করোনা ক্রান্তিকালীন মান্দি ছাত্র-তরুণসমাজ।। দেবাশীষ ইম্মানূয়েল রেমা।।
করোনা ক্রান্তিকালীন মান্দি ছাত্র-তরুণসমাজ।
দেবাশীষ ইম্মানূয়েল রেমা
[মান্দি অঞ্চলের সর্বত্র মান্দি ছাত্র-তরুণ সমাজ বিচ্ছিন্নভাবে কাজ না করে সম্মিলিতের অংশ হিসেবেই কাজ করে যাচ্ছে।]
করোনা মহামারী বিশ্বে বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত অন্যান্য মহামারী থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এর প্রকৃতি একদম ভিন্ন, তিনশোরও অধিকবার জিন পাল্টেছে করোনা ভাইরাস বা
Severe Acute Respiratory Syndrome Coronavirus 2
OR
SARS-CoV-2.। কোভিড-১৯ ( Corona Virus Disease - 2019) যার রূপ কল্পনাতীত ভয়াবহ। ইউরোপ তো বটেই এখন খোদ বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রও এর মরণ ছোবলের বাইরে নয়। অবহেলার কারণে উন্নত রাষ্ট্রসমূহও আজ ব্যর্থ এই মহামারী যথাসময়ে ঠেকাতে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শে সরকার সারাদেশ লকডাউন করেছে। সকলকে সঙ্গনিরোধ বা গৃহে অন্তরণ (Quarantined) থাকার নির্দেশ দিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনার বিরূদ্ধে এই যুদ্ধে সকলকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। গরীব-দুঃখীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন উপজেলায় বরাদ্দ পৌঁছে দিচ্ছেন, এমপি-মন্ত্রীসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দুস্থ-অসহায় জনতার পাশে এসে দাঁড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আইন-শৃঙখলা বাহিনীর সাথে এবার মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। এ অবস্থায় জনসাধারণের দৃঢ় ভূমিকা হবে ঘরে থাকা। যতোটা নিজের জন্য তার থেকেও যেনো আর দশজনকে নিরাপদ রাখার স্বার্থেই। করোনাকে মামুলি করে দেখা কি একে নিয়ে খিল্লি করার কোন সুযোগ নেই।
মান্দি অঞ্চলগুলোতেও জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক, গণমাধ্যম, এবং স্থানীয় প্রচারণার কল্যাণে ব্যাপক সচেতনতা ছড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে ঢাকায় বসবাসকারী ভাইবোনেরাও নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে নিজ পরিবারে কি নিজ সমাজে সচেতনতা বিস্তারে নিশ্চয় ভূমিকা রেখেছেন। প্রতি প্রান্তেই মান্দি ভাইবোনেরা অবশ্যই 'করোনা' শব্দটি শুনেছে।
করোনার আঘাত যখন বিশ্বব্যাপী তখন বসে নেই মান্দি অঞ্চলের মান্দি ছাত্র-যুবা সমাজও। যেখানে তাকে প্রয়োজন সেখানে তারুণ্যশক্তি পর্যাপ্ত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে মোটেও কার্পণ্য করছে না। মধুপুরে ব্যাপক সচেতনতা গড়ে তুলতে ভূমিকা রেখেছে মান্দি ছাত্র-যুবা সমাজ। নিজ নিজ এলাকায় জীবাণুনাশক ছিটানোসহ এলাকাবাসীকে সতর্ক করার কাজেও তাদের অবদান রেখেছে। দুর্গাপুরে পদ্ধতিগত ত্রাণ বিতরণের কাজ অব্যাহত রেখেছে মান্দি ছাত্র-যুবা সমাজ। আমি নিশ্চিত জানি হালুয়াঘাট-ধোবাউড়াতেও