান্ত শরীর সয় ছিল না।শেষ পর্যন্ত আমরা এসে পরেছিলাম আবার আরেক দিকে যেতে হয়েছিল অন্য কারনে।

এই বারের বৈসাবি সময়ের - রাত এবং দিন খারাপ যায় নাই।

No comments

Theme images by saw. Powered by Blogger.