"রংচুগাল্লা " একটি অপরিচিত নাম।




"রংচুগাল্লা " একটি অপরিচিত নাম।
জাডিল মৃ(Jadil Mri)
তরুণ লেখক এবং ব্লগার


আ'বিমা




রংচুগাল্লা আমার কাছে অপরিচিত কোন শব্দ নয়,ছোটবেলা থেকেই রংচুগাল্লা দেখে এসেছি।রংচুগাল্লা আমার কাছে প্রাণের উৎসব, যেমন "ওয়ানগালা"।বর্তমান সময়ে ওয়ানগালা আমাদের কাছে অতি পরিচিতি একটি শব্দ, কারন যেখানে সেখানে এখন ওয়ানগালা পালন করা হয়, তবে বিকৃত ভাবে।কিন্তুু রংচুগাল্লা যেখানে সেখানে পালন করা হয় না, ফলত শব্দ অপরিচিত হবে, সেটাই স্বাভাবিক। এই বর্তমান সময়ে এসে রংচুগাল্লা  কোথাও পালন হয় কিনা, সেটা জানি না, তবে আমার জম্মভূমি, আমাদের আবিমাতে এখনো পালন হয়।মাঝখানে রংচুগাল্লা কমে গিয়েছিল, ইদানিং আবার তা বেড়েছে।বেশি যে বেড়েছে তা কিন্তুু নয়,সব গ্রামে এখনোও পালন করা হয় না।কিছু কিছু নির্দিষ্ট জায়গা আছে, যেখানে প্রতিবছর পালন করা হয়।গতবার রংচুগাল্লা তে থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল, এইবার তা হয়নি।শুনেছি, আরেকটা গ্রাম এখনো বাকি মানে "রংচুগাল্লা "হবে।



যতদূর জেনেছি, কিছু কিছু জায়গায় রংচুগাল্লা' র পর্ব শেষ, যেমন চুনিয়া, বন্দরিয়া, জয়নাগাছা,থানারবাইদ  প্রভৃতি গ্রামে।আরো অনেক জায়গায় হতে পারে আমার তা জানা নেই।
আমার জানা মতে, যদি বলি অরিজিনাল "ওয়ানগালা"কোথায় পালন হয়,তাহলে বলবো, "চুনিয়ায়"।ঠিক তেমনি রংচুগাল্লা এখন পালন হয়,রংচুগাল্লা'র মতোই।



আগে জেনে নিই, রংচুরংচুগাল্লা কি?




রংচুগালা হলো মান্দিদের ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব; ওয়ান্নার ঠিক আগের একটা কৃত্যের নাম। হাবা বা জুম ক্ষেত থেকে ধান তোলার পর তা মাড়াইসহ অন্যান্য কাজ সমাধার পরই মান্দিরা আয়োজন করতেন রংচুগালার। রংচুগালা না করে অর্থাৎ দেবতা মিসি আর সালজং এর উদ্দেশ্যে রংচু বা চিড়া উৎসর্গ না করে নতুন ধানের ভাত রান্না করে খাওয়া সাংসারেক ধর্মীয় মতে নিষিদ্ধ। হাবাহুয়া বা জুম চাষ নিষিদ্ধ হয়েছে সে অনেক আগেই আর বর্তমানে প্রায় ৯৯ শতাংশ মান্দিই যিশুকে প্রভু হিসেবে মেনে নিয়েছেন, কিন্তু তারপরেও গুটিকয়েক সাংসারেকদের হাত ধরে মধুপুরে আজও টিকে আছে রংচুগালা, ওয়ান্নাসহ সাংসারেক ধর্মের অনেক কিছুই।

(জুয়েল দার ব্লগ থেকে)



রংচুগাল্লা'য় একটা ব্যাপার আছে,মূলত ওয়ানগালা পালন হয় "নকমা'র" বাড়িতে।কিন্তুু রংচুগাল্লা পালন হয় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে,এই যেমন একটা বাড়িতে কিছুক্ষণ বসলো তারপর আরেকটা বাড়িতে, ঐহিত্যগত বাদ্যযন্ত্র বাজতে থাকে, কি শ্রুতিমধুর মিউজিক,মনে হবে নিজেও একটু বাজিয়ে দেখি।বাজনার তালে তালে সবার জন্য চু বিতরণ করা হয়, এখানে আবার প্রতিযোগিতা থাকে কার বেশি চু ভালো হয়, কার চাইতে বেশি মানুষকে সন্তুষ্ট করতে পারে।




ঐহিত্যগত অনুষ্ঠান পালনে কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই,আমাদের তরুণদের মনে তো একেবারেই নেই,কতিপয় বাদে আরিকি।কত কি কথা বলি, এই করতে হবে, সেই করতে হবে, কই কি করি??
যাই হোক, আমি বিশ্বাস করি, ওয়ানগালার মতো রংচুগাল্লা'ও একদিন জনপ্রিয়তা পাবে মানে যেখানে সেখানে পালন হবে,আরিকি!




No comments

Theme images by saw. Powered by Blogger.