আমার বর্তমান এবং ভবিষ্যত



আমার বর্তমান এবং ভবিষ্যত

Jadil Mri ( জাডিল মৃ)
তরুণ লেখক এবং ব্লগার



Jadil Mri




ঘড়িতে এখন বাজে ঠিক রাত ২:০০ টা। ক্যাম্পাসে কলাবাগান নামক জায়গায় বসে আছি, আমরা প্রায় আট দশ জন মিলে।কলাবাগান নামক জায়গায় যদিও এখন কলা গাছ নেই তবে আগে ছিল, কিন্তুু নামটা রয়েগেছে সবার মুখে মুখে।ক্যাম্পাসের মধ্যে যে দুই জায়গায় ভালো চা পাওয়া যায় তার মধ্যে কলাবাগান একটি। আজকে চা খাওয়ার জন্য মেস থেকে এত দূর পর্যন্ত চলে আসা,শুধু মাত্র লাল চা'র সাথে লেবুর পাতা। কি অসাধারণ চা, এক কাপ খেলে মন ভরে না মনে হয় আরেক কাপ খাই।সচারচর কলাবাগানে আসা হয় না যখন মনে হয় যাই বা খুব প্যারা প্যারা লাগে তখন মাঝে সাঝে যাই।আসল কথা হচ্ছে যে চা বানায় তার হাত ভালো,কেউ এত সহজে আরামদায়ক বা স্বাদবোধ বা মজা করে বানাতে পারে না।অন্য সব যে জায়গায়  চা গুলো খাই সেই গুলো খাওয়ার জন্য শুধু খাওয়া, মনের তৃপ্তি জিনিসটা আসে না।



আজকে খোলা আকাশের নিচে বসে চাঁদ দেখছি আর তারা গুলো গুণার চেষ্টা করছি।কোথায় কোথায় গিয়ে যেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে পরে যায়, তারা কি গুণা সম্ভব নাকি!হাহাহাহাহাহা.... মাঝে মাঝে নিজেকে পাগল মনে হয়।আমি জানি তারা গুণা সম্ভব না তবুও বৃথা চেষ্ট করি, কি আজব ব্যাপার তাই না।এই দুই আড়াই বছরে ক্যাম্পাস কেমন করে যেন বদলে গেছে মনে হয় এই বুঝি কিছু দিন আগে মাত্র আসা।কিন্তুু এই কিছুদিন মানে তো অনেকদিন, আরো কিছুদিন চলে যাবে ক্যাম্পাসের চেহারা আরো বদলে যাবে।রাস্তাঘাট, দোকানপাট,বড় বড় বিন্ডিং, সৌন্দর্য খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে,আসলেই কি সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাচ্ছে!!   কেমন ছিল জায়গাটা, আমাদের ক্যাম্পাস মূলত শহরের থেকে অনেক দূরে অবস্থিত। এখানে মানুষের বসবাস নেই বলতেই চলতো।কিন্তুু আজ চারিদিকে এত মানুষ আর মানুষ। জমির দাম কেমন ছিল আজ তার শতগুণ, ব্যাপারটা হচ্ছে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে আশেপাশে মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে।যেহেতু আয় বেড়েছে, জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাচ্ছে।কিন্তুু শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে যেমন পারছে টাকা নিচ্ছে মানে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে সেটা ভ্যান বা অন্যান্য যানবাহন বা দোকানপাট বা অন্য কিছু? খাবারের কথা নাইবা বললাম।খাইতে গেলে মনে হবে মায়ের হাতে রান্না কি স্বাদ, মনের তৃপ্তিতে আর খাইতে ইচ্ছ করবে না।



আমাদের ক্যাম্পাসের অনেক কিছুর সংকট রয়েছে, সেটা আমারো ব্যর্থতা ধরা যায়।কারন আমি সংকটের কথা বলছি,কিন্তুু একদিনও দাবিদাওয়া পেশ করিনি বা এমন কিছু উদ্যোগ নিতে পারিনি  যা কিনা কোন একটা কিছুর সংকটের আংশিক বা পুরোপুরি লাঘব হবে।আমাদের ক্যাম্পাস কল্পনার চাইতে বা আশার চাইতে  অনেক ছোট, কেমন গিজগিজ করে দালানকোঠা গড়ে উঠছে।ফলত এটাকে পরিকল্পিত বলা যায় না,আমার কাছে তাই মনে হলো, আরিকি!নতুন তো তাই বেশি কিছু আশা করছি না, সত্যি কি তাই!! ক্যাম্পাস যেহেতু বেশি দিনের নয় সেহেতু বড় বড় গাছপালা নাই বললেই চলে।যেগুলো আছে প্রত্যাশার তুলনায় অনেক ছোট, কবে যে বড় হবে একটু আরামে বসে থাকতে পারবো কেন জানে!আমি যে এত বড় বড় কথা বলছি,নিজে গিয়ে কিন্তুু একটা গাছ পর্যন্ত লাগাই নাই।বড় বড় কথা অথচ কাজের বেলায় কিন্তুু নাই,এই হচ্ছে আমার মতো মানুষের অবস্থা।



