ফা রাগেন্দ্র নকরেক (নকমা বা চিজং নকমা)


ফা রাগেন্দ্র নকরেক (নকমা)

Jadil Mri(জাডিল মৃ)
তরুণ লেখক এবং ব্লগার


(এই লেখাটি আপনাদের ভাসা ভাসা ধারনা দিবে)


আচ্চু এবং পার্বণ দা



আমার আচ্চু রাগেন্দ্র নকরেক নকমা।অনেকে "নকমা" বলে আবার অনেকে "চিজং নকমা" বলে ডাকে।
"নকমা" মান্দি(গারো) শব্দ যার বাংলা অর্থ করলে দাঁড়ায় "ধনী বা অতি বিশাল ধনী"। কেন মানুষ জন এমন করে ডাকে কিংবা কেনইবা এমন পরিচিতি লাভ করলো,আমার জানা নাই।আচ্চুর সম্পর্কে এত কিছু বলতে পারবো না,তবে আমার কাছে যা মনে হয় বা হয়েছে সেটা নিয়েই আলাপ করবো।


আমার আচ্চু একজন শৌখিন মানুষ,যা তার বাড়ি গুলো দেখলেই বুঝা যায় এবং পছন্দের ব্যাপার গুলোও সাধারণ মানুষের চাইতে আলাদা যে কজন আমার প্রিয় মানুষ আছে তাদের মধ্যে অন্যতম এই আচ্চু।যদি উনার পছন্দের কথা ধরি খুব অদ্ভুত ব্যাপার হবে, সাধারণ মানুষের মতো না।এবং উনার দূরদর্শী বা বিচক্ষণতারর প্রশ্ন তুলা বোকামির কাজ, যেটা সত্যিই; সত্য।আপনাদের ধারণা দেওয়ার জন্য একটা কাহিনী বলি,"অনেক বছর আগে যখন উনি রাবার গাছ লাগিয়ে ছিলেন।তখন আশেপাশের অনেক জন অনেক কিছু বলাবলি করেছিল এবং তিরস্কার  পর্যন্ত করতে ছাড়েননি।কিন্তুু নিরবে তিনি নিজের কাজ করে গেছেন।যারা উনার বিরুদ্ধে তিরস্কার করেছিল তাদের কে নিয়ে তখন কোন মন্তব্য করেননি।এক সময় গাছ বড় হলো সাদা খস দিতে শুরু করলো।যারা তিরস্কার করেছিল তাদের মুখ বন্ধ,তখন নিজদের তিরস্কারেরর জন্য অনুশোচনা করেছিল বলে, আমার মনে হয়। আচ্চু, কথার মাধ্যমে কোন জবাব দেননি, কাজের মাধ্যমে দিয়েছিলেন।রাবারের চাহিদা কিন্তুু কমে না, বরং চলমান"। 


যে কজন গুণীজন হিসাবে মানি তাদের মধ্যে আচ্চু অন্যতম, উনার প্রাতিষ্ঠানিক কোন সার্টিফিকেট না থাকতে পারে থিওরি পড়া না থাকতে পারে। কিন্তুু উনার
যে অভিজ্ঞতা এবং  ব্যবহারিক যে দক্ষতা, অবিশ্বাস্য বটে।আমি দেখেছি, তিনি কোন চাষবাদে যদি হাত দেন বা চাষ করেন বা কোন কিছু কাজ করতে মনস্থির করনে, তিনি সফল হবেন, এইটা চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যায়।
তিনি যে এত সম্পদশালী হয়েছেন, এইটা কোন কারো দানে নয় বা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া কোন সম্পদ নয়।নিজের বিচক্ষণতা, কর্ম দক্ষতা, আত্ন বিসর্জন, দূরদর্শীতার ফলে এত সম্পত্তি গড়েছেন।যত জন মান্দি(গারো) বিত্তশালী ছিল বা মোড়ল ছিল আমরা যদি পিছন ফিরে তাকায় (পরিচিত জনের ক্ষেত্রে বলছি), তাহলে দেখতে পাবো শুশুর থেকে পাওয়া সম্পত্তি বা দান এই রকম একটা কিছু।সেই জন আমি আচ্চু কে প্রথম সারিতে রাখবো।কারন নিজের চেষ্টায় যতটুকু করতে পেরেছেন, করেছেন। এইটা লোক দেখানোর জন্য বলছি না,   যেটা সত্যি বা আমার জানা সে তাই বলছি।

এই দীর্ঘ সময়ে অনেক সম্পত্তি হাতছাড়া হয়ে গেছেন।কারন কি?কিছু বেইমান লোভী স্বার্থবাদী জন্য আচ্চুকে অনেক কিছু বিসর্জন দিতে হয়েছে।পরবর্তীতে  তাদের বিরুদ্ধে  কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।কারন একটাই "মান্দি'থাং মান্দি'থাং"(নিজের মানুষ)।তিনি কোন ঝামেলার মধ্যে যেতে চাননি এবং যারা অপরাধী  পরবর্তী সময়ে নিজে থেকে অপরাধ স্বীকার করেছে , এমন নজির আমার জানা  নাই।নিজের মানুষের জন্য এত কিছু করার পরেও তিরস্কার সহ্য করতে হয়েছে,অন্য কেউ হলে কি যে হয়ে যেত, শুধু মাত্র ঈশ্বর জানে।সবকিছু তো আর বলা যায় না।আচ্চুর এমনো সময় গিয়েছে, আমরা সকলে প্রবাদটা জানি,এক কথায় বলতে গেলে "যার জন্য চুরি করি,সে কয় চোর"।
অনেক পাল পুরোহিত খ্রিষ্টান বানানোর জন্য বহু বার চেষ্টা করেছে।কিন্তুু আচ্চু এখন পর্যন্ত নিজ ধর্ম "সাংসারেক" ধর্ম পালন করেন।তবে"সাংসারেক"ধর্মে মধ্যেও যে  সীমাবদ্ধ আছেন তেমনটা না,অন্যান্য ধর্ম অনুসারীদের জন্যও নিজের সম্পত্তি দান করেছেন  এবং কারো যদি কোন কিছু প্রয়োজন হয় চাইলে না করেন না।তাঁর সাধ্যমতো দিতে চেষ্টা করেন।

উনার কাছে এমন মূল্যবান জিনিস আছে যা সত্যিই ঐতিহাসিক ভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের জন্য আমাদের জাতির জন্য।তিনি যে এই সব জিনিস সংগ্রহ করে রেখেছেন অদূর ভবিষ্যতে এই সব পাওয়া আর সম্ভব হবে না।মধুপুরে তো অনেক দিন আগে ঝুম চাষ বন্ধ হয়ে যায়, সেই পাকিস্তান আমলে। উনার কাছে এখনো ঝুম ধানের বীজ রয়েছে, আমি সেদিন মাত্র ঝুম ধান খেয়ে দেখেছি।এখন সেই ধান বেশ খাওয়া যায়।

(..........চলবে)

No comments

Theme images by saw. Powered by Blogger.