আমার ছোটবেলার ইশকুল (স্কুল), স্মৃতি হাতড়ে বেড়ায়।। দ্বিতীয়(২য়) পর্ব।।জাডিল মৃ।।


আমার ছোটবেলার ইশকুল (স্কুল), স্মৃতি হাতড়ে বেড়ায়।। দ্বিতীয়(২য়) পর্ব।।জাডিল মৃ।।



জাডিল মৃ(Jadil Mri)
তরুণ লেখক এবং ব্লগার


ছবি-ম্যাডামের সাথে।




প্রথমেই বলে রাখি, এই ইশকুলটি 'চার্চ অব বাংলাদেশ' দ্বারা পরিচালিত এবং একটি মিশনারি  ইশকুল।যে ইশকুলটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে।সময়ের দাবিতে এখন ইশকুল'টি হাই স্কুল হওয়ার প্রযোজ্য যা ইতিমধ্যে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত চালু হয়েগেছে।আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, আমাদের গ্রাম সহ আশপাশ গ্রামের মেয়ে-ছেলেরা দর দুরান্তে গিয়ে এখন আর পড়াশুনা করতে হবে না।যেমন তাঁদের কষ্ট লাঘব হবে তেমনি সুবিধাও পাবে এবং স্কুলের কারণে গ্রামের মানুষর চাকরির সুযোগ তৈরি হলো।



প্রথমেই যার সাথে ছবি দেখছেন, উনি আমার ম্যাডাম। উনার সাথে স্মৃতির পাতায় বড্ড বেশি পৃষ্ঠা নেই।তবে উনার অবদান এবং ভালোবসার মুহূর্তর কোনদিন ভুলার মতো নয়।প্রাইমারি পড়ার সময়ে যে ম্যাডামগণ প্রিয় ছিল তার মধ্যে উনি অন্যতম।
কাজের সূত্রে অনেকদিন বাদে প্রাইমারি স্কুলে গিয়েছিলাম।স্কুলে চেহারা একি আছে তবে খারাপ লেগেছে একটি বিষয়ে।কোন একদিন খারাপ লাগা নিয়ে আলোচনা করবো।ম্যাডামের  সাথে দেখা হওয়ার কথা বলি..


সেদিন হঠাৎ করেই ইশকুলে গিয়েছিলাম ছোটভাই কে নিতে।পরিকল্পনা ছিল তাকে নিয়ে দাওয়াত খেতে যাবো।ক্লাশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায় না। তাই বসে বসে স্মার্টফোন টিপাটিপি করেছিলাম,কিন্তুু সময় কাটছিল না।তাই সিদ্ধাত নিলাম অফিসে ঢুকে ম্যাডামের সাথে দেখা করি।সাহস হচ্ছিল না, তবুও গেলাম।অফিসে ঢোকার অনুমতি প্রার্থনা করলাম। সাথে সাথেই অনুমতি পেয়ে গেলাম।ম্যাডাম কে জিজ্ঞাসা করলাম,'ম্যাডাম আমাকে চিনতে পারছেন কীনা'?ম্যাডাম হাসি মুখে উত্তর দিলো,'তোমাকে কেন চিনবো না!তুমি আমার ছাত্র।তুমি জাডিল'।ম্যাডামের চিনতে পারাতে আমি নিজেই অনেক খুশি হলাম।এত বছর পরেও ম্যাডাম আমাকে মনে রেখেছে।পরক্ষণেই চিন্তা করছিলাম, মনে রাখার মতো তো কিছু করিনি।তবুও মনে রেখেছে। ম্যাডাম কে স্পেশ্যাল ধন্যবাদ দিতেই হয়।



অনেক বছর বাধে ম্যাডামের সাথে কথা হলো, দেখা হলো।ম্যাডাম কে ছোটবেলায় যেমন দেখেছি তেমনি আছেন।টুকটাক করে অনেক কথা বার্তা হলো।আমাদের ব্যাচের কথা,কোথায় কে আছে কী করছে ইত্যাদি।ম্যাডামকে দেখে মনে হলো আমাকে দেখে তিনি অনেক খুশিই হলেন।সচারচর ইশকুলে যাওয়া হয়ে উঠে না,ম্যাডামেরর সাথে দেখা হয় না।

ফলে উনার  সাথে কথা বলার সহজবোধ্যতা না থাকাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তুু আমার তেমন মনে হয়নি।সে-সময়ে ম্যাডামের পাশে নতুন শিক্ষিকা বসে ছিলন।তিনি আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন।কারণ তিনি তখনো বুঝতে পারেননি, আমি একদা এক সময়ে এই ইশকুলের ছাত্র ছিলাম, পড়তাম।তখন আমি ম্যাডামের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম।দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই কথা বলেছিলাম।আপাতোত আমাদের ব্যাচের মধ্যে সিনা টান করে যে ক'জন  ম্যাডামের সামনে দাঁড়াতে পারবো তাঁর মধ্যে আমি অন্যতম(অহংকারেরর জন্য বলছি না)।



শেষ মুহূর্তে ম্যাডামের সাথে  একটি ছবি তোলেছি।ছবি তোলার সময়ে মনে হচ্ছিল এক সময় যে ম্যাডামেরর জন্য ভয়ে থাকতাম।যে ম্যাডামের একটি ধমকে পুরো ক্লাশ চুপ হয়ে যেতো।আজকে উনার সাথে ছবি তোলার জন্য জোড়াজোড়ি ও সাহস করছি।ছবি তোলার শেষে নিজের সাহস দেখে নিজেই আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম।নিজে কে নিয়ে নিজেই আমি অবাক হয়েছিলাম!কারণ সেসময়ে আমি ভাবছিলাম,আরে!আমি কত বড় হয়েগেছি। ম্যাডামের সাথে ছবি তোলার জন্য জোড়াজোড়ি করছি।ম্যাডাম না করেছিল তবুও তুলেছি।অফিস থেকে বের হওয়ার আগ মুহূর্তে ম্যাডামের জন্য মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম।ম্যাডাম কে আমি স্মৃতির পাতায় রাখবো,যতদিন বেঁচে আছি ম্যাডামের জন্য সবসময় থাকবে মন থেকে ভালোবাসা ও গভীর শ্রদ্ধাবোধ।


ম্যাডামের জন্য সবসময় থাকবে ভালোবাসা শ্রদ্ধাবোধ এবং সারাজীবন ম্যাডাম থাকবে আমার স্মৃতির পাতায়।

No comments

Theme images by saw. Powered by Blogger.