আমাদের তারুণ্য শক্তি তরুণ এমপি মহোদয়ের পাশে সহায়তাকাজে সার্বক্ষণিক পাশে আছে। খোঁজ-খবর রাখছে নিজ নিজ উপজেলাধীন বিভিন্ন এলাকার। নালিতাবাড়ী এলাকায় অভিভাবক মহলে লুইস নেংমিঞ্জা, বন্দনা চাম্বুগং, নহেলি সাংমা, অভিজিত রাকসাম, লরেন্স দ্রং, নমিতা মানখিন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ প্রত্যেকেই নিশ্চয় তটস্থ রয়েছেন। সাহায্য গেলে যেখানে যেখানে পৌঁছানো দরকার তাঁরা অবশ্যই সেদিকে যত্নবান হবেন। একাজে সার্বক্ষণিক সহায়তার জন্য তরুণদের মধ্যে কেউ না কেউ অবশ্যই আছেন। আমি যতোদূর জানি ঝিনাইগাতী-শ্রীবর্দী ও জামালপুর অঞ্চলেও ছাত্র-যুবক সকলেই চোখকান খোলা রেখেছেন নিশ্চয়।
ঢাকায় নর্দ্দা, কালাচাঁদপুরে গরীব-দুখীদের মাঝে সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে মান্দি নেতা-নেত্রীগণ মান্দি দরিদ্র শ্রেণির কাছেও সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি তদারকি করছেন বলে দুএক সূত্রে সংবাদ পেলাম। এক্ষেত্র দুয়েক জন মান্দি তরুণকেও দেখা যায় ত্রাণ বিতরণে অংশগ্রহণ করতে। অবশ্য, নিবেদিত ছাত্র-তরুণ সমাজের অধিকাংশই গ্রামে চলে গেছেন বলেই জানি। এ মুহুর্তে ঢাকায় অবস্থান করলে নিশ্চয় সেবাকাজে বেরিয়ে পড়তেন। অর্থাৎ মান্দি অঞ্চলের সর্বত্র মান্দি ছাত্র-তরুণ সমাজ বিচ্ছিন্নভাবে কাজ না করে সম্মিলিতের অংশ হিসেবেই কাজ করে যাচ্ছে।
তবে কিছু কথা থেকেই যায় —
প্রথমত, কেউ যদি জেগে ঘুমায় তাকে জাগানো যায় না। জেনে-বুঝে সচেতন হয়েও প্রয়োজন ছাড়া কেউ যদি নিজ দায়িত্বে ঘুরে বেড়ায় তবে তার দেখভাল করার দায়িত্ব একমাত্র আইন-শৃঙখলা বাহিনীর বা স্থানীয় প্রশাসনের। তাদেরকে অসচেতন শ্রেণির কাতারে ফেলানো ঠিক না। কারণ বাংলাদেশে করোনা সম্বন্ধে এখন আর কেউ অসচেতন না।
দ্বিতীয়ত, কিছু কিছু কাজ ছাত্র-যুবা সমাজ কখনোই করবে না অর্থাৎ যে কাজগুলি মূলত মেডিকেল রিলেটেড। সে কাজগুলি যদি তারা করতে চায় তবে তাদের অবশ্যই অন্তত পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি বোর্ড গঠন জরুরী। যে বোর্ডে অবশ্যই থাকতে হবে একজন মেডিকেল স্পেশলিস্ট, একজন বা দুজন নার্স, স্থানীয় প্রশাসন থেকে, এবং নিজ প্রতিনিধি। এই বোর্ড সার্বক্ষণিক তাদের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে বা নেতৃত্ব দিবে। কারণ, পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা ছাড়া সেল্ফ মেডিকেশন অত্যন্ত বিপজ্জনক। আসলে এ সময়ে নেতৃত্ব দিবে গারো ডক্টরস এসোসিয়েশন কিংবা গারো নার্সেস এসোসিয়েশন যেটি হবে পদ্ধতিগত কিন্তু কোন ছাত্র সংগঠন না। ছাত্র-তরুণরা সহায়ক শক্তিমাত্র। অ–মেডিকেল পার্সোন এখানে ডক্টরদের নির্দেশনা অনুসারে কাজ করার জন্য স্বেচ্ছাসেবীমাত্র। আবার ফান্ডিঙের প্রশ্নও এখানে জড়িত। যে বিষয়ের অবতারণা না করলেই নয়। গারো বিত্তবানেরা কিংবা অভিভাবকগণ কতোজন প্রস্তুত এক্ষেত্রে সহায়তা দিতে অপরদিকে যেখানে সরকারি বরাদ্দ পাবে অসহায় পরিবারগুলো?
