চিকমাং থেকে ফের জেগে উঠতে হবে প্রাণ.....
চিকমাং থেকে ফের জেগে উঠতে হবে প্রাণ.....
Jadil Mri(জাডিল মৃ)
তরুণ লেখক এবং ব্লগার
Jadil Mri(জাডিল মৃ)
তরুণ লেখক এবং ব্লগার
ফা পীরেন স্নাল এর" খিম্মা " |
কিছুদিন ধরে খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি,এই যে আমার জম্মভূমি, মাটি,আকাশ,বাতাস,বন-জঙ্গল, নদী,রাস্তা,শান্ত পরিবেশ, সৌন্দর্য প্রকৃতি, আমার প্রিয় মান্দি গ্রাম গুলো সব ধ্বংস হওয়ার পথে।এই যে এত কিছুর পরেও একটু শান্তি নিয়ে বেঁচে আছি বসবাস করছি, আছি - থাকছি এখন পর্যন্ত বেঁচে আছি, কিন্তুু ভাগ্যের কি লীলাখেলা আমি এবং আমরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েগেছি।যদি এমন কোন কিছু হয় উন্নয়নের নামে, আমার চিরচেনা সবকিছু অচেনা হয়ে যাবে।আমি কি আমরা দাঁড়িয়ে নিচুপ দর্শক হয়ে থাকবো?নাকি সবকিছু মুখ বুজে সব মেনে নিবো?
চারিদকে শুধু উন্নয়ন আর উন্নয়ন..
এত উন্নয়ন দিয়ে কি হবে? যদি আমার মান্দি গ্রাম গুলো হারিয়ে যায়, প্রাণ ভরে শ্বাস নিতে না পারি, এই বন-জঙ্গল সব মরে যায়,নদীর পানি শূন্য হয়ে যায়,মাছ নিচিহ্ন হয়ে যায়,পাখি মরে যায়,যদি পশুর বিচরণে জায়গায় বড় বড় বিন্ডিং থাকে, প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংস করে এত উন্নয়ন দিয়ে আমি কি করবো?
আমার মনে পরে, খুব ছোটবেলায় বনে কাঠ কুঁড়াতে যেতাম, তখন কত ঘন জঙ্গল ছিল,ভিতরে ঢুকতে সাহস পেতাম না।আর এখন,বাড়িতে থাকলে সবসময় যাওয়া আসা হয়, বন কি রকম ভাবে নিচিহ্ন হয়ে যাচ্ছে,সেদিকে কারো খেয়াল নেই,বন রক্ষার কোন পদক্ষেপ নেই,পদক্ষেপ আছে তবে ব্লা...ব্লা..ব্লা...আর কিছু নাইবা বললাম।সেদিন চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়ের একটা লেখা পড়ছিলাম মানে অনলাই পবিত্রা থেকে জানতে পেরেছিলাম "যখন বন ছিল, তখন বন বিভাগ ছিল না। বন বিভাগ সৃষ্টি হওয়ার পরেই বন ধ্বংস শুরু হয়েছে ।"
চিন্তা করলে খুব কষ্ট হয়,আমার এই স্বাভাবিক জীবন বন থেকে যে বেড়ে উঠা বনের ভিতরে কত যে শান্তি এই জ্যামের শহর, অযোগ্য শহর,বর্তমান পরিস্তিতি থেকে মুক্তি এবং শান্তির একমাত্র জায়গা হতে পারে এই বন।বনে যায় ঘুরি, বসে থাকি, গান গাই, বনের পাখি দেখি, গাছ দেখি,পানি দেখি,বানর দেখি আরো কত কি যে দেখি মন ভরে যায়, কত যে শান্তি লাগে বলে বুঝাতে পারবো না। বনের ভিতর থেকে হয়তো শুধু টাকা আসবে না কিন্তু শান্তি আরাম সুখ কি টাকা দিয়ে পাওয়া যাবে? যখন গাছগুলো নাই হয়ে যাবে বন ধ্বংস হয়ে পরিবেশের যে ভারসাম্য তা কি রক্ষা পাবে?
বন না থাকলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে, বৃষ্টিপাত কমে যাবে, পানির অভাব হবে, দুর্যোগ নেমে আসবে, আরো কত কি যে হবে কে জানে?
বন না থাকলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে, বৃষ্টিপাত কমে যাবে, পানির অভাব হবে, দুর্যোগ নেমে আসবে, আরো কত কি যে হবে কে জানে?
একটা ভিডিও দেখেছিলাম গাছপালা এবং পানি পরিবেশের সাথে এত অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত যে,স্বাভাবিক পরিবেশ চক্র একবার নষ্ট হয়ে গেলে তা ফিরিয়ে আনা চাঁরটি খানি কথা না।
মূল কথায় আসি...
একজন মান্দি জাতিগোষ্ঠীর সদস্য হিসাবে কাঁধে দায়িত্ব এসে যায়,কিছু করতে হবে, কিছু লিখতে হবে,কিছু বলতে হবে।কিন্তুু কার কাছে বলব কার ভরসায়?