আমাদের ক্যাম্পাসে বা ক্যাম্পাসের ভিতরে নির্দিষ্ট আড্ডার জায়গা গড়ে উঠেনি,আমি কোন আড্ডার কথা বলছি বুঝে নেন,তবে এইটুকু বলতে পারি.... প্....্র....গ...ত....ি....শ.....ী....।ল.... মু.....ক.....্...ত...ম....ন.....া...........



কোথায় জানি ছিলাম,তারা এবং চা। কি লিখতে গিয়ে কি লিখে ফেলি কোথা থেকে যে আসে এত শব্দ এত বাক্য এত কথা... ব্লা...ব্লা...


জানতো, চা খাওয়াটা এক বড় নেশা,ক্যাম্পাসে আছি চা খাওয়া হবে না এমনটা হতে পারে না, দিনে ৩/৭ কাপ তো থাকেই।চায়ের পিছনে মাসে কত যে খরচ হয়, কে জানে!  ঈশ্বর বাঁচাও ।চায়ের পিছনে এত টাকা?



এই যে আমি বসে আছি, আমরা এত জন,কিন্তুু ভবিষ্যতে কে কোথায় যাবে কার কি ক্যারিয়ার বা চাকরি হবে কিনা বা চাকরি করবে কে উদ্যোগতা হবে কে জানে?অনিশ্চয়তা ভবিষ্যত নিয়ে আমরা বসে আছি।বিভিন্ন এলাকা থেকে আমরা এসেছি একত্রিত হয়েছি শুধু মাত্র এক মুঠো  খাদ্য সংগ্রহের জন্য,যেন ভবিষ্যতে আরামে খাদ্য  পাওয়া সহজ হয়।ইনকাম যেন একটু বেশি থাকে, একটা অবস্থানে যেতে পারি,যাকে বলে সম্মানজনক অবস্থায়।



জীবন কত অদ্ভুত তাই না,"এখন বসে আছি, বর্তমান সময় পার করছি, এই বর্তমান সময় পার করতে না করতেই অতীত হয়ে যাচ্ছে। আবার বর্তমানে বসতে না বসতেই ভবিষ্যত সময় চলে আসে, এক সেকেন্ড করে আসতে আসতে কত সময় যে আসে যায়, যার কোন ইয়ত্তা নেই"।



বর্তমান সময় আমার কাছে খুব গুরুত্ববহ মনে হয়,তবে কেন মনে হয় সেটা জানি না,কিছু যুক্তি দাঁড় করানো যাক। এই যেমন বর্তমান সময়ে বিচক্ষণতা চিন্তা, সুদূরপ্রসারী ভাবনা,কাজ কর্ম, লেখাপড়া, ভুল,শেখার ইচ্ছা,ভালো কাজ, সৎ, মিতব্যয় প্রভৃতি  নির্ধারণ করে ভবিষ্যত কি হবে এবং কেমন দিন যাবে, সফলতা আসবে কিনা আবার জীবনটাকে ৩৬০ ডিগ্রী ঘুরিয়ে দিতে পারে, তেমনি বর্তমান ভালো - মন্দ, পাওয়া না পাওয়া,কষ্ট - খুশি,প্রেম - ভালোবাসা, বোকা-চোদা সবকিছুই অতীত হয়ে যায়।মানে এই বর্তমান সময় অতীত এবং ভবিষ্যত কে নির্ধারণ করে।হয়তো অনেকে আমার যুক্তির সাথে এক মত না, হয়তোবা!



সেই জন্যে যদি কোন কাজ করেতে চাও বা করার ইচ্ছা বা করবে তা এখনি সময়। সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে থাকো, সেটা কোনদিন আসবে না,কোনো দিনও না।এখনি সময় শুরু করার,প্রথমে হয়তো ব্যর্থ হবে। তাই বলে হাল ছেড়ে দিলে চলবে না লড়াই করে যাও একদিন না একদিন তুমি সফল, যে কোন কাজ করো না কেন,কিন্তুু কাজটা পজিটিভ হতে হবে,এই আরিকি।



যেহেতু অতীত সেটা অতীত হয়ে যায়,সেহেতু এত গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না, তবে অনেক ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে।যাই হোক না কেন,বর্তমান এবং ভবিষ্যত নিয়ে মাথা ঘামানোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এখন...তবে..



তবে...যে যাই বলুক.. বর্তমান.. বর্তমান... এবং বর্তমানকেই আমি আগে রাখবো।



No comments

Theme images by saw. Powered by Blogger.