আদিবাসীদের জুম চাষ।জাডিল মৃ।


ছবি-জুম চাষ।


আদিবাসীদের জুম চাষ

জাডিল মৃ


সরকারি নথিভুক্তে ৫০টি'র মতো আদিবাসীদের কথা বলা হয়েছে।আদিবাসীদের সম্পর্কে নানা মত,নানা বির্তক,নানা সূত্র, আলোচনা সমালোচনা তো রয়েছেই।তবে "জুম চাষের" সঙ্গে আদিবাসীরা যে ওতোপ্রোত ভাবে জড়িত ছিল ও এখনো সম্পর্ক আছে,তা নি-সন্দেহেই বলা যায়।আদিবাসীদের জুম চাষ সম্পর্কে আমাদের মধ্যে;অনেকের মনে দ্বিধাবোধ কাজ করে। কারণ জুম চাষ নিয়ে অনেকেই অনেক ভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত কারণে অনেক  সময় খুব নেতিবাচক ভাবে উপস্থাপন করেছেন,করে চলেছেন বিধায় অনেকে ভাবতে বাধ্য হয় জুম চাষ পদ্ধতি,কৃষির জন্য খারাপ পদ্ধতি।আজকে আদিবাসী শব্দ নিয়ে আলোচনা মূল বিষয় নই, আজকের আলোচনার বিষয়বস্তুু "জুম চাষ"।


আপনারা চাইলেই "জুম চাষ"সম্পর্কে ইন্টারেনেট থেকে জেনে নিতে পারবেন। তবে সেটা করার আগে আমার অনুরোধ থাকবে, অ-আদিবাসী এবং আদিবাসী লেখকদের লেখা পার্থক্য করে দেখবেন।এবং সুচিন্তিত ও নিজের বিচার বুদ্ধিতে কী বলে ভাববার চেষ্টা করবেন।তাহলে মনে হয়,ব্যাপারটা বুঝার ক্ষেত্রে সহজ হবে।সমতল আদিবাসীদের ক্ষেত্রে জুম চাষের প্রথা সরকার বন্ধ করেছে;অনেক আগেই।তবে তিন পার্বত্য চট্রগ্রাম খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙামাটি জেলায় এখনো সেখাকার স্থানীয় আদিবাসীরা জুম চাষ করে এবং জুম নির্ভর কৃষি।আবার অনেক আদিবাসীদের জুম কেন্দ্রীক উৎসব রয়েছে;যা সত্যিই আত্নাতিক,ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক কৃত্য ও কৃত্যকেন্দ্রিক আচার অনুষ্ঠান।
 
জুম চাষকে চাকমা ভাষায় জুম, মারমা ভাষায় ইয়াঁ, ত্রিপুরা ভাষায় হুগ, ম্রো ভাষায় উঃঅ, খিয়াং ভাষায় লাই, বম ভাষায় লাও,গারো ভাষায় হা'বাহুআ বলা হয়।

'জুম চাষ' সাধারণত একটি স্থানান্তরিত পদ্ধতি। কেন না যেখানে এক বার জুম চাষ করা হয় সেখানে ১৫ থেকে ২০ বছর বা তারও অধিক সময়ের পরে আবার পুনরায় জুম চাষ করা হয়।কারণ জুম চাষের পরে আবার যেন গাছগুলো বড় হয়,পশুপাখিদের আবাস্থল অক্ষুণ্ণতা থাকে,প্রাকৃতিক ভারসাম্য যেন থাকে,পরিবেশে যেন নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে,সেই দিকে খেয়াল রাখা হয়।
জুম চাষে ধান,গম,ভুটা,সিম,মিষ্টিকুমড়া, সসা,তুলা বিভিন্ন ধরণের শাক-সবজি রোবণ করা হয়।যা কিছুই উৎপাদিত হবে সবকিছুই প্রাকৃতিক,কোন সার বিষ কিংবা প্রকৃতির জন্য ক্ষতি এমন কিছু ব্যবহার করা হয় না। আদিবাসীরা বিশ্বাস করে মাটির প্রাণ আছে।তাই তো মাটি যেন ব্যাথা না পাই সেই জন্য জুম চাষের সময় সামান্য গর্ত করে বীজ রোপণ করা হতো।অনেক আদিবাসী জুম চাষের আগে কিংবা পরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে থাকে যেন প্রকৃতির ভারসাম্য থাকে এবং দেবতারা সন্তুষ্ট থাকে।

বর্তমান কৃষি ব্যবস্থা আধুনিক হলেও কতটুকু মানব শরীরে জন্য উপকারী এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সুষ্ঠ দেহ গঠনে কতটা কার্যকারী তা চিন্তার বিষয়।যদি জুম চাষের সঙ্গে বর্তমান কৃষির ব্যবস্থার ফ্রেশ ফসল বা চাষ পদ্ধতি পার্থক্য করেন।তাহলেই সহজেই পার্থক্যের কারণ দেখতে পাবেন।

আদিবাসীদের জুম চাষ পদ্ধতি প্রকৃতির কোন ক্ষতি করে না বরং প্রকৃতির ভারসাম্যতা বজায় রাখে।




1 comment:

Theme images by saw. Powered by Blogger.