সবচেয়ে দুঃখের জায়গাটা হলো, যে সংগঠন প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো ইকো-পার্ক বিরুদ্ধে,মান্দিদের এবং আদিবাসীদের অধিকার সুরক্ষার নিমিত্তে, সেই সংগঠনের বর্তমান সভাপতি সেখানে উপস্থিত(আমি অবশ্য জানি না বিস্তারিত,তবে উপস্থিত যে সেটাই মূখ্য হিসাবে নিচ্ছি)। আমার কষ্টের জায়গা আমি রাখবো কোথায়?যারা উপস্থিত ছিল আমি তাদের কথা বলবোনা শুধু মাত্র সভাপতির কথা বলতে চাই।
যার কাছে আমার মতো অনেকের, অনেক কিছু আশা থাকে ভরসার জায়গাটা আছে,আমি বা আমরা বিশ্বাস করি যে, আমাদের মাতৃ সংগঠন তার প্রতিষ্ঠাকালীন আর্দশ থেকে বিচ্যুতি হবে না। আর যদি বিচ্যুতি হয়ে থাকে, আমার মতো হয়তো কারো আর বিশ্বাস থাকবে না যে, অদূর ভবিষ্যতে কোন কিছু আর আশা করবো।যদি আশা বা বিশ্বাস না থাকে, সম্পর্কগুলো বা শ্রদ্ধার জায়গা থাকবে কি? হয়তো ভবিষ্যতে এমন কিছু হবে যার জন্য আমরা দায়ী থাকবো না, দায়ী থাকবে যারা আদর্শ থেকে বিচ্যুতি হয়েছে, উনারা।হয়তো আবার কেউ বলে উঠবে,সংগঠনের প্রয়োজনের দিন শেষ,এই সংগঠন আর দরকার নেই।
যার কাছে আমার মতো অনেকের, অনেক কিছু আশা থাকে ভরসার জায়গাটা আছে,আমি বা আমরা বিশ্বাস করি যে, আমাদের মাতৃ সংগঠন তার প্রতিষ্ঠাকালীন আর্দশ থেকে বিচ্যুতি হবে না। আর যদি বিচ্যুতি হয়ে থাকে, আমার মতো হয়তো কারো আর বিশ্বাস থাকবে না যে, অদূর ভবিষ্যতে কোন কিছু আর আশা করবো।যদি আশা বা বিশ্বাস না থাকে, সম্পর্কগুলো বা শ্রদ্ধার জায়গা থাকবে কি? হয়তো ভবিষ্যতে এমন কিছু হবে যার জন্য আমরা দায়ী থাকবো না, দায়ী থাকবে যারা আদর্শ থেকে বিচ্যুতি হয়েছে, উনারা।হয়তো আবার কেউ বলে উঠবে,সংগঠনের প্রয়োজনের দিন শেষ,এই সংগঠন আর দরকার নেই।
আমি জানি না, নতুন করে যে শুরু হওয়া পরিস্তিতি, কে বা কারা জড়িত, যদি আমাদের মধ্যে কেউ থেকে থাকে, আমি বিশ্বাস করি তাকে চরম মূল্য পেতে হবে, পেতেই হবে।হাতে গুণা কয়েক জনের জন্য পুরো জাতিকে মাশুল দিতে হবে, এমনটা তো হতে দেওয়া যায় না, যায় কি?আমি বা আমরা জানি ২০০৪ সালে আমাদের মূল্য দিতে হয়েছে,কিছু নিজের লোকের জন্য, আবার মূল্য দিবো? কিছু মানুষের জন্য। হয়তো এক কথায় বলা যেতে পারে বেইঙ্গমান বা দালাল।যাদের জন্য অদ্ভুত পরিবেশ সৃষ্টি হবে, হয়তোবা!
"চিকমাং থেকে ফের জেগে উঠতে হবে প্রাণ", এই কথা বলছি এই কারনে যে, আজ যদি আমরা আত্ন সচেতন না হয় বা আমরা বুঝতে অক্ষম থাকি আসলে আমাদের সাথে কি ঘটতে চলছে, দূরদর্শিতা পরিচয় না দিতে পারি, আমাদের আর "আবিমায়"থাকতে হবে না।
আমাদের অস্তিত্ব এমনেই সংকটের মুখে, যদি অবুঝের মতো কাজ করি হয়তো অস্তিত্ব তো দূরে থাক যাদুঘরে গিয়ে দেখতে হবে।
আমাদের অস্তিত্ব এমনেই সংকটের মুখে, যদি অবুঝের মতো কাজ করি হয়তো অস্তিত্ব তো দূরে থাক যাদুঘরে গিয়ে দেখতে হবে।
চিকমাং হলো সাংসারেক ধর্ম অনুসারীদের পবিত্র জায়গা, যেখানে মৃত্যুর পর চিকমাং এর উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। এই চিকমাং বলতে আমি বুঝাতে চেয়েছি আমরা যে ঘুমতো অবস্থা আছি বা বুঝেও না বুঝার বান করছি, এই পবিত্র জায়গা রক্ষাতে আমাদের ফের জেগে উঠতে হবে।আমরা যদি জেগে না উঠি আমাদের পবিত্র জায়গা আমরা রক্ষা করতে পারবো না। আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে আবার আমাদের জায়গা রক্ষা করতে হবে।
যদি স্মরণ করি ২০০৪ সালের কথা,যখন পুরো জাতি আন্দোলনে সোচ্চার, সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতিবাদ করেছিল।সেই বার তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে আমরা সক্ষম হয়েছিলাম।পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ আজ পর্যন্ত, এখানে যেগুলো আদিবাসী বিরুদ্ধী কাজ হতে যাচ্ছিল, সেই গুলো বন্ধ হয়েছিল ।
আবার অন্যান্য যে মান্দি গ্রাম গুলো আছে, সেখানে ইকো-পার্ক ইতিমধ্যে হয়েগেছে।সেখানে কি অবস্থা নিজের চোখে না দেখা পর্যন্ত বিশ্বাস হতে চাইবে না।
আমি বিশ্বাস করি,চিকমাং থেকে ফের জেগে উঠতে হবে প্রাণ...
"যখন বন ছিল, তখন বন বিভাগ ছিল না। বন বিভাগ সৃষ্টি হওয়ার পরেই বন ধ্বংস শুরু হয়েছে ।"
ReplyDeletehoi'o
ReplyDelete