আবদ্ধ জীবন....গুলশানে এসে মুক্তি!


Jadil Mri


আবদ্ধ জীবন....গুলশানে এসে মুক্তি!


অনেক সময় ক্যাম্পাস জীবনটা কে বিরক্তিকর মনে হয়, অজানা কারনে। কেন জানি আবার আবার মনে হয়, যদি ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে অনেক দিনের জন্য দূরে কোথাও যাওয়া যেত,যদি যেতে পারতাম, খুব জোর বেঁচে যেতাম।মাঝে মাঝে খুব আপসোস লাগে, আমাদের বড় ভাইরা ক্যাম্পাস(ভিন্ন ক্যাম্পাস) ছেড়ে বাড়িতে আসতে চাইতো না।কারন কি? তাদের ক্যাম্পাস জীবনটাই উপভোগের জায়গাটা ছিল। ক্যাম্পাসেরর মধ্যে এমন কিছু হয়তো খুঁজে পেয়েছিল যার কারনে বাড়ির কথা একদম মনে পড়তো না।আমার মনে হয়, তাদের জীবন স্টাইল বা ক্যাম্পাসেরর যে আমেজ আমি পাই নাই।তাদের কথা শুনে যে রকমটা উপভোগের জায়গাটা ভেবেছিলাম, তাদের মতো করে যে অনেকগুলো কাজ সাধনের যে চেষ্টা বা ইচ্ছা সেটা কোনটাই হয়ে উঠেনি।

সুতরাং, আমি যা করতে চেয়েছিলাম বা ভেবেছিলামম তার মধ্যে কিছু অংশ বাস্তবায়নে স্বার্থক হয়েছি।যাই হোক, জানি চাইলেও তাদের মতো করে উপভোগ করতে পারবো না।তবে যতটুকু পারা যায়, নিজের মতো করে উপভোগের চেষ্টা করি।আমার কাজকর্ম একদম যে খারাপ যাচ্ছে,তেমনটা না।আমি যে কাজগুলো মানে আমরা যে অনেক পরিকল্পনা করেছিলাম সেই গুলোই বাস্তবায়ন করে চলছি।অবশ্য এই ক্যাম্পাসে না আসলে হয়তো স্বপ্নগুলো অনেক আগেই মারা যেতো।মোটামোটি কাছের মানুষ আপনজন অনেক পেয়েছি, বলা যেতে পারে ভাগ্যের ব্যাপার(আমি নাম মেনশন করবো না)।

আমার উপরে যারা আছে মানে বড় দিদি বা দাদা এছাড়াও সহপাঠী ছোট ভাই বোন আমাদের মাঝে অনেক মিল খুঁজে পাওয়া যায়।সবার সাথেই যে একবারে মতের মিল হবে সেটা বলছি না,অনেক ক্ষেত্রেই যায় আরিকি, আবার কারো কারো সাথে পুরোপুরি মিলে যায়।তার পরেও কমন যেন এক ঘেয়েমি লাগে,মুক্তি চাই মুক্তি চাই এমন ভাবটা চলে আসে।

মনে মনে অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছিল,কবে যাবো প্রোগ্রামে, কবে নতুন কিছু শিখবো, আমার জানা দরকার,আমার শিখা দরকার,আমার ঘুরা দরকার, আমার যোগাযোগের জায়গাটা আপডেট রাখা দরকার,আমার "জুমাং'খো রিম্ম'না'র জন্য ডনার দরকার,আমাদের স্কুলের জন্য আরো কিছু করতে হবে,স্কুল বাড়াতে হবে, কাজ করা দরকার নতুন কিছু,উদ্যোক্তা হবো,আইডিয়া দরকার.....
ব্লা ব্লা ব্লা.........ব্লা..ব্লা....আরো কত কি!

 গুলশান ১



আজ আমি গুলশান-১, লেকের পাড়ে দাঁড়ি আছি।এখন মনে হচ্ছে আমার অনেক দিনের পর  মুক্তি মিলেছে।আমি অনেক বছর আবদ্ধ ঘরে ছিলাম,চার দেওয়ালের ভেতর আমি ছটফট করেছি মুক্তির অপেক্ষায়, আমি আজ মুক্ত স্বাধীন।এখানে এসে আমি, নতুন করে স্বপ্ন চাষের জায়গা পেলাম। এখানে প্রথমে এসে যেটা মনে হয়েছে, আমার বা আমাদের স্বপ্ন গুলো অনেক উর্বর যেখানে শুধু মাত্র যত্ন দরকার আরো দরকার দেখাশুনা করা, এইটুকুই।

সবচাইতে যেটা বেশি মনে হয়েছে বা মনে ভিতরে দাগ কেটেছে সেটা হলো আমরা কতটা পিছিয়ে আছি।বর্তমান তরুণ(এখানে নারীদেরও বুঝানো হয়েছে) প্রজম্ম, এত আপডেট এবং এই ছোট বয়সে এত ইউনিক ইউনিক আইডিয়া বের করছে,তার সাথে সমান তালে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, আমি শুধু মাত্র অবাক হয়েছি,জাস্ট আওয়াও!সত্যি, তাদের সাথে যদি তুলনা করি বা নিজেকে মূল্যায়ন করি সে ক্ষেত্রে আমি কিছুই না।কারন এত বছর হয়ে গেল, আমি কি করেছি? আমরা কি করেছি?বর্তমান সময়ে তারা যেমন আপডেট বা নতুন কিছু করার যে পরিকল্পনাগুলো হাতে নিচ্ছে, সেই হিসাবে আমি বা আমরা খুবই নগণ্য। 


গুলশান 


সেই ক্ষেত্রে তাদের সাথে তুলনা না দিয়ে যদি যারা এখন কিছু করে না বা করতে চেষ্টা করে না তাদের সাথে তুলনা করলে অবশ্য আমরাই এগিয়ে আছি।হাহাহহাহাহাহহাহাহহাহাহহা।

পাঁচদিনের প্রশিক্ষণে এসে অনেক কিছুই মনে হচ্ছে, হয়তো আরো অনেক কিছু মনে হবে কারন মাত্র তো দ্বিতীয় দিন শেষ হলো।আশা করি বাকি দিনটাও ভালো যাবে, আর নতুন কিকি যে অপেক্ষা করছে আমি শুধু মাত্র অপেক্ষায় আছি।আমি অবাক হতে চাই,কারন আমি নতুন কিছু ভালোবাসি, আমি নতুন কিছু করতে চাই।


যুব সংগঠন উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ
২৭-৩১ মার্চ ২০১৯
প্রোগ্রাম:Actionaid.

No comments

Theme images by saw. Powered by Blogger.