তৃতীয়ত, ছাত্র-যুব সংগঠনগুলো জানে কোন কোন এলাকায় তাকে বিশেষ প্রয়োজন। তার ভূমিকা কোথায় কি হওয়া উচিত। সুদীর্ঘ বছরের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান থেকেই মোটামুটি পদ্ধতিগত কাজের জ্ঞান সে নিজের আয়ত্বে সফলভাবেই নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে যা বিজ্ঞানসম্মত। নিজ এলাকার বা মান্দি অঞ্চল সম্পর্কে স্টাডি বা পাঠ তার আছে। সে জানে কোনটা অসহায়ত্ব, কোনটা অসচেতনতা আর কোনটা অপ্রয়োজনীয়। জেনেই এই ভয়ঙ্কর করোনা মহামারীর দিনগুলিতে প্রতিমুহূর্তে তার সতর্ক পা ফেলতে সে মোটেও দ্বিধা করছে না। আর এমনই তো হওয়া উচিত। পদ্ধতিগত পদক্ষেপই আমি তার কাছে আশা করি। নির্বুদ্ধিতা, আবেগী, বিচার-বিবেচনা-কান্ডজ্ঞানহীন কর্মকান্ড থেকে সে অবশ্যই নিজেকে দূরে রাখবে।
চতুর্থত, প্রশ্ন জাগে, আমি কোথায় সেবা দিচ্ছি, আমি কাকে চাল দিচ্ছি, ডাল দিচ্ছি, নুন দিচ্ছি কিংবা কার গায়ে স্প্রে করছি সেই অভাগার সাথে ১০/১২ জন মিলে সেল্ফি তুলে ফেইসবুকে আপলোড দিয়ে ঢামাঢোল পিটিয়ে প্রচার করলেই কেবল কার্যক্রম হয়? আমাকে এসব ফেইসবুকে আপলোড দিয়ে দেখাতেই হবে বা বলতেই হবে এই দেখুন আমি কাজ করছি নতুবা আপনার স্বীকৃতি পাব না? আমি কি আপনার স্বীকৃতির আশায় কাজ করি? ভাই দেখুন, ছোট পরিসরে হোক আর বৃহৎ পরিসরে আনাচে কানাচে ছাত্র-তরুণ-যুবকরাও নিজ পরিবারে কিংবা সমাজে কি উপজেলায় কি ঢাকার নিজ মহল্লায় অবশ্যই কোন না কোন ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছেই। শত হোক মান্দি ছেলে বা মেয়ে বলে কথা।
সর্বোপরি তারুণ্যশক্তি এই সঙ্কটকালে যতোটুকু ভূমিকা রাখছে হোক অল্প আমি বরং এতেই সুখী। কারণ, সর্বশক্তি দিয়ে সে তাই করছে যে কাজ তার নয়। ✌ জয়তু মান্দি ছাত্র-তরুণ-যুব সমাজ।
দেবাশীষ ইম্মানূয়েল রেমা
ছবি-লেখক |
[মান্দি অঞ্চলের সর্বত্র মান্দি ছাত্র-তরুণ সমাজ বিচ্ছিন্নভাবে কাজ না করে সম্মিলিতের অংশ হিসেবেই কাজ করে যাচ্ছে।]
করোনা মহামারী বিশ্বে বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত অন্যান্য মহামারী থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এর প্রকৃতি একদম ভিন্ন, তিনশোরও অধিকবার জিন পাল্টেছে করোনা ভাইরাস বা
Severe Acute Respiratory Syndrome Coronavirus 2
OR
SARS-CoV-2.। কোভিড-১৯ ( Corona Virus Disease - 2019) যার রূপ কল্পনাতীত ভয়াবহ। ইউরোপ তো বটেই এখন খোদ বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রও এর মরণ ছোবলের বাইরে নয়। অবহেলার কারণে উন্নত রাষ্ট্রসমূহও আজ ব্যর্থ এই মহামারী যথাসময়ে ঠেকাতে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শে সরকার সারাদেশ লকডাউন করেছে। সকলকে সঙ্গনিরোধ বা গৃহে অন্তরণ (Quarantined) থাকার নির্দেশ দিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনার বিরূদ্ধে এই যুদ্ধে সকলকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। গরীব-দুঃখীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন উপজেলায় বরাদ্দ পৌঁছে দিচ্ছেন, এমপি-মন্ত্রীসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দুস্থ-অসহায় জনতার পাশে এসে দাঁড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আইন-শৃঙখলা বাহিনীর সাথে এবার মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। এ অবস্থায় জনসাধারণের দৃঢ় ভূমিকা হবে ঘরে থাকা। যতোটা নিজের জন্য তার থেকেও যেনো আর দশজনকে নিরাপদ রাখার স্বার্থেই। করোনাকে মামুলি করে দেখা কি একে নিয়ে খিল্লি করার কোন সুযোগ নেই।
