হস্ত শিল্পের মাস্টার "বাবলু নকরেক"

হস্ত শিল্পের মাস্টার "বাবলু নকরেক"

 জাডিল মৃ(Jadil Mri)
তরুণ লেখক এবং ব্লগার




কাপ্তাই লেক,রাঙামাটি। 






(বি:দ্র-উনার সম্পর্কে যদি আরো জানতে চান,তাহলে কবি পরাগ দার আরেকটা লেখা আছে সেটা পড়তে পারেন।আমি শুধু বাদ বাকি গুলো লেখার চেষ্টা করেছি।)

প্রেমের কাহিনী দিয়ে শুরু করি..

 প্রেমের সমাপ্তির হয় বিয়ের মাধ্যমে,প্রথমে প্রেমের বিয়ে এত সুখকর ছিল না, কঠিন সময় পার করতে হয়েছে, অনেক আত্ন বির্সজন দিতে হয়েছে। দীর্ঘ ১১ বছর বিয়ে মেনে না নেওয়ার পর, শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েছিল,মেনে নিতে। এখন উনার ছোট সংসার, সুখের সংসার।তিন জন মেয়ে ছেলে লেখাপড়া করছে। সিনবিয়া দালবৎত  এইচ,এস,সি পাশ করেছে, গিসিক দালবৎত চট্রগ্রামে পড়াশুনা করছে এবং সবার ছোট বিশাল দালবৎত চতুর্থ ক্লাশে পড়াশুনা করছে।



উনার জীবন কাহিনী সম্পর্কে, আজ আমি আপনাদের সংক্ষিপ্ত আকারে  জানাবো।

আগেই বলেছি প্রেমের বিয়ে,১৭ এপ্রিল ১৯৯৩ সালে।তখন আমার জম্ম পর্যন্ত হয়নি,জম্ম হয়েছে আরো অনেক বছর পরে।নতুন বিয়ে, নতুন সংসার,সবকিছু গুছিয়ে নিতে হবে,সেই জন্য ১৯৯৪,১৯৯৫,১৯৯৬ সালে দিকে আনারসের ব্যবসা শুরু করেন।ব্যবসাতে তেমন সফল হতে না পেরে ঢাকায় চলে যান।ঢাকায় গিয়ে দেখেন, হাতে কাজ করে এমন অনেক সুন্দর সুন্দর হস্তশিল্প, যা তিনি নিজেই বানাতে পারেন। এখান থেকেই পথ চলা শুরু,নিজেই সিদ্ধাত নেন, হাতের কাজের মাধ্যমে একটা ব্যবস্থা হোক।ফলে, ১৯৯৮ সালের দিকে মাত্র ৩/৪ জন নিয়ে কাজে লেগে পড়েন,সাফল্য আসতে থাকে, অর্ডার বাড়তে থাকে।প্রচুর পরিমাণে চাহিদা থাকার কারনে ২০০৩/৪ সালের দিকে উনার কাজের লোক বেড়ে যায়,তখন ৭ জন ৮ জন ১০ জন করে প্রতিদিন কাজ করতে থাকে।প্রচুর অর্ডার থাকার কারনে ২০০৮ সাল থেকে ২০১৩/১৪ সাল পর্যন্ত প্রতিদিন ৩০ জনের অধিক কাজ করে ।



তিনি অনেক জনের কর্মস্থানের পথ খুলে দেন,আদিবাসীরা যেন বেকার না থাকে, সেই জিনিসটাই চাইতেন।তিনি আক্ষেপ করেন বলেন,এত সুন্দর কাজ কেউ করতে চাই না,কলা বাগানে কাজ করতে রাজি হয়,কিন্তু এই সব কাজ করতে চাই না।তিনি বলেন,অন্যন্য কাজের মতো সমান মজুরি দিই,কিন্তুু তারা কলাবাগান, আনারস বাগানে কাজ করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।তার কাছে জানতে চেয়েছিলামম, এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে বা এখন পর্যন্ত কোন কোন সমস্যায় পড়তে হয়েছে।তিনি বার বার কর্মী বা কাজের লোকের কথা বলেন, কাজের লোক পাওয়া যায় না।তবুও তিনি নিজের সাধ্যমতো প্রতিদিন কাজ করে চলছেন।তিনি বলছিলেন,শীত কালে অর্ডার থাকে বেশি এবং কাজের পরিধি বেড়ে যায়।উনার কর্মস্থলে তিনি অনেক জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন,দেশ বিদেশ থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার কাজ দেখতে আসে এবং শিখতে আসে।
কথার চলে বলছিলেন,আমারো অনেক স্বপ্ন ছিল, আমার হস্তশিল্পকে অনেক বড় করবো,কিন্তুু কর্মীর অভাবে তা করতে পারিনি।



প্রথমে উনার উঠে আসার গল্পতা সহজ ছিল না,নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে আজ তিনি সফল উদ্যোক্তা।এই দীর্ঘ ২২ বছর কর্ম জীবনে মানুষের ভালোবাসা এবং বিশ্বাস স্থাপনে সক্ষম হয়েছেন।বিশ্বাসযোগ্য আরেক নাম, "বাবলু নকরেক",উনার যদি মনে হয় তার পক্ষে অর্ডার নেওয়া সম্ভব না তাহলে  অর্ডার নেন না।তিনি কোন ক্রেতা বা অর্ডার দাতাকে প্রতারিত করতে চান না।



কর্মময় জীবনে এই পর্যন্ত চারটি দেশ ঘুরেছেন,ভারত,নেপাল,ভুটান এবং মালোয়েশিয়া।



একটা কথা শুনে খুব আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলামম,তিনি বলছিলেন সার্ক ভুক্ত দেশের মধ্যে হস্তশিল্পে তিনি প্রথম স্থান লাভ করেছিলেন।আপনাদের জানার সুবির্ধাতে  ছবি সহ নিচে প্রমাণ দেওয়া হলো।আর উনি বিভিন্ন ধরনের পুরস্কার পেয়েছেন, সফল উদ্যোক্তার স্বীকৃতি মিলেছে।

















আমার জানা মতে, তিনি এই পর্যন্ত ১১৩ টার মতো আইটেম তৈরি করেছেন,কোনটাতে লাভ হয়েছে আবার কোনটাতে লাভে অংক শূণ্য। আপাতোত যে জিনিস গুলো থেকে লাভ কম হয় তা উপাদন বন্ধ রেখেছেন।আমাদের জন্য বা আমাদের কাছে তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, এক কথায় বলতে গেলে আমাদের সম্পদ।কারন, উনি ছিলেন আছেন বলেই এত সুন্দর সুন্দর হস্তশিল্পে কাজ আমরা পাচ্ছি, এক মাত্র তিনিই আমাদের ঐহিত্য গত হস্তশিল্প ধরে রেখেছেন। হস্তশিল্পের এই বিশাল ভান্ডার ও বাজার মার্কেট, আমরা ইচ্ছা করলেই ধরতে পারি।




উনার কাজ গুলো সত্যিই দারুণ সুন্দর, মন ছুঁয়ে যায়।কিছু কিছু কাজের আইটেম নিচে দেওয়া হলো।





















আরো অনেক আইটেম আছে।

2 comments:

  1. উনাকে, মানে বাবলু নকরেক' কে কোথায় গেলে পাওয়া যাবে?

    ReplyDelete
    Replies
    1. পীরগাছা.. মধুপুর, টাংগাইল।

      Delete

Theme images by saw. Powered by Blogger.