মান্দি অঞ্চলগুলোতেও জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক, গণমাধ্যম, এবং স্থানীয় প্রচারণার কল্যাণে ব্যাপক সচেতনতা ছড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে ঢাকায় বসবাসকারী ভাইবোনেরাও নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে নিজ পরিবারে কি নিজ সমাজে সচেতনতা বিস্তারে নিশ্চয় ভূমিকা রেখেছেন। প্রতি প্রান্তেই মান্দি ভাইবোনেরা অবশ্যই 'করোনা' শব্দটি শুনেছে।
করোনার আঘাত যখন বিশ্বব্যাপী তখন বসে নেই মান্দি অঞ্চলের মান্দি ছাত্র-যুবা সমাজও। যেখানে তাকে প্রয়োজন সেখানে তারুণ্যশক্তি পর্যাপ্ত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে মোটেও কার্পণ্য করছে না। মধুপুরে ব্যাপক সচেতনতা গড়ে তুলতে ভূমিকা রেখেছে মান্দি ছাত্র-যুবা সমাজ। নিজ নিজ এলাকায় জীবাণুনাশক ছিটানোসহ এলাকাবাসীকে সতর্ক করার কাজেও তাদের অবদান রেখেছে। দুর্গাপুরে পদ্ধতিগত ত্রাণ বিতরণের কাজ অব্যাহত রেখেছে মান্দি ছাত্র-যুবা সমাজ। আমি নিশ্চিত জানি হালুয়াঘাট-ধোবাউড়াতেও আমাদের তারুণ্য শক্তি তরুণ এমপি মহোদয়ের পাশে সহায়তাকাজে সার্বক্ষণিক পাশে আছে। খোঁজ-খবর রাখছে নিজ নিজ উপজেলাধীন বিভিন্ন এলাকার। নালিতাবাড়ী এলাকায় অভিভাবক মহলে লুইস নেংমিঞ্জা, বন্দনা চাম্বুগং, নহেলি সাংমা, অভিজিত রাকসাম, লরেন্স দ্রং, নমিতা মানখিন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ প্রত্যেকেই নিশ্চয় তটস্থ রয়েছেন। সাহায্য গেলে যেখানে যেখানে পৌঁছানো দরকার তাঁরা অবশ্যই সেদিকে যত্নবান হবেন। একাজে সার্বক্ষণিক সহায়তার জন্য তরুণদের মধ্যে কেউ না কেউ অবশ্যই আছেন। আমি যতোদূর জানি ঝিনাইগাতী-শ্রীবর্দী ও জামালপুর অঞ্চলেও ছাত্র-যুবক সকলেই চোখকান খোলা রেখেছেন নিশ্চয়।
ঢাকায় নর্দ্দা, কালাচাঁদপুরে গরীব-দুখীদের মাঝে সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে মান্দি নেতা-নেত্রীগণ মান্দি দরিদ্র শ্রেণির কাছেও সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি তদারকি করছেন বলে দুএক সূত্রে সংবাদ পেলাম। এক্ষেত্র দুয়েক জন মান্দি তরুণকেও দেখা যায় ত্রাণ বিতরণে অংশগ্রহণ করতে। অবশ্য, নিবেদিত ছাত্র-তরুণ সমাজের অধিকাংশই গ্রামে চলে গেছেন বলেই জানি। এ মুহুর্তে ঢাকায় অবস্থান করলে নিশ্চয় সেবাকাজে বেরিয়ে পড়তেন। অর্থাৎ মান্দি অঞ্চলের সর্বত্র মান্দি ছাত্র-তরুণ সমাজ বিচ্ছিন্নভাবে কাজ না করে সম্মিলিতের অংশ হিসেবেই কাজ করে যাচ্ছে।
তবে কিছু কথা থেকেই যায় —
প্রথমত, কেউ যদি জেগে ঘুমায় তাকে জাগানো যায় না। জেনে-বুঝে সচেতন হয়েও প্রয়োজন ছাড়া কেউ যদি নিজ দায়িত্বে ঘুরে বেড়ায় তবে তার দেখভাল করার দায়িত্ব একমাত্র আইন-শৃঙখলা বাহিনীর বা স্থানীয় প্রশাসনের। তাদেরকে অসচেতন শ্রেণির কাতারে ফেলানো ঠিক না। কারণ বাংলাদেশে করোনা সম্বন্ধে এখন আর কেউ অসচেতন না।
দ্বিতীয়ত, কিছু কিছু কাজ ছাত্র-যুবা সমাজ কখনোই করবে না অর্থাৎ যে কাজগুলি মূলত মেডিকেল রিলেটেড। সে কাজগুলি যদি তারা করতে চায় তবে তাদের অবশ্যই অন্তত পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি বোর্ড গঠন জরুরী। যে বোর্ডে অবশ্যই থাকতে হবে একজন মেডিকেল স্পেশলিস্ট, একজন বা দুজন নার্স, স্থানীয় প্রশাসন থেকে, এবং নিজ প্রতিনিধি। এই বোর্ড সার্বক্ষণিক তাদের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে বা নেতৃত্ব দিবে। কারণ, পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা ছাড়া সেল্ফ মেডিকেশন অত্যন্ত বিপজ্জনক। আসলে এ সময়ে নেতৃত্ব দিবে গারো ডক্টরস এসোসিয়েশন কিংবা গারো নার্সেস এসোসিয়েশন যেটি হবে পদ্ধতিগত কিন্তু কোন ছাত্র সংগঠন না। ছাত্র-তরুণরা সহায়ক শক্তিমাত্র। অ–মেডিকেল পার্সোন এখানে ডক্টরদের নির্দেশনা অনুসারে কাজ করার জন্য স্বেচ্ছাসেবীমাত্র। আবার ফান্ডিঙের প্রশ্নও এখানে জড়িত। যে বিষয়ের অবতারণা না করলেই নয়। গারো বিত্তবানেরা কিংবা অভিভাবকগণ কতোজন প্রস্তুত এক্ষেত্রে সহায়তা দিতে অপরদিকে যেখানে সরকারি বরাদ্দ পাবে অসহায় পরিবারগুলো?
তৃতীয়ত, ছাত্র-যুব সংগঠনগুলো জানে কোন কোন এলাকায় তাকে বিশেষ প্রয়োজন। তার ভূমিকা কোথায় কি হওয়া উচিত। সুদীর্ঘ বছরের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান থেকেই মোটামুটি পদ্ধতিগত কাজের জ্ঞান সে নিজের আয়ত্বে সফলভাবেই নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে যা বিজ্ঞানসম্মত। নিজ এলাকার বা মান্দি অঞ্চল সম্পর্কে স্টাডি বা পাঠ তার আছে। সে জানে কোনটা অসহায়ত্ব, কোনটা অসচেতনতা আর কোনটা অপ্রয়োজনীয়। জেনেই এই ভয়ঙ্কর করোনা মহামারীর দিনগুলিতে প্রতিমুহূর্তে তার সতর্ক পা ফেলতে সে মোটেও দ্বিধা করছে না। আর এমনই তো হওয়া উচিত। পদ্ধতিগত পদক্ষেপই আমি তার কাছে আশা করি। নির্বুদ্ধিতা, আবেগী, বিচার-বিবেচনা-কান্ডজ্ঞানহীন কর্মকান্ড থেকে সে অবশ্যই নিজেকে দূরে রাখবে।
চতুর্থত, প্রশ্ন জাগে, আমি কোথায় সেবা দিচ্ছি, আমি কাকে চাল দিচ্ছি, ডাল দিচ্ছি, নুন দিচ্ছি কিংবা কার গায়ে স্প্রে করছি সেই অভাগার সাথে ১০/১২ জন মিলে সেল্ফি তুলে ফেইসবুকে আপলোড দিয়ে ঢামাঢোল পিটিয়ে প্রচার করলেই কেবল কার্যক্রম হয়? আমাকে এসব ফেইসবুকে আপলোড দিয়ে দেখাতেই হবে বা বলতেই হবে এই দেখুন আমি কাজ করছি নতুবা আপনার স্বীকৃতি পাব না? আমি কি আপনার স্বীকৃতির আশায় কাজ করি? ভাই দেখুন, ছোট পরিসরে হোক আর বৃহৎ পরিসরে আনাচে কানাচে ছাত্র-তরুণ-যুবকরাও নিজ পরিবারে কিংবা সমাজে কি উপজেলায় কি ঢাকার নিজ মহল্লায় অবশ্যই কোন না কোন ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছেই। শত হোক মান্দি ছেলে বা মেয়ে বলে কথা।
সর্বোপরি তারুণ্যশক্তি এই সঙ্কটকালে যতোটুকু ভূমিকা রাখছে হোক অল্প আমি বরং এতেই সুখী। কারণ, সর্বশক্তি দিয়ে সে তাই করছে যে কাজ তার নয়। ✌ জয়তু মান্দি ছাত্র-তরুণ-যুব সমাজ।